,

নবীগঞ্জে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের হামলায় গুরুতর আহত ২ । মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

মাদ্রাসা সুপার ও পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্ব

নিজস্ব প্রতিনিধি: নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামে শাহ্ জালাল লতিফিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসার বড় অংকের টাকার হিসাব-নিকাশের গড়মিল নিয়ে পরিচালনা কমিটির সাথে মাদ্রাসা সুপারের জের ধরে ভূমিদাতা ও পরিচালনা কমিটির উপর অতির্কিত হামলা করেছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। গুরুতর আহত দুইজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এনিয়ে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে তাৎক্ষণিক মাদ্রাসা এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা দিয়ে মাদ্রাসার সুপারকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে। আউশকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ৮ বছর পূর্বে এলাকাবাসী প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শাহ্ জালাল লতিফিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ওই মাদ্রাসায় লন্ডন আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ বিদেশ থেকে শতশত মানুষ অনুদান প্রদান করে আসছেন। কিছুদিন পূর্বে মাদ্রাসার হিসাব নিকাশ ও মাদ্রাসার সরকারী নিবন্ধন নিয়ে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা সুপার কুতুব উদ্দিন খাঁন ও পরিচালনা কমিটির লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে গতকাল মাদ্রাসার অফিস কক্ষে পরিচালনা কমিটির মাসিক সভা বসে। পরিচালনা কমিটির সভা চলাকালে কমিটির সদস্যদের সাথে মাদ্রাসা সুপার কুতুব উদ্দিন খাঁনের বাকবিÐার এক পর্যায়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা কমিটির সদস্যদের উপর আক্রমণ করে। এ সময় ছাত্রদের হামলায় ভূমিদাতা ও কমিটির কোষাধ্যক্ষ হাজী আব্দুল কুদ্দুছ ও পরিচালনা কমিটির সদস্য হাজী বাছিত মিয়া গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসী মাদ্রাসার সুপারকে দায়ী করে মাদ্রাসা ঘেরাও করে রাখেন। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার এসআই ফিরোজ আহমদ এর নেতৃত্বে গোপলার বাজার তদন্তকেন্দ্রের এ.এস.আই সোহাগসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। তাৎক্ষণিক ভাবে প্রশাসনের সহযোগীতায় এলাকাবাসী কমিটির সদস্যরা এক জরুরী সভায় বসেন। ওই সভায় বক্তব্য রাখেন তাহিরপুর কামিল মাদ্রাসার সুপার আফজাল হোসেন, রুস্তমপুর মাদ্রাসার সুপার মাওঃ সাজ্জাদুর রহমান, মোস্তফাপুর মাদ্রাসার সুপার মাওঃ এম.এ নুর, আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কাজী হাসান আলী, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম.এ আহমদ আজাদ, সহ-সভাপতি এম.মুজিবুর রহমান, ক্বারী সোসাইটির সভাপতি মাওঃ আব্দুল হান্নান, সাবেক মেম্বার মাসুক মিয়া, বর্তমান মেম্বার আব্দুল মুকিত, হাসান আলী উস্তার মিয়া, ফুলকাছ মিয়া, দিলশাদ মিয়া, মাস্টার রমজান বখত, সাদিকুর রহমান, শেখ সাদেক মিয়া। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মাদ্রাসা বন্ধের সিন্ধান্ত, আবাসিক সকল ছাত্রদের চলে যাওয়াসহ মাদ্রাসা সুপারকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। পরে উত্তেজনার মুখে পুলিশী প্রহরায় মাদ্রাসার সুপার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এ ব্যাপারে ভূমিদাতা ও কমিটির কোষাধ্যক্ষ হাজী আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, মাদ্রাসার হিসাব-নিকাশ নিয়ে সুপারের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ছাত্রদের দিয়ে হামলা করানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, ছাত্ররা কেন হামলা করেছে আমি জানিনা, কমিটির সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। নবীগঞ্জ থানার এসআই ফিরোজ আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি।


     এই বিভাগের আরো খবর