,

শায়েস্তাগঞ্জে সাতটি রেলসেতুর অবস্থা ভয়াবহ

সংবাদদাতা ॥ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন স্থানে রেললাইনের নড়বড়ে অবস্থার চিত্র উঠে আসছে। এসব স্থানে একাধিকবার ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট রেলপথের শায়েস্তাগঞ্জের সাতটি রেলসেতুর অবস্থা নাজুক। যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে এসব রেলসেতু। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃটিশ আমলে নির্মিত হয় শায়েস্তাগঞ্জের খোয়াই রেলসেতু, লস্করপুর রেলসেতু, কুতুবের চকের দুটি রেলসেতু, বড়চর রেলসেতু, সুতাং নদীর ওপর নির্মিত রেলসেতু ও চাইল্লা রেলসেতু। দীর্ঘদিন ধরে দুর্বল হয়ে থাকা রেলসেতুগুলো মেরামতে মাঝেমধ্যে উদ্যোগ নিলেও কাজ হয় নামেমাত্র। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে এসব রেলসেতুর ওপর দিয়ে চলছে ট্রেন। বুধবার দুপুরে পুরান বাজার ও খোয়াই রেলসেতু এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের পুরাতন রেলসেতুর স্লিপারগুলো অকেজো। এক জায়গার স্লিপার সরে চলে গেছে অন্য স্থানে। রেলসেতুর পিলারগুলোতে দেখা দিয়েছে একাধিক ফাটল। যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে। স্থানীয়রা জানান, শায়েস্তাগঞ্জের সাতটি রেলসেতুর অবস্থা ভয়াবহ। ঢাকা-সিলেট রেলপথের বিভিন্ন এলাকার রেলসেতুর পিলারগুলোতে দেখা দিয়েছে একাধিক ফাটল। রেলসেতুর নাট-বল্টু নেই বললে বলে পরে দেবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষের লোকজন। দ্রুত এগুলো মেরামতের উদ্যোগ না নিলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটবে। সুতাং এলাকার বাসিন্দা আব্দুম সালাম মজনু বলেন, শুধু রেলসেতু নয়, পুরো রেললাইনের বিভিন্ন স্থানে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। ট্রেন চলাচলের সময় রীতিমতো কাঁপতে থাকে রেললাইন। এভাবে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে চলাচলে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শায়েস্তাগঞ্জ জহুরচান বিবি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন রুমি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদশের অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো সিলেটের হাতেই ছিল। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দিক থেকেও সিলেট বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আছে। এছাড়া গ্যাস, পর্যটন, চা-পাতা, পাথর, মাছ ও ভাত উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সিলেট। কিন্তু সিলেট বিভাগের রেললাইনের ব্যাপারে আমরা বৈষম্যের শিকার। কর্তৃপক্ষ সময়মতো উদ্যোগ না নেয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনার দায় কি রেল কর্তৃপক্ষ নেবে? হয়তো কিছু ক্ষতিপূরণ দেবে। এছাড়া সিলেট রেললাইনে চলাচলকারী ট্রেনগুলো জীর্ণশীর্ণ। অবস্থা দেখলে মনে হয়, রেল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে দয়া করছে। অথচ অন্যান্য রেললাইনে নতুন নতুন বগি দিয়ে ট্রেন চালানো হয়। এই বৈষম্য থেকে সিলেটবাসী মুক্তি চায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা-সিলেট রেলপথের শায়েস্তাগঞ্জে দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, রেললাইন মেরামতের কাজ চলছে। রেলসেতুর পিলারে ফাটলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে পরে কথা বলব।


     এই বিভাগের আরো খবর