,

লন্ডনের মেরিটমাস অর্গেনাইজেশনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্টানে বাংলাদেশের প্রশংসায় বিভিন্ন দেশের কুটনীতিকরা

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন প্রতিনিধি :: সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সফলতার  প্রশংসা করলেন  বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। সেন্ট্রেল লন্ডনের মেরিটমাস অর্গেনাইজেশনে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত  বাংলাদেশের ৪৮তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্টানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতক ও রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার প্রশংসা্ করেন।

অনুষ্টানে আলোচনা সভার পাশাপাশি তুলে ধরা হয় সামাজিক উন্নয়ন ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে আগত পার্বত্যনৃ-গোষ্ঠি গ্রুপের নৃত্যানুষ্ঠান উপভোগ করেন লন্ডনে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ মন্ত্রনালয় ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা এবং ব্রিটিশ রাজনীতিকরা ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। উপস্থিত ছিলেন লন্ডন সফররত খ্যাতিমান সঙ্গীত শিল্পি রুনা লায়লা, অভিনেত্রী শমী কায়সার ও বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দিন আহমদ তনয়া মাহজাবিন মিমি সহ বৃটেনে বসবাসরত বাংলাদেশী  কমিউনিটির বিশিষ্জনেরা।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন হাউস অফ লর্ডসের ডেপুটি লীডার ও ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী লর্ড আর্ল হাও, ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাউথ এশিয়া ও আফগানিস্তান ডেস্কের ডাইরেক্টর গেরেথ বেইলী, লর্ড মেয়র অফ ওয়েস্ট মিনিষ্টার ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বক্তৃতার পর অতিথিদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশের ৪৮তম জন্মদিনের কেক কাটেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও হাই কমিশনার।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লর্ড আর্ল হাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে  বলেন, ব্রিটেন-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে দুদেশের সরকার পর্যায়ে আমরা কাজ করছি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র বিমোচন ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সফলতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এসব অর্জন দেশটির ৪৮তম জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠান গুলোতে ঔজ্জ্বল্য ছড়াচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ সরকার ও জনগনের প্রতি স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্রিটিশ সোসাইটিতে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির অবদানের কথাও স্মরণ করেন।

ফরেন এন্ড কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাউথ এশিয়া ও আফগানিস্তান ডেস্কের ডাইরেক্টর গেরেথ বেইলী ৪৮তম স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ব্রিটেন-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর দাড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্পর্ক ক্রমেই সুদৃঢ় হচ্ছে এমন মন্তব্য করে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ দুটির যৌথ কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করেন তাঁর বক্তৃতায়। দারিদ্র বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নের চলমান সংগ্রামে ব্রিটেন বাংলাদেশের পাশে আছে, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্যারেথ বেইলী বলেন, ব্রিটেনে বসবাসরত কমিউনিটি ও ক্রিকেট ব্রিটেন-বাংলাদেশকে এক সুতোয় বেধে রেখেছে।

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের উপস্থিতিকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আজকের উন্নয়ন সফলতার দীর্ঘ সংগ্রামে ব্রিটেন সব সময় বাংলাদেশের পাশে ছিলো।

 

বাংলাদেশ একটা সময় ব্রিটেনেরএইডের উপর ছিলো নির্ভরশীল। সেই নির্ভরতা কাটিয়ে দেশটি এখন ব্রিটিশ ট্রেডকে প্রাধান্যদিচ্ছে। এটি বতর্মানপ্রধানমন্ত্রীর সাফল্য, এমন মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন শেখ হাসিনার এই সাফল্যের কথা ব্রিটিশ এমপিরাও স্বীকার করছেন।

হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ৪৮ বছর আগে একটি অসাম্প্রদায়কি চেতনা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে দেশটি জন্ম নিয়েছিলো, বিশ্ব সভায় অনেক ক্ষেত্রেই সেই দেশটি আজ চমক। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ব্রিটেনের পারস্পরিক সম্পর্কআরো ঘনিষ্ঠ ও বেগবান হয়েছেমন্তব্য করে তিনি বলেন, আগামীবছর যুক্তরাজ্যে জাতির পিতারজন্ম শতবার্ষিকী ও ২০২১ সালেবাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য কূটনৈতিকসম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনেবাংলাদেশ হাই কমিশন ওযুক্তরাজ্য সরকার নিরলসভাবেকাজ করে যাচ্ছে।

আসন্ন ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপকে কেন্দ্র করে ব্রিটেন-বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের হাই কমিশনের ইচ্ছের কথাও এসময় অতিথিদের জানান মুনা তাসনিম।


     এই বিভাগের আরো খবর