,

শেরপুরে মাছের মেলা শুরু

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ মৌলভীবাজার জেলার ঐতিহ্যবাহী শেরপুর মাছের মেলার পুরনো দিন ফিরেছে। এখানে এখন নির্ভেজাল মেলাই বসে। এক সময় মেলার অনুসঙ্গী হয়ে ওঠা পুতুল নৃত্যের আড়ালে অশ্লীল নৃত্য এবং জুয়ার আসর এখন আর বসে না। আর এটি সম্ভব হয়েছে প্রশাসনের সময়োচিত ভূমিকা এবং সচেতন এলাকাবাসীর চাহিদায়। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জুয়ার আসর বন্ধ হলেও গেলবারের তুলনায় এবার রাজস্ব আয় একটু বেড়েছে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শেরপুর মাছের মেলা শুরু হয়েছে গতকাল দিবাগত সন্ধ্যা রাত (রোববার) থেকে। প্রতি বছর পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে শেরপুর কুশিয়ারা নদীর কুল ঘেঁষে এই মেলা বসে। পৌষসংক্রান্তির আগের রাতে মূলত মাছ বেচাবিক্রি হয়। বিশাল আকারের নানা রকম মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। মাছের মেলা নাম হলেও এখানে গৃহস্থালির নানা উপকরণ নিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। তাই এই মেলা উপলক্ষে এই অঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ পৌষের শেষ দিনগুলোতে বেশ ব্যতিব্যস্তই হয়ে ওঠেন। এই মেলাকে উপলক্ষ করে শেরপুর এলাকার আশপাশের মানুষের মধ্যে পৌষসংক্রান্তির সময় অনাবিল এক আনন্দের সৃষ্টি হয়। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই মাছের মেলা এক সময় বসতো মনুর মুখ এলাকায় কুশিয়ারা নদীর তীরে। এটি এখন স্থান পরিবর্তন হয়ে বিগত ৪৫-৫০ বছর ধরে মেলা বসে খলিলপুর ইউনিয়নের শেরপুরে। আর এই মেলার দিনকে সামনে রেখে পৌষসংক্রান্তিরর পূর্ব থেকেই চলে প্রস্তুতি। এই মেলায় বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেমন ব্যবসায়ীরা আসেন বড় বড় মাছ নিয়ে, তেমনি আসেন ভোজনবিলাসী ক্রেতারাও। মৎস্য ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন স্থান থেকে বিশাল আকৃতির মাছ সংগ্রহ করে এই মেলায় নিয়ে আসেন। মেলায় মাছ ব্যবসায়ীরা নিয়ে আসেন বিশাল আকৃতির বাঘাইড়, বোয়াল, রুই, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। লোকসমাগম হয় প্রচুর। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাছের মেলাকে কেন্দ্র করে আগ থেকেই কে কত বড় আকৃতির মাছ মেলায় ওঠাতে পারেন এ নিয়ে ভেতরে ভেতরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলে একধরনের প্রতিযোগিতা। স্থানীয় হাওর, বাঁওড়, মাছের খামার ছাড়াও সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মারকুলি এবং দেশের বড় বড় আড়ৎ থেকেও মাছ নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। মেলা আয়োজনকারী ও ব্যবসায়ীদের ধারণা মতে, একরাতেই মাছের মেলায় কয়েক কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন এই ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় এখন অশ্লীল নৃত্য বা জুয়ার আসর বসতে দেয়া হয় না। কঠোরভাবে নজরদারি করা হয়। গত বছরের তুলনায় এবার রাজস্ব আয় একটু বেড়েছে। মেলা রোববার রাত থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত চলবে।


     এই বিভাগের আরো খবর