,

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রিমাকে হত্যা করে তিন ঘাতক

মাধবপুরে প্রবাসীর স্ত্রী হত্যার রহস্য উন্মোচন

মাধবপুর প্রতিনিধি \ মাধবপুরে শ্রীধরপুর গ্রামের প্রবাসীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার রিমার হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। ঘাতক শিপন মিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে হবিগঞ্জ আমলী আদালত-৬ এ জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় আদালতের বিচারক নাসরিন আক্তার তার খাস কামড়ায় শিপনের জবানবন্দী রেকর্ড করেন। এর সত্যতা নিশ্চিত করে মাধবপুর থানায় প্রেস ব্রিফিং করেন মাধবপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম রাজু আহম্মেদ। ঘাতক জবানবন্দিতে বলেন গত ৫/৬ মাস আগে মাধবপুর উপজেলার শ্রীধরপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল আওয়ালের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রিমার সঙ্গে একই উপজেলার কমলানগর গ্রামের শাহেদ মিয়ার ছেলে শিপনের সঙ্গে চৌমুহনী একটি মোবাইল ফোনের দোকানে তাদের পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে রেহেনা এবং শিপন প্রায়ই মোবাইল ফোনে যোগাযোগ এবং বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে বেড়াতে যেত। রেহেনা স্বামীর বাড়িতে না থেকে বাবার বাড়ি রাজাপুর গ্রামে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে বসবাস করত। বাবার বাড়িতে ঝগড়া হওয়ায় কাজের সন্ধানে রেহেনা গাজীপুর কোনা বাড়িতে একটি পোশাক কারখানায় নারী শ্রমিকের কাজ নেয়। গত ৯ জুন রেহেনা শিপন মিয়াকে মোবাইলে বলে গাজীপুর থেকে তাকে নিয়ে আসার জন্য। শিপন গাজীপুর গিয়ে রেহেনাকে নিয়ে মধ্যরাতে মাধবপুর হাইওয়ে হোটেলে নামে। সিএনজি করে রাতেই কমলানগর গ্রামে যায়। ওখানে অপর দুই বন্ধুকে নিয়ে রেহেনাকে অসৎ উদ্দেশ্যে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। কিন্তু রেহেনা বিষয়টি টের পেয়ে বিভিন্ন অজুহাতে সুর চিৎকার শুরু করলে শিপন মিয়া রেহেনার গলাটিপে ধরে জোরে কথা বলতে নিষেধ করে। এরপরেও রেহেনা সুর চিৎকার শুরু করলে ঘটনাটি এলাকাবাসী জেনে যাবে এবং তারা বিপদে পড়বে এই চিন্তা করে ভয়ে ৩ জন মিলে রেহেনাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। বড় লাটি দিয়ে মাথায় আঘাত করে ৩ জন মিলে রেহেনাকে হত্যা করে। রেহেনার সঙ্গে থাকা দুটি মোবাইল ফোন, কানের দোল, নাক ফুল সহ স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে মাধবপুরে স্থানীয় দোকানে বিক্রি করে দেয়। এরপর তরিঘড়ি করে পাশের বাড়ি থেকে ঘাতকরা কোদাল এনে মাটি খুড়ে একটি শসা খেতে মাটি চাপা দেয়। ঘটনা ৩ দিন পর ১৩ জুন পুলিশ খবর পেয়ে ওই স্থান থেকে বিকৃত অবস্থায় রেহেনার লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু লাশ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় কেউ তার লাশ সনাক্ত করতে পারেনি। এ ঘটনায় কাশিমনগর ফাঁড়ির এসআই শাহ আলম বাদি হয়ে অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রেহেনার ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন বিক্রি হওয়া সূত্রধরে নিহতের পরিচয় এবং খুনিদের সনাক্ত করে। গত শুক্রবার বিকেলে ঘাতক শিপন মিয়াকে পুলিশ উপজেলার খাটুরা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ বিচারকের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়। মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, পলাতক খুনীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর