,

ধানের শীষের প্রতীক্ষায় শতাধিক ব্যবসায়ী

সময় ডেস্ক :: জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ী সাংসদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বর্তমান সংসদে ব্যবসায়ীদের হার ৫৯ শতাংশ। সংখ্যায় ১৭৭ জন। তারা কোনো না কোনো ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ব্যবসায়ীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। জানা যায়, বিএনপিতে ব্যবসায়ী নেতার সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। নবম সংসদে বিএনপি থেকে সবচেয়ে বেশি ৭৩ শতাংশ ব্যবসায়ী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আসন্ন নির্বাচনেও শতাধিক ব্যবসায়ী বিএনপি থেকে মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন মুখের সংখ্যাও অনেক। বিএনপি ছাড়াও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক দল থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। তাদের বেশিরভাগই এফবিসিসিআই, পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা। বিভিন্ন পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠন ও জেলাভিত্তিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন জেলা চেম্বারের অনেক নেতাও বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন। এফবিসিসিআই নেতাদের মধ্যে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করতে চান সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি ফেনী-৩ ও ফেনী-১ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন শিল্পপতিদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সাবেক সভাপতি ও বন্ধ হওয়া সিটিসেলের র্কুধার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। চট্টগ্রাম-৮ থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম-১১ থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও মুন্নু গ্রæপের অন্যতম র্কুধার আফরোজা খান রিতা মানিকগঞ্জের সিংগাইর আসন থেকে নির্বাচন করতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এইচআরসি গ্রæপের র্কুধার সাঈদ হোসেন চৌধুরী ফেনী-৩ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। নির্বাচনী দৌড়ে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা একমির প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান সিনহা। মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির এই সভাপতি সদর আসন থেকে নির্বাচন করতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ইসলাম গ্রæপের মঈনুল ইসলাম শান্তও মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচন করতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। রাজধানী পুরান ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও এফবিসিসিআই পরিচালক আবু মোতালেব ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি প্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকা-৭ (লালবাগ) থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এক যুগ ধরে এফবিসিসিআইর কর্মকান্ডে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। আবু মোতালেব বলেন, দলীয় হাইকমান্ডের ইতিবাচক ইঙ্গিতেই মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের নেতা হিসেবে ভ্যাটের আন্দোলনসহ নানা ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন তিনি। এখন বিএনপির মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক আবদুল ওয়াহেদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সিলেট-৬ আসন থেকে নির্বাচন করতে বারাকা পাওয়ারের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ চৌধুরী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। চট্টগ্রামের রাইজিং গ্রæপের চেয়ারম্যান ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী এখন কারাগারে থাকলেও চট্টগ্রাম-৪ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য প্রতিনিধিদের মাধ্যমে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিএনপির এই সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি সমর্থক ব্যবসায়ীদের অনেকেও দল থেকে মনোনয়ন চাইছেন। তাদের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন এবিএন গ্রæপের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাদাত আহমেদ চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া), এফবিসিসিআই নেতা বাহাউদ্দিন সাদী ঢাকা-১৮, এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক আমিনুল হক নাটোর-৪ থেকে লড়বেন। তিনি নাটোর চেম্বারের সভাপতি ও নাটোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো টাঙ্গাইল-৪, ভাসভী গ্রæপের চেয়ারম্যান কামাল জামান মোল্লা ঢাকা-১৭, এস এ খালেক গ্রæপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সিইও সাইফ সিদ্দিক সাজু ঢাকা-১৪ আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য এস এ খালেকের সন্তান। পচা গ্রæপের শরীফুল আলম কিশোরগঞ্জের ভৈরব-কুলিয়ারচর থেকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পোশাক খাত থেকে বিএনপির মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন- বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান খান বাবু চুয়াডাঙ্গা-২। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতিদের মধ্যে কাজী মনিরুজ্জামান নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি তিনি। অপর সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক চট্টগ্রাম- ৫ থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। পোশাক খাতের অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন- চৈতী গ্রæপের এমডি ও বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম। তিনি কুমিলন্ডার লাকসাম থেকে নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া পাশাক খাত থেকে আরও রয়েছেন আল মুসলিম গ্রæপের আবদুল্লাহ। তিনি মুন্সীগঞ্জের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানা গেছে। বিজিএমইএর সদস্য এরশাদ উল্লাহও চট্টগ্রামের কোনো একটি আসন থেকে ভোট করবেন। জাকারিয়া তাহের কুমিলন্ডা-৮, আবুল কালাম আজাদ কুমিল্লা-৯, খালেদ মাহবুব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, লুৎফর রহমান টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যাংকিং খাত থেকে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া তাহের সুমন কুমিলন্ডা-৮ থেকে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতার মধ্যে অনেকে বিএনপির মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তাদের আসন এখনও জানা যায়নি। তারা হলেন- ঢাকার কোনো আসন থেকে আবদুল মান্নান ও আবু আশফাক, নারায়ণগঞ্জ থেকে মাহবুবর রহমান সুমন, নজরুল ইসলাম আজাদ, দীপু ভূঁইয়া ও শাহ আলম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাজমুল আনোয়ার, নাছির উদ্দীন হাজারী। কুমিলন্ডা থেকে হাজি আমিনুর রশীদ ইয়াসিন, মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া, আলাউদ্দিন আহমেদ ও কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম। চাঁদপুর থেকে শেখ ফরিদউদ্দিন আহমেদ মানিক, লায়ন হারুনুর রশীদ, আবদুল হান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল ইসলাম, জি এম ফজলুল হক ও ড. জালাল উদ্দিন। শরীয়তপুর থেকে জামাল, কামাল ও কিরণ আহমেদ। জয়পুরহাট থেকে ফয়সাল আলিম, দিনাজপুর থেকে হাফিজুর রহমান, নীলফামারী থেকে শামসুজ্জামান, বগুড়া থেকে শুকরানা আহমেদ, জি এম সিরাজ, পাবনা থেকে সঞ্জু খান, টাঙ্গাইল থেকে স্বপন ফকির ও আবদুল মতিন, জামালপুর থেকে রশিদুজ্জামান মিলন্ডাত, শেরপুর থেকে হযরত আলী, ময়মনসিংহ থেকে জাকির হোসেন বাবলু, গাজীপুর থেকে সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, চট্টগ্রাম থেকে শামসুদ্দিন, ফরিদপুর থেকে নাসিরউদ্দিন, মাগুরা থেকে কাজী কামাল, যশোর থেকে টি এস আইয়ুব, মেহেরপুর থেকে মিল্টন মোর্শেদ, খুলনা থেকে অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, শাহ শরীফ কামাল তাজ ও বাগেরহাট থেকে ড. শেখ ফরিদুল আলম।


     এই বিভাগের আরো খবর