,

হবিগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত

জুয়েল চৌধুরী ॥ প্রতিবারের ন্যায় এবারও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে মেলার পাশাপাশি জুয়ার বোর্ডও বিভিন্ন স্থানে বসেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই মেলায় মানুষের ঢল নামে। এদিকে, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদও মেলা পরিদর্শন করেন। শুধু হবিগঞ্জ নয়, সিলেট, মৌলভীবাজর, সুনামগঞ্জ ও ব্রাণবাড়িয়া থেকে এখানে ভিড় জমান মানুষ। কেউ মাছ কিনতে, কেউ দর্শন করতে। মেলাটি একদিনের জন্য বসলেও চলবে আজ (বুধবার) দুপুর পর্যন্ত। মেলায় বোয়াল, বাগাই, বড় আকৃতির আইড়, চিতল, গজার, রুই, কাতলসহ নানা প্রজাতির আকর্ষণীয় মাছ রয়েছে। এটি মাছের মেলা হলেও কৃষি উপকরণ, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, ভোগপণ্য, আখ, শিশুদের খেলনাও থাকে। মেলায় মিন্নত আলীর দোকানে দেখা যায় ক্রেতাদের প্রচুর ভীড়। গতকাল বিকেল পর্যন্ত মেলায় সবচেয়ে বড় মাছটি তুলেছেন তিনি। প্রায় ২৫ কেজি ওজনের বাঘাই মাছটির দাম চাওয়া হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। সবার দৃষ্টি ছিল এ মাছটির প্রতি। মাছ বিক্রেতা আনফর মিয়া বলেন, বিভিন্ন নদী ও হাওর থেকে মাছ আসে এখানে। এ মেলাকে ল্য করে চলে মাছ ধরারও উৎসব। প্রতিবছরই এ মেলায় মাছ নিয়ে আসি। বাজারের তুলনায় মেলায় মাছের দাম বেশি হলেও সবাই আনন্দের সাথে মাছ কিনেন। বিক্রেতা নুর মিয়া বলেন, মাছ মেলায় আগের সেই অবস্থা নেই। তবে চোখ জুড়িয়ে দিয়েছে নতুন প্রজন্মের। আগে সিলেট অঞ্চলের তরতাজা মাছ দিয়ে মেলা বসত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশির ভাগ মাছ আসে। মেলায় ঘুরতে আসা আসিফ চৌধুরী বলেন, মাছ কেনাটাই বড় কথা নয়। বাপ-দাদার মুখে বড় মাছের গল্প শুনা ছাড়া দেখা হয়নি। এখানে এসে বড় মাছগুলো দেখে চোখ জুড়িয়ে গেছে। তাদের গল্পগুলো অবিশ্বাস্য হলেও এখন ভুল ভেঙ্গে গেল। অন্যদিকে, মেলাকে ঘিরে জুয়ারও আসর বসেছে। বিভিন্ন পণ্যের মাধ্যমে হাজার হাজার টাকার জুয়ায় বাজি চলে। আবার জুয়া খেলা নিয়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। পইল ইউপির চেয়ারম্যান সৈয়দ মঈনুল হক আরিফ বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বাগ্মী নেতা বিপিন চন্দ্র পালের জন্মভূমি পইল গ্রামে প্রতিবছর এ মেলা হয়ে থাকে। মেলাকে ঘিরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও মেলা শান্তিপূর্ণভাবে হবে বলে আশা করছি।


     এই বিভাগের আরো খবর