,

বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জে ধানে চিটা ॥ কৃষকের মাথায় হাত

বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের হাওরে ব্রি-২৮ ধানে ব্যাপক চিটা দেখা দিয়েছে। সেচ, সারের সঠিক প্রয়োগ ও রোগ-বালাই মুক্ত ধানে চিটা পড়ায় কৃষকরা নির্বাক। একেবারেই ভেঙে পড়েছেন তারা। ধান পাকা ধরে যখন সোনালী হয়ে ওঠার কথা। ঠিক তখনই কালচে রঙ ধরা ধানের খাড়া শীষ দেখেই বুঝতে পারেন তাদের কপাল এবার পুড়েছে। শীষের অধিকাংশ ধানের ভেতরই চাল নেই। ‘চুছা’ (চিটা) হয়ে গেছে। সরজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ উপজেলার প্রায় হাওরেই ব্রি-২৮ জাতের ধানে ১০ থেকে ১৫ ভাগ চিটা পড়েছে। তবে ব্যাপক হারে চিটা পড়েছে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নে ও বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশার হাওরে। এই দু’ হাওরের সেচ প্রকল্পের আওতাধীন সহগ্রাধিক একর জমির ব্রি-২৮ ধানে ২৫ ভাগ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত চিটা পড়েছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের কৃষকরা জানান, আগাম ফসল কাটার আশায় আমাদের হাওরের অধিকাংশ ধানী জমিতে ব্রি-২৮ জাত বপন হয়েছিল। সবগুলোতেই ৩০/৪০ ভাগ চিটা পড়ে গেছে। বানিয়াচং হোন্ডারবন, আমতপুর, ভাটারপাড়, স্বজনশ্রী হাওরের কৃষক তৌহিদুর রহমান, জিতু মিয়া, বাবুল মিয়া এবং কামাল খানী গ্রামের কৃষক আলফু মিয়া, আবদুল হাই, জমরুত উল্লা বললেন, তাদের হাওরে প্রায় ৭ শতাধিক একর জমির ধানে চিটা পড়েছে। এ হাওরে ব্রি-২৮ ধানের প্রায় ২৫ ভাগ চিটা পড়েছে। তবে আশপাশের হাওরে অন্যান্য জাতের ধানের ফলন স্বাভাবিক রয়েছে এবং কৃষকরা জানিয়েছেন সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফলন ভালো হবে। ইতিমধ্যে হাইব্রিড ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। কেদার (২৮ শতক) প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ফলন হয়েছে। চিটা পড়া নিয়ে বানিয়াচং কৃষি বিভাগ তাপমাত্রা উঠানামাসহ ৪টি কারণ প্রথমিকভাবে চিহ্নিত করেছে। তন্মধ্যে অতিরিক্ত ইউরিয়া অর্থাৎ কেদার প্রতি ২৫ কেজি থেকে ২৮ কেজি’র স্থলে ৫০/৬০ কেজি প্রয়োগ। সময়মতো সেচ না দেয়া। বেশি বয়সের অর্থাৎ ৪০/৫০ দিনের স্থলে ৫০/৬০ দিন বয়সের চারা রোপণ করায় চিটার সমস্যাটা দেখা দিয়েছে।
ধানে চিটা সম্পর্কে জানতে গেলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, দিন-রাতের তাপমাত্রার ব্যবধানকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। দিন-রাতের তাপমাত্রা ব্যবধান ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেই ধানে চিটা এমনকি ডাম্পিং অফ এর কারণে ধানের চারাও বিনষ্ট হয়ে যায়।


     এই বিভাগের আরো খবর