,

নবীগঞ্জে কৃষক ওয়াহিদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

সংবাদদাতা :: নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের আলোচিত বোয়ালজুর গ্রামে কৃষক ওয়াহিদ মিয়াকে দিন দুপুরে নির্মমভাবে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার দুই দিন পর গত রোববার হবিগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতে নিহতের পুত্র শিবলু মিয়া বাদী হয়ে তাদের গ্রæপ লিডার গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৫ অক্টোবর শুক্রবার বিকাল ৪টার সময় আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজার থেকে খরচ করে একটি সিএনজি অটোরিকশা যোগে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে গিয়াস উদ্দিনের বাড়ির সামনে সিএনজি থেকে নেমে কিছু দূরে যাওয়া মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র সহ পাজকোলা করে বোয়ালজুর গ্রামের জলিল মিয়ার পুত্র তোফায়েল মিয়া (২৯) ও সায়েল মিয়া (২৭), চুনু মিয়ার পুত্র নুরুল আমিন (৩০), মৃত মছদ্দর আলীর পুত্র মজমিল মিয়া (৩৩) সহ আরো কয়েকজন হত্যা মামলার ১নং আসামী গিয়াস উদ্দিন (৫০) এর দেয়াল ঘেরা বাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে গেইট বন্ধ করে জলিল মিয়ার পুত্র রাহেল মিয়া (২৫) ও রোমেল মিয়া (২৩), গিয়াস উদ্দিনের পুত্র সাজু মিয়া (২৫), মাসুক মিয়ার পুত্র খালেদ মিয়া (৩১), আব্দুর রহিমের পুত্র ফরিদ মিয়া (৩০), ফরহাদ মিয়া (২৭) ও সোহাগ মিয়া (২৫), মৃত কনু মন্সীর পুত্র মন্নান মিয়া (৫০), সুজন মিয়া (৪৫) ও মহন মিয়া (৪৩), মন্নান মিয়া পুত্র ইউসূফ মিয়া (২৫), মহন মিয়ার পুত্র জাকারিয়া (২৫), সুজন মিয়ার পুত্র ফারভেজ মিয়া (২৪), আঙ্গুর মিয়ার পুত্র জুনেদ মিয়া (২৮), মৃত মছদ্দর আলীর পুত্র মোশাহিদ (৪৫) ও মুজাহিদ মিয়া (৪০), মৃত আরিফ উল্লার পুত্র লায়লুছ মিয়া (৫০), রাইস মিয়ার পুত্র ইব্রাহিম মিয়া (২৫), মৃত রেজান মিয়ার পুত্র আব্দুর রহিম (৫৫), মৃত কনর উদ্দিনের পুত্র আলী হোসেন (৩৫) সহ   উল্লেখিত সকল আসামীরা ওয়াহিদ মিয়াকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে বসত বাড়ির সামনের পাকা রাস্তায় ফেলে যাওয়ার সময় ওয়াহিদ মিয়ার আত্মচিৎকারে পথচারী কয়েকজন এগিয়ে আসলে ঘাতকরা পালিয়ে যায়। এ সময় পথচারী সহ তার পুত্র শিবলু মিয়া পথচারীদের সহযোগীতায় একটি গাড়িযোগে ওয়াহিদ মিয়াকে নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরদিন ৬ অক্টোবর ২০১৮ ইংরেজী তারিখে সিলেট কোতোয়ালী থানার এস আই আব্দুল গফ্ফার উপস্থিত হয়ে মৃত ওয়াহিদ মিয়ার সুরতহাল এর প্রতিবেদন তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরন করেন। পরে শনিবার সন্ধা ৬টা ৩০ মিনিটের সময় তার নিজ গ্রাম (বোয়ালজুর) পশ্চিম মাঠে জানাযার নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে নিহত ওয়াহিদ মিয়ার পুত্র শিবলু মিয়া মামলার বাদী এ প্রতিনিধিকে বলেন, ১নং আসামী গিয়াস উদ্দিন ও তার লোকেরা গ্রাম্য নেতৃত্বের বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমার বাবাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে আসছিল। আসামী গিয়াস উদ্দিন এক নায়কতন্ত্র ভাবে গ্রামের নিরহ মানুষের উপর জোর জুলুম করে আসছে। এতে আমার বাবা তাদের অপকর্মে বাধা হওয়ায়ই ছিল আমার বাবার অপরাধ! এর জের ধরেই আমার বাবাকে ওরা একজোট হয়ে পরিকল্পিতভাবে দিন দুপুরে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে দেয়। আমি আইন প্রশাসন সহ সকল দেশবাসীর কাছে আমার বাবার হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। এ ব্যাপারে নিহত ওয়াহিদ মিয়ার ছোট ভাই তোয়াহিদ মিয়া বলেন, আমার ভাইকে হত্যা করেও ওরা শান্ত হয়নি। তারা এখন আমাকে ও আমার পরিবাবর্গকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এমনকি হত্যার পর থেকে মামলা না করার জন্য নানান ভাবে ভয়ভিতি প্রদর্শন করতেছে। আমার ভাইয়ের ছেলে শিবলু মিয়া বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার পর থেকে গিয়াস গংরা তাকে খোজঁতেছে। আমি প্রশাসনের উধর্বতন কর্মকর্তার কাছে আমার পরিবারের লোকজনের নিরাপত্তা চাই। এবং আমার ভাই হত্যাকারীদের বিচার চাই।


     এই বিভাগের আরো খবর