,

লাখাইয়ে দেবরের হাতে অন্তঃস্বত্বা ভাবী খুন

জুয়েল চৌধুরী :: লাখাই উপজেলার মুড়িয়াক গ্রামে দেবরের দা’য়ের আঘাতে মানছুরা আক্তার সুমী (২০) নামের অন্তঃস্বত্বা ভাবী খুন হয়েছে। সে মুড়িয়াক পশ্চিমপাড় দেওয়ান বাড়ির ছফিল মিয়ার কন্যা ও লাখাই মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী। এ ঘটনায় সুমীর শ্বাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে মৃত তবারক মিয়ার পুত্র সুমির আপন চাচাত ভাই আব্দুর রশিদ লিটন (৩০) এর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুমিকে উত্যক্ত করত লিটনের ছোট ভাই বুরহান উদ্দিন (২৪)। সুমি বিষয়টি তার স্বামীকে জানালে বুরহানকে বারণ করে এসব না করার জন্য। বর্তমানে সুমী কয়েক মাসের অন্তঃস্বত্বা। এদিকে, বুরহান রহস্যজনক কারণে সুমীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তার সাথে দুর্ঘটনা ঘটানোর সুযোগ খুঁজতে থাকে। গতকাল সকালে সুমী ও লিটন খাবারের পর সুমীকে বাড়িতে রেখে লিটন স্থানীয় এক ব্যক্তির জানাজায় অংশগ্রহণ করে। এই ফাঁকে সকাল ১০টায় সুমীর কক্ষে প্রবেশ করে বুরহান দা দিয়ে এলোপাতারিভাবে কুপিয়ে সুমীকে ক্ষত-বিক্ষত করে এতে তার মাথার মগজ বের হয়ে যায়।  এক পর্যায়ে সুমীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে বুরহান পালিয়ে যায়। সুমীর রক্তাক্ত দেহ খাটের উপর পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সিলেটে নিয়ে যাওয়ার পথে নবীগঞ্জের আউশকান্দিনামক এলাকায় সুমী মারা যায়। লাশটি পুনরায় সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সদর থানার এসআই রাজিব আহমেদ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে মর্গে প্রেরণ করে। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সুমীর মা ও স্বামীকে লাশের পাশে আঁহাজারি করতে দেখা গেছে। তারা কিছুতেই তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছেননা। অপর একটি সূত্র জানায়, সুমীর সাথে বুরহানের স্কুল জীবন থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা একই সাথে স্কুলে আসা যাওয়া করত। সুমী আর বুরহান ২ ক্লাস সিনিয়র জুনিয়র ছিল। সুমী সুন্দরী হওয়ায় বুরহানের ভাই লিটন তাকে বিয়ে করে। এ বিয়ে বুরহান মেনে নেয়নি। বিয়ের পর থেকেই বুরহান মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। সুমীকে না পাওয়ার বেদনা সইতে না পেরে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে। এ ব্যাপারে লাখাই থানার ওসি মোঃ এমরান হোসেন জানান, সুমী মারা যাওয়ার খবর শুনে বাড়িতে গিয়ে বুরহানের মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বুরহান ও সুমীর মধ্যে স্কুল জীবন থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা দায়ের হয়নি। তবুও বুরহানকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।


     এই বিভাগের আরো খবর