,

পরকিয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রী-স্বাশুরীর ওপর নির্যাতন হবিগঞ্জে এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জে সরকারি আবাসিক এলাকায় স্ত্রী, শ্বাশুরী ও শালাকে আটক করে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) জ্যেষ্ট সহকারী প্রকৌশলী নাজমুস সাদাত মোঃ জিললুর রহমানের ওপর। অভিযোগ শালির সাথে পরকিয়ায় জড়িয়েছেন এ প্রকৌশলী। এর প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর এ নির্যাতন চালানো হয় গতকাল শনিবার ও এর আগের দিন রাতে। এ সময় অফিসের অন্যান্য লোকজন তাকে সহায়তা করেন বলেও অভিযোগ উঠে। হবিগঞ্জ শহরতলীর ভাঙ্গারপুল এলাকায় অবস্থিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। অফিসের পিছনেই কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকা। গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় গিয়ে দেখা যায় অফিস ও আবাসিক এলাকার মূল ফটকে তালা দেওয়া। দায়িত্বরত পাহারাদার জানান, ভিতরে সমস্যা আছে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিষেধ রয়েছে কাউকে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য। পরে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে গেইট খুলে দেওয়া হয় গণমাধ্যম কর্মীদের। আবাসিক ভবনের দু’তলায় বসবাস করেন জ্যেষ্ট সহকারী প্রকৌশলী নাজমুস সাদাত মোঃ জিললুর রহমান পরিবার নিয়ে। তার বাসার নীচ তলায় (সিঁড়ির পাশে) দেখা যায়, ৪/৫টি বড় ব্যাগ ও লাগেজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। বুঝা যায়, কেউ তা ছুঁড়ে ফেলে রেখেছে। ঘরে ঢুকতেই দেখা গেল দরজা ভাঙ্গা। দরজার লক (তালা) খুলে পড়ে আছে মেঝেতে। একটি কক্ষে দুই নারী, দুই শিশু ও এক তরুণ জড়ো হয়ে বসে আছেন। দেখে মনে হলো তাদের মধ্যে কোন আতঙ্ক কাজ করছে। এ সময় প্রকৌশলী বাসায় ছিলেননা। পরে পরিচয় পাওয়া গেল তারা প্রকৌশলী জিললুর রহমানের স্ত্রী, শ্বাশুরী, সন্তান ও এক শ্যালক। গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় জেনে সাহায্য চাইলেন তারা। বলেন, গত শুক্রবার রাত থেকে তাদের আটক করে নির্যাতন চালিয়েছেন জিললুর রহমান। পাশাপাশি অফিসের লোকজন তাকে এ কাজে সহযোগিতা করে। তারা বের হতে চাইলেও তারা বের হতে পারছেন না। অফিস ও বহিরাগত কিছু লোক তাদের পাহারা দিচ্ছে। সহকারী প্রকৌশলীর স্ত্রী (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) বলেন, তার স্বামী তারই ছোট বোনের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়েছেন। এ বোন কে এখন তারা খোঁজে পাচ্ছেননা। এ বিষয়টি জানতে তার মা ও ছোট ভাই গত শুক্রবার হবিগঞ্জে আসেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর এ নির্যাতন। প্রকৌশলীর শ্বাশুরী জানান, তিনি আমেরিকায় থাকেন। দুই মেয়ের সমস্যার কথা জেনে দেশে আসেন এবং মেয়ের জামাইয়ের বাসায় এসেছিলেন তার ছোট মেয়ের খোঁজ নিতে। এসেই নির্যাতনে পড়েছেন। পুলিশে অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে আমাদের বাঁচতে দিন। বাঁচলে অভিযোগ করা যাবে। এর কিছুক্ষণ পরেই তারা এলজিইডির একটি গাড়িতে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জ ছাড়েন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিইডির জ্যেষ্ট সহকারী প্রকৌশলী নাজমুস সাদাত মোঃ জিললুর রহমান বলেন, তার শালীর বিয়ের পর সংসার ভেঙ্গে যায়। এর পর সে যশোরে ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করে সেখানেই। তার স্ত্রীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সন্দেহ তিনি এ বাড়ি কিনে দিয়েছেন। এ ধারণা থেকে তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছেন তারা। এমনকি স্ত্রীর নামে সমস্ত জায়গা- সম্পদ লিখে দেওয়ার চাপ দিলে তাও করেন তিনি। এখন তার বাবার বাড়ির সম্পদ নেওয়ার জন্য এ ধরণের মিথ্যাচার শুরু করেছেন তারা। তার শালী তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সে ফোনে বিষয়টি তাদের জানিয়েছে বলে জানান তিনি। হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে কোন পক্ষই তাদের কাছে অভিযোগ করেনি।


     এই বিভাগের আরো খবর