,

সদর হাসপাতালে প্রসুতিদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নার্সদের বিরুদ্ধে প্রসুতি মহিলাদের কাছ থেকে সিজার করানোর কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে হাজার-হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের স্বজনদের সাথে বাক-বিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনাসহ অনেক প্রসূতি মহিলার মৃত্যুও হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র চিকিৎসার ভরসা সদর হাসপাতাল। আর সেখানের অবস্থাই যদি এমন হয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? প্রতিদিন গ্রামগঞ্জ থেকে দরিদ্র ঘরের প্রসূতি মহিলারা সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে এসে ভর্তি হলেও কতিপয় নার্স, আয়া এবং তাদের নিয়োগকৃত দালালরা রোগীদের ইনজেকশন স্যালাইন দিয়ে ব্যথা তুলে ভয় দিখিয়ে বলে, ‘বাচ্চার অবস্থা খারাপ যদি এই মুহুর্তে সিজার না করান, তাহলে বাচ্চা কিংবা তার মা’কে বাচানো সম্ভব হবে না। ভাল রোগীরা হলে তাদের নিয়োজিত দালালদের দিয়ে কমিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেয়। আর যদি দরিদ্র ঘরের রোগী হয় তাহলে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা নিয়ে হাসপাতালেই সিজারের ব্যবস্থা করে। অথবা তাদের চাহিদামত টাকার যোগান না দিতে পারলে নার্সরা নরমাল ডেলিভারী না করিয়ে আয়াদের মাধ্যমে বাচ্চা ভুুমিষ্ঠ করানোর চেষ্টা করান। এতে অনভিজ্ঞ আয়াদের টানা হেচড়ায় অনেক সময় মা ও সন্তানের মৃত্যুও হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে এক ভুক্তভোগী প্রসূতির স্বামী শাহেদ আলী বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করলে এক নার্স তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। পরে আমার স্ত্রীর তীব্র প্রসব ব্যথা হলে তিনি আমার কাছে ৬ হাজার টাকার কথা বলেন। আমি গরীব মানুষ বলে ২ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। কিন্তু তাতে ওই নার্সের হবে না বলে জানান। পরে ওই ২ হাজার টাকা দিয়ে ওয়ার্ডের দায়িত্বরত আয়াকে দিয়ে আমার স্ত্রীর নরমাল ডেলিভারী করান। সে অনভিজ্ঞ হওয়ায় আমার স্ত্রী ও বাচ্চার অনেক ক্ষতি হয়েছে যা আপনাদের মুখে বলা সম্ভব না। আমি বারবার নার্সের কাছে গেলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে আমার উপর ক্ষেপে যান’। এরকম অহরহ সমস্যা ও অভিযোগে জর্জরিত সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগ। গাইনী ওয়ার্ডের নার্স ও আয়াদের বিরুদ্ধে সেবা প্রত্যাশীদের ভুল বুঝিয়ে বাহিরে প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানোসহ আরও নানান অপকর্মের তথ্যও এ প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে। অনুসন্ধানে জানা যায় কতিপয় নার্সদের সাথে এ কাজে সহযোগী সালমা, রিনা, শাহেনাসহ অসংখ্য যুবতীরা। আবার কোন কোন সময় এরা রোগীদের কাছ থেকে নবজাতক চুরির ব্যাপারেও সাহায্য করে থাকে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক রথিন্দ্র চন্দ্র দেব জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত নার্সদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর