,

বিদেশগামীদের সঙ্গে প্রতারণা ঠেকাতে নজরদারি জোরদারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সময় ডেস্ক ॥ বিদেশে যাওয়ার সময় সাধারণ জনগণ যেন প্রতারিত না হয়, সেজন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি নজরদারি জোরদারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেননা তারা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলতে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। গতকাল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি ২০১৬-এর আলোকে গঠিত অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যেন অকালে হারিয়ে না যায় সেজন্য তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। কেননা, তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের দিকে নজর দেয়া আমাদের দায়িত্ব, যেহেতু তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের প্রায় একশ’টি দেশে অবস্থান করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। যা আমাদের দারিদ্র বিমোচন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। যারা কাজের জন্য বিদেশ যাচ্ছে তাদের জীবন বৃত্তান্ত সহযোগে একটি ডাটাবেজ প্রস্তুত করার জন্যও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে তারা কোন কাজের জন্য কোন দেশে যাচ্ছে তার বিবরণ থাকতে হবে। বিদেশে গমনেচ্ছুরা যে কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছে তার প্রশিক্ষণ এবং সে দেশের ভাষার ওপর দখল থাকার বিষয়ে গুরত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আমরা যৌথভাবেই প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারি, যেমনটি অতীতেও করা হয়েছে। অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশে এক শ্রেণীর দালাল ও প্রতারক চক্র রয়েছে যারা বিপুল অর্থের বিনিময়ে বিদেশে লোক পাঠায়। আর বিদেশে গমনেচ্ছুরা দিন বদলের আশায় তাদের সর্বস্ব বিক্রি করে, ঋণ করে তাদের টাকার জোগান দেয়। এমনও দেখা গেছে যে, এদেরকে বিদেশে নিয়ে দালাল চক্র দেশে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকেও চাপ প্রয়োগ করে অর্থ আদায় করে। কাজেই আমাদের এই পুরো প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে নজরদারিতে আনতে হবে। সারাদেশে সরকার ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের পরও জনগণ এসব প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে গমনেচ্ছুরা চাইলে সারাদেশে থাকা এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে বিদেশে যাওয়ার জন্য নাম রেজিস্টার করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদেশে গমনেচ্ছু জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, তারা দালালের কাছে না গিয়ে বিদেশ যেতে চাইলে এসব ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে যেন নাম রেজিস্ট্রেশন করান। তিনি এ বিষয়ে মিডিয়াকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহবান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মহিলারাও কাজের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে এবং বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কাজেই আমরা এখন তাদের জন্য স্মার্ট কার্ড এবং মোবাইল ফোন দিচ্ছি, যাতে করে তারা এ ধরনের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে পারে। তার সরকার বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাতে করে এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তারা বিদেশে যেতে পারেন। তিনি বলেন, তাদেরকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে এবং এখন থেকে আমরা দক্ষ জনশক্তিই বিদেশে পাঠাব। এ প্রসঙ্গে সরকার প্রধান আরো বলেন, ভবিষ্যতে আমরা আর কেবলমাত্র জনশক্তি বিদেশে পাঠাব না কেননা আমাদেরই দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন পড়বে। কারণ সমগ্র দেশজুড়ে আমরা একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি এবং আইসিটি ক্ষেত্রের বিকাশ সাধন করছি।


     এই বিভাগের আরো খবর