,

এমপি আবু জাহিরকে হাত তুলে সমর্থন

লাখো জনতার অংশগ্রহণে তাক লাগানো শোডাউন

নিজস্ব প্রতিনিধি :: ছোট্ট শিশু রিপন। হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার এই শিশু তার ভাইয়ের কোলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখছিল; রঙ-বেরঙের নৌকা, ব্যানার আর ফেস্টুনে লাখো জনতা মিছিল দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করছে। সাথে আসা ভাইকে সে জিজ্ঞেস করে; রাস্তায় এত মানুষ কেন। রিপনের মতো শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে অবলোকন করেছেন হবিগঞ্জ জেলার ইতিহাসের সর্ববৃহৎ শোডাউন। লাখো জনতা শোডাউনে অংশ নিলেও দর্শকও কম ছিলেন না রাস্তার দুই পাশে। রীতিমতো উৎসবের আমেজ ছিল হবিগঞ্জ শহরে। গতকাল দুপুরে যখন হবিগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ থেকে এমপি আবু জাহিরের ১০ বছরের সফলতা উদযাপনে বর্ণাঢ্য শোভযাত্রা বের হয়, তখনকার দৃশ্য ছিল এটি। যদিও দুপুর বেলা শোভাযাত্রা শহর অতিক্রম করে, কিন্তু সকাল থেকেই শহরে ছিল উৎসবের আমেজ। খন্ড খন্ড মিছিলের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে পয়েন্টে পয়েন্টে জমায়েত হতে থাকেন। পরে মিছিল নিয়ে একত্র হন কেন্দ্রীয় ঈদগাহে। হবিগঞ্জ সদর, লাখাই, এবং শায়েস্তাগঞ্জবাসী আয়োজিত মিছিলটি দুপুরে শুরু হয় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ থেকে। হবিগঞ্জবাসীর কাছে মিছিল-মিটিং দেখার অভিজ্ঞতা নতুন নয়। তবে গতকালের শোভাযাত্রায় ছিল নতুন একটি বৈচিত্র। এই বৈচিত্র্যের নাম ড্রোন ক্যামেরা। আকাশে যখন বন বন করে উড়ে যায় ড্রোন, তখন নৌকা নৌকা বলে চিৎকার শুরু করেন উপস্থিত জনতা। এ ধরণের অনেক বৈচিত্রময় আয়োজন ছিল শোভযাত্রায়। হাজার হাজার ভুভুজেলা বাসির গগনবিদারী আওয়াজ, উন্নয়ন সম্পর্কিত শিল্পীদের গান আর রঙ-বেরঙের ফেস্টুনে বৈচিত্র্যময় ছিল এই আয়োজন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য শোভযাত্রায় এসেও যোগদান করতে পারেননি হবিগঞ্জের সিনিয়র আইনজীবী ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এড. মোঃ আবুল খায়ের। তিনি বলেন, আমার জীবনে এতবড় শোভাযাত্রা দেখিনি। এই শোভাযাত্রা প্রমাণ করেছে হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জের মানুষ এমপি আবু জাহিরকে কত ভালবাসে। শায়েস্তানগর এলাকার আবুল কালাম নামে এক পথচারী বলেন, জাহির ভাই দেখাই দিছে। নৌকারে কেউ আটকাতে পারতো না। শোভাযাত্রায় অনেক আলেম-ওলামাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আব্দুল করিম নামে এক বয়োবৃদ্ধ আলেম বলেন, ভাল কাজের প্রতিদান না দিলে কেউ ভাল কাজ করতে উৎসাহ পায় না। এমপি আবু জাহির ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য যে পরিমাণ কাজ করেছেন; তার প্রতিদান দিতেই আমি এই বৃদ্ধ বয়সে মিছিলে ছুটে এসেছি। বুকে নৌকা প্রতীক একে খালি গায়ে এবং বিভিন্ন সাজ ধারণ করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় এক যুবক। তাকে দেখে সকলে এগিয়ে যান এবং মোবাইলে সেলফি তুলতে ভীর জমান। রিচি থেকে আসা যুবকরা এক রঙের টি শার্ট পড়ে নৌকা বেয়ে মাত করে দেন পুরো শোভাযাত্রা। ট্রাকে থাকা সঙ্গীত দলের আশেপাশে ছিল তুমুল উন্মাদনা। গতকাল সোমবার দুপুরে এই মিছিলের আয়োজন করে হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলাবাসী। গত ১০ বছরে হবিগঞ্জে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়নসহ যুগান্তকারী উন্নয়ন করায় আয়োজন করা হয় এই মিছিলের। সকাল থেকেই হবিগঞ্জ-৩ আসনের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন জড়ো হতে থাকে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায়। পরে খন্ড খন্ড মিছিলের মাধ্যমে সবাই একত্রিত হন কেন্দ্রীয় ঈদগাহে। অংশগ্রহণকারীরা রং বেরঙ্গের টি-শার্ট ও ক্যাপ পরিহিত অবস্থায় এই মিছিলে অংশ নেন। ছিল বিভিন্ন উন্নয়ন এর ছবি এবং বর্ণনা সম্বলিত ফেস্টুন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এমপি আবু জাহিরের ছবিও ছিল অনেকের হাতে। রং বেরঙ্গের নৌকা এবং বৈঠা নিয়েও হাজির হন অনেকেই। হাজার হাজার ভুভুজেলা বাশির সুরের মুর্ছনায় ছিল উৎসবের পরিবেশ। ছিল শিল্পীদের গানের দলের একাধিক গাড়ী ও ব্যান্ড পার্টি। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিট, সকল সহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনও মিছিলে যোগ দেয় আলাদা ব্যানারে। কেন্দ্রীয় ইদগাহের ফটকে শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার পূর্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এড. আবু জাহির এমপি। অন্যান্যের মাঝে বক্তৃতা করেন আওয়ামীলীগ জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এড. সিরাজুল ইক চৌধুরী, আরব আলী, শেখ শামছুল হক, শরীফ উল্লাহ, এড. আলমগীর চৌধুরী, মুকুল আচার্য্য, বিশিষ্ট মুরব্বী সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রইছ মিয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এড. লুৎফুর রহমান তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এড. মনোয়ার আলী, সজিব আলী, এড. আফিল উদ্দিন, এড. হুমায়ুন কবির সৈকত, আক্রাম আলী, এড. ক্ষিতিশ চন্দ্র গোপ, আলমগীর খান, এড. আব্দুল মোছাব্বির বকুল, এড. শাহ ফখরুজ্জামান, সদস্য আব্দুর রহিম, এড. সৈয়দ আফজল আলী দুদু, এড. সুলতান মাহমুদ, শড়খ শুভ্র রায়, এড. কনক জ্যোতি সেন রাজু, মোস্তফা কামাল আজাদ রাসেল, জেলা কৃষকলীগ সভাপতি হুমায়ুন কবির রেজা, হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি এড. নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটো, সাধারণ সম্পাদক মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এড. আব্দুল আহাদ ফারুক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, লাখাই উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক এড. মুশফিউল আলম আজাদ, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ছালেক মিয়া, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এড. আকবর হোসেন জিতু, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বোরহান চৌধুরী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সফর আলী, আব্দুল মোতালিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল তালুকদার, আব্দুর রহমান, হোসেইন মোঃ আদিল জজ মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ সরদার, আব্দুল মুকিত, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান মাসুক, জেলা তাতলীগের সভাপতি মুদ্দত আলী, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডাঃ ইসতিয়াক রাজ চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইদুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহী। পরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের প্রধান সদক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ঈদগাহে আসার পর শেষ হয়। সদর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ফরহাদ উদ্দিন আব্বাস, আনু মিয়া, আক্তার হোসেন, এনামুল হক শেখ কামাল, মুখলিছ মিয়া, বুলবুল খান, মাহবুবুর রহমান হিরো, তাজ উদ্দিন, লাখাই উপজেলার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে শেখ মুক্তার হোসেন বেনু, এনামুল হক মামুন, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাই কামাল, রফিকুল ইসলাম মলাই। আয়োজকরা জানান, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সফল করতে এবং ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে রিজার্ভ করা হয়েছিল ২০০ বাস, ৫০টি ট্রাক, ৭০টি ইমা (ইউমেন ওলার) এবং প্রায় ৩ হাজার সিএনজি-অটোরিক্সা এবং ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক টমটম। কার এলাকা থেকে বেশী লোক আসে তার জন্য ছিল রীতিমত প্রতিযোগিতা।  শোভাযাত্রাটি এয়ারলিংক ক্যাবলে সরাসরি স¤প্রচার হওয়া ছাড়াও অনেকেই ফেসবুকে লাইভ দেন।


     এই বিভাগের আরো খবর