,

নবীগঞ্জে ‘যুদ্ধাপরাধ’ মামলা থেকে নাম বাদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ’র অভিযোগ

প্রতিবাদ সভায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী

সংবাদদাতা ॥ নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপের নাম যুদ্ধাপরাধি মামলার এজাহার থেকে নাম বাদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহনেওয়াজ ও তার ছেলে নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আমিন রাসেলের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী পরিবার ও ছয় মৌজার উদ্যোগে বিশাল প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় কায়স্থগ্রাম (উমেদগঞ্জ) বাজারে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রতিবাদ সভায় কয়েক শতাধিক লোকজন উপস্থিত থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান। অন্যতায় দিনারপুর পরগনার লোকজনদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলার হুশিয়ারী দেয়া হয়। এতে গজনাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ মিয়ার সভাপতিত্বে ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কাইয়ূম সেলিমের সঞ্চালনায় এতে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আবুল খায়ের গোলাপের বড় বোন মনোয়ারা বেগম, ছোট বোন আনোয়ারা বেগম ও তাঁর স্ত্রী মিনারা বেগম। এ সময় তারা কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহনেওয়াজ ও তার পুত্র ফয়েজ আমীন রাসেল আমাদের বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে আবুল খায়ের গোলাপকে যুদ্ধোপরাধী মামলার এজাহার থেকে নাম বাদ দেয়ার কথা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক দফায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রাসেলের সাথে আমরা যোগাযোগ করলে আমাদের কোন পাত্তাই দিচ্ছেনা।

20190202_222405-picsay

এই প্রতারণার ও দুর্নীতির বিভিন্ন ঘটনা ব্যাখ্যা দিয়ে ৬ মৌজার লোকজনের নিকট বিচার চেয়েছেন তারা। এছাড়াও অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট মুরুব্বী মহিবুর রহমান চৌধুরী, ইউপি আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার মিয়া, মনিদ্র চন্দ্র রায়, কাছন মিয়া, শফিউল আলম বজলু, মকসুদ চৌধুরী, সাবেক ইউপি সদস্য শাহ গোলাম ইজদানী শামীম, বিশিষ্ট মুরুব্বি আমিনুল ইসলাম এলাইছ, ছনর মিয়া, কাপ্তান মিয়া, আলা মিয়া চৌধুরী, সফিক মিয়া, ইউপি সদস্য জাহেদ আহমদ, আব্দুল মালিক, ছাও মিয়া, সাদিক মিয়া, কাজল মিয়া, জালাল মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সদস্য রুহেল আহমদ, ইউপি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন লাল, আ’লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আইয়ুব আলী, আবু মিয়া, সেকুল মিয়া, যুবলীগ নেতা জিলু মিয়া, অয়তুন মিয়া, মোবারক মিয়া, সাবাজ মিয়া, শাহিন মিয়া, সৈরত মিয়া, আব্দুল হাই, টনু মিয়া, রাজা মিয়া প্রমুখ। এ সময় দিনারপুর পরগণার বিভিন্ন এলাকার কয়েক শতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য গত ২০১৫ সালের ১৭ই জুলাই গজনাইপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৌলভী বাজার সদর উপজেলার আথানগিরী গ্রামের রইছ উল্লাহর স্ত্রী শুকুরি বিবি বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা পেয়ে চার্জশীট দাখিল করলে যুদ্ধাপরাধি ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। পরে ২০১৭ সালের ১১ই এপ্রিল আবুল খায়ের গোলাপকে নিজ বাড়ী থেকে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ ও নবীগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এর পর থেকেই তিনি কারাবাসে রয়েছেন। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আমিন রাসেলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি ও আমার বাবা টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গোলাপের পরিবারের সাথে আমাদের পূর্বের বিরোধ রয়েছে। তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এমন প্রমাণ দেখাতে পারবে না। অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট।


     এই বিভাগের আরো খবর