,

পত্রিকা অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম কারাগারে

জুয়েল চৌধুরী :: হবিগঞ্জের স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। এর আগে ওই মামলায় আদালত তাকে ৩ বছরের কারাদÐ দেন। মামলার বিবরণে জানা গেছে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জি কে গউছের মালিকানাধীন স্থানীয় দৈনিক আজকের হবিগঞ্জ পত্রিকা কার্যালয়ে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। এ ঘটনায় ওই পত্রিকা অফিসের তৎকালীন মেশিন অপারেটর ও কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ২০০৭ সালের ১০ এপ্রিল ৭ জনের বিরুদ্ধে দ্রæত বিচার আইনে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছেন যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, যুবলীগ নেতা হাসান চৌধুরী হেমসিন, তালুকদার শাহীন, আবুল কাশেম চৌধুরী, মহিবুর রহমান মামুন, জাহির মিয়া ও ফয়ছল মোল্লা। তদন্ত শেষে ৭ জনের বিরুদ্ধে ১৮ এপিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ১৪ আগস্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উক্ত মামলায় যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, যুবলীগ নেতা হাসান চৌধুরী হেমসিন ও তালুকদার শাহীনকে আদালত ৩ বছর করে সশ্রম কারাদÐ দেন। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। বাকি আসামিদের খালাস দেয়া হয়। পরবর্তীতে দÐপ্রাপ্তরা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২২ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাদের সাজা বহাল রাখেন। ইতিমধ্যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছে হাসান চৌধুরী হেমসিন ও তালুকদার শাহীন। গতকাল মঙ্গলবার যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম আদালতে হাজির হয়ে আপিলের শর্তে জামিন চাইলে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। আতাউর রহমান সেলিমকে দ্রæত কারাগার থেকে বের করতে যাতে সহজেই নকল পাওয়া যায় সে বিষয়টি সর্ম্পকে এড. আকবর হোসেন জিতু আদালতে বিচারকের কাছে উত্তাপন করলে বিচারক বিষয়টি বিবেচনা করেন। আতাউর রহমান সেলিমের পক্ষে ছিলেন পিপি এড. সিরাজুল হক চৌধুরী, এড. ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন, এড. আলমগীর চৌধুরী,  এড. লুৎফুর রহমান তালুকদার, এড. নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটো, এড. দেবাংশু দাশ গুপ্ত রাজু, এড. সুলতান মাহমুদ, এড. শাহ ফখরুজ্জামান, এড. আজিজুর রহমান খান সজল, এড.সামছুলহক, এড. মুর্শেদ আহমেদ লুকু এবং এড. তুহিন আহমেদসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আইনজীবী জামিনের প্রার্থনা করেন। এদিকে, আতাউর রহমান সেলিম আদালতে হাজিরার পূর্বে সকাল থেকে রেডক্রিসেন্ট অফিসে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা এসে জড়ো হন। পরে দুপুরে মিছিলসহকারে আতাউর রহমান সেলিম আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন এবং নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন। এ সময় তিনি সকল নেতা-কর্মীকে ধৈর্য্য ধরার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে রাজপথে থেকে দলকে সংগঠিত করতে কাজ করতে গিয়ে বারবার কারা বরণ করেছি। আমার বিরুদ্ধে বার বার ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। এই মামলায়ও আমি আইনগতভাবেই লড়াই করে কারাগার থেকে আপনাদের মাঝে ফিরে আসব। এই সময়ে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বিকল্প নেই। এ সময় জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বোরহান চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন বিপ্লব রায় চৌধুরী, শফিকুজ্জামান হিরাজ, তাজ উদ্দিন আহমেদ তাজ, মোঃ ফারুক পাঠান, মোঃ রেখাছ মিয়া, মোঃ জাহির মিয়া, ডাঃ শেখ ইশতিয়াক রাজ চৌধুরী, মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন শাহ মোঃ আরজু, শওকত আকবর সোহেল, মোঃ সামছু, আব্দুর রউফ মাসুক, ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহেদুজ্জামান বাবুল, মিজানুর রহমান শামীম, মোতাহের হোসেন রিজু, শেখ উম্মেদ আলী শামীম, জাকারিয়া চৌধুরী, মোঃ ফেরদৌস আহমেদ, এডভোকেট শেখ আনিসসহ নেতৃবৃন্দ। এদিকে আতাউর রহমান সেলিমের মামলা থাকায় আদালতে শুরুতেই মামলাটি শুনানী করা হয়। শুনানী শেষে সরাসরি প্রিজন ভ্যানে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে। এ সময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ান আতাউর রহমান সেলিম। নেতা-কর্মীরা তখন বিভিন্ন শ্লোগান দেন।


     এই বিভাগের আরো খবর