,

ফয়েজ আমিন রাসেল কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবাদের প্রতিবাদ ও ব্যাখা

গত ১৯ ফেব্রুয়ারী হবিগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক হবিগঞ্জের জনতার এক্সপ্রেস, প্রভাকর সহ বিভিন্ন পত্রিকায় ফয়েজ আমিন রাসেল কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবাদ লিপিটি আমার দৃষ্টি গোছর হয়েছে। প্রতিবাদ লিপিতে যা কিছু উল্লেখ্য করা হয়েছে তাহা সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও
উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানীকর। যাহা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো অবস্থা।
নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের কথিত নেতা বহু অপকর্মের হোতা ফয়েজ আমিন রাসেল, তার বাবা শাহনেওয়াজ ও দাদা সাজিদ মাস্টারের কিছু অপকর্মের তথ্য এই প্রতিবাদের মাধ্যমে তুলে ধরলাম-
এই ফয়েজ আমিন রাসেল এক সময় বিএনপি/ছাত্রদল ও শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। তার ও তাঁর পিতা সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপিকর্মী শাহনেওয়াজ মিয়ার সকল অপকর্ম ঢাকতে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর ২০১০ সালে সুচতুর ফয়েজ আমিন রাসেল সু-কৌশলে আওয়ামীলীগে যোগদান করে। আর যোগদানের পর অনৈতিকভাবে নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নেয়। আওয়ামীলীগের পদ ভাগিয়ে নেয়ার পর থেকেই একের পর এক অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে রাসেল ও তার বাবা শাহনেওয়াজ। রাসেল এলাকায় নব্য আওয়ামীলীগার ও হাইব্রীড বলেই পরিচিত। রাসেল সম্প্রতি অনুষ্টিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ এমপি মহোদয়ের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। শুধু সে নয়, তার বাবাও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও বিএনপি দলীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তাদের বাড়িতে একাধিক বৈঠক করে। প্রকাশ্যে ধানের শীষে ভোট দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে। এখন আবার সে নিজেকে এলাকায় আওয়ামীলীগের কর্মী দাবী করে বেড়াচ্ছে। রাসেল তার বাবা শাহনেওয়াজকে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ পরিবারের সদস্য দাবী করিয়াছে। যাহা আদৌ সত্য নয়। তার এ দাবী সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ইহা ইতিহাস বিকৃতির একটি জঘণ্যতম ঘটনা। তার বাবার নাম সরকারী গেজেটসহ কোথাও নেই। মুক্তিযোদ্ধা হলে অবশ্যই গেজেটে বা মুক্তিবার্তায় নাম থাকতো। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবীকারী শাহনেওয়াজের বাবা ও রাসেলে দাদা সাজিদ মাস্টার যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১১নং গজনাইপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির কনভেনার ছিলেন। সেই সময় তাদের নেতৃত্বে এমন কোন অপকর্ম নেই যে তারা করেনি। তারা প্রতিদিন গরু জবাই করে পাকহানাদার বাহিনীকে খাওয়াতেন। সেই সময়ে সাজিদ মাস্টার ও তার পুত্র শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে পাক বাহিনী এলাকার নিরীহ মানুষের ব্যাপক তি করেছে। তারা যে রাজাকার ও দালাল ছিল তার প্রমাণও আছে। খোয়াই’র বাক নামক গ্রন্থে রাজাকারের তালিকায় রাসেলের দাদা সাজিদ মাস্টার ও সরকারী তালিকায় রাসেলের বাবা শাহনেওয়াজ ও দাদার নাম রয়েছে। ৭১ সালে নইরা মাড়াবাড়ি থেকে লুন্ঠের মালামাল তার বাংলো থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। রামলু গ্রামের মৌলা মিয়া চৌধুরীর বন্দুক চুরি করে নিয়ে গোপনে লোগাও গ্রামের দিলাওর মিয়ার বাড়িতে লুকিয়ে রেখে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করেন। পরে সেই মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় শাহনেওয়াজ নিজেই দোষি সাব্যস্ত হন। মামদপুর গ্রামে ধর্ষণ করতে গিয়ে এক নারী কর্তৃক কামড়ের দাগ এখনো বিদ্ধমান আছে। ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে গণধোলাই দিলে তার মাথা ফেটে যায়। এর দাগও এখনো আছে। শতক গ্রামের ফজলুকে আত্মগোপনে পাঠিয়ে দিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান আবুল কায়ের গোলাপ সহ কয়েকজনকে আসামী করে হত্যা ও গুম মামলা দায়ের করে নিজেই কপোকাত হয়ে যায়। এছাড়া লন্ডণ প্রবাসী সৈয়দা খাতুনের বাড়ি ও জমি ২৭ বছর দখলে রাখার পর অপারেশন ক্লিণ হার্টের সময় পুলিশ ও সেনা বাহিনীর ভয়ে অবৈধ দখল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ওই শাহনেওয়াজ তার কাজের মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্কের ফলে একটি সন্তান জন্ম নেয়। পরে লোগাও গ্রামের এক ব্যক্তিকে ৩৫ হাজার দেয় এবং সন্তানটিকে দত্তক দেয়। শাহনেওয়াজ ও তার ছেলে ফয়েজ আমিন রাসেল অন্যের বাড়ি দখল করতে গিয়ে অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি গুলি করলে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তিন মাস জেল কেটে বের হয়। বর্তমানে মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধিন। ফয়েজ আমিন রাসেল আন্তঃদেশীয় গাড়ী চোরাচালান চক্রের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী। সম্প্রতি সাতাইহাল গ্রামের মিজান নামের এক ব্যক্তির মোটর সাইকেল চুরি হলে সেই সাইকেলটি সিলেটে রাসেলের ভাড়া করা বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে দিনারপুর পরগনার সালিশ বৈঠকে শাহনেওয়াজ মুচলেখা দিয়ে তার পুত্র রাসেলকে ছাড়িয়ে আনে। এছাড়া ফয়েজ আমিন রাসেল গত বছরে ধর্ষণ মামলায় ৩ মাস জেল কাটার পর জামিনে বেড়িয়ে আসে। এ মামলাটিও বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধিন রয়েছে। ওই ফয়েজ আমিন রাসেল অন্যের বাড়ি দখল করতে গিয়ে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি ছুরে বেশ কয়েকজনকে আহত করে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটিও বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধিন রয়েছে। এছাড়া রাসেল গজনাইপুরে এক নারীকে ধর্ষণ করতে গেলে গণধোলাইয়ের স্বীকার হয়ে আহত হয়। এ নিয়েও পরগনায় বিচার সালিশ হয়। এতেও তার পিতা শাহনেওয়াজ মুচলেখা দিয়ে রাসেলকে ছাড়িয়ে আনে। রাসেলের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার এক নারী তার বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য নারী নির্যাতন করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করলে সে দীর্ঘদিন জেল কেটে কিছু দিন পুর্বে জামিনে বের হয়।
ফয়েজ আমিন রাসেল যে আবুল খায়ের গোলপকে যুদ্ধাপরাধ মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়ার কথা বলে গোলাপের মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী ও লন্ডন প্রবাসী ভাগিনার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়েছে তার বেশ কয়েকটি অডিও রেকর্ডও (ফোনালাপ) আমার কাছে রয়েছে। এছাড়া সে যে এক সময় বিএনপি, জামাত ও ছাত্র শিবিরের রাজনীতি করতো ও এবং কি উদ্দেশ্য নিয়ে রাসেল আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে তার সরল স্বীকারোক্তির একটি অডিও রেকর্ডও আমার কাছে আছে। এছাড়া রাসেলের দেয়া প্রতিবাদে যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে তারা সবাই এলাকার স্বজ্জন ও সম্মানী ব্যক্তিত্ব। এলাকায় তাদের মানহানীর করতেই মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য দিয়ে পত্রিকায় প্রতিবাদ লিপি দিয়েছে।
রাসেল ও তার পিতার অপকর্ম ঢাকতে একের পর এক মিথ্যা তথ্য দিয়ে পত্রিকায় প্রতিবাদ লিপি দিয়েছে। আমি উক্ত প্রতিবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে বহু অপকর্মের হোতা নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আমিন রাসেল ও তার বাবা শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসন ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জোর দাবী জানাই।

প্রতিবাদকারী এলাকাবাসীর পক্ষে
আব্দুল কাইয়ুম সেলিম
সভাপতি
কায়স্থগ্রাম ৬ মৌজা আদর্শ সমবায় সমিতি
নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।


     এই বিভাগের আরো খবর