,

বানিয়াচংয়ের সাজন হত্যা মামলার ১০ মাস পর মূল রহস্য উদঘাটন

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বানিয়াচং উপজেলার কাউরিয়াকান্দি গ্রামে সাজেল মিয়া হত্যা মামলার ১০ মাস পর মূল রহস্য উদঘাটন হয়েছে। প্রধান আসামী মিজানুর রহমান মিজানকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সদর থানায় তার হলরুমে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাত্রে ওই গ্রামের সাজেল মিয়া ওরফে সাজন মিয়াকে আটক মিজান, নয়াপাতারিয়া গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, টলিয়া গ্রামের রুস্তম আলী, আলমবাজারের তাজ উদ্দিন ও মহিউদ্দিন টমটমের গ্যারেজ হতে গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে এনে বিদু্যুৎস্পৃষ্ঠ জনিত কারণে ভর্তি করে। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করলে লাশ রেখে তারা সটকে পড়েন। এসআই রাজিব চন্দ্র দেব লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ মর্গে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্তেও রিপোর্টে ভিকটিম সাজেল মিয়ার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত জনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে ডাক্তার মতামত প্রদান করেন। এ ঘটনায় ভিকটিম সাজেল মিয়ার মা বাদী হয়ে উল্লেখিত ৫ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার দাস মইনউদ্দিন, তারেক মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। অবশেষে ২১ মে সন্ধ্যায় আলমবাজার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপাার রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আলম বাজার থেকে মিজানকে আটক করেন। সে কাউনিয়াকান্দি গ্রামের শফিকুল ইসলামের পুত্র। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মিজান জানায়, আসামী তাজ উদ্দিনের নিকট থেকে ভিকটিম সাজেল মিয়া ১০ হাজার টাকা কিস্তি শর্তে ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু টাকা সময় মতো পরিশোধ না করায় তাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কারণে তারা ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট রাত অনুমান সাড়ে ৯টার দিকে সাজেল মিয়াকে তাদের গ্যারেজে নিয়ে সুদের টাকা পরিশোধ করতে বলে। এতে সাজেল মিয়া পরে দিতে বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার মাথায় পাইপ দিয়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে সে মাটিতে পড়ে যায়। অবস্থার বেগতিক দেখে ভিকটিম বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মর্মে চিৎকার শুরু করে। পরে তারেক মিয়া ও মহিউদ্দিনসহ উল্লেখিতরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং লাশ হাসপাতালে রেখে কৌশলে তারা পালিয়ে যায়। এ সব তথ্য মিজান বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌহিদুল ইসলামের আদালতে গতকাল বুধবার বিকালে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ জানায়, অন্যান্য আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।


     এই বিভাগের আরো খবর