,

আলোচিত বক্তা গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর বিরুদ্ধে মামলা

‘খাবেন? ঢেলে দেই?’ ‘পরিবেশটা সুন্দর না? ‘কোনো হৈ চৈ
আছে?’ এই শব্দগুলো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল

সময় ডেস্ক ॥ ‘খাবেন?’ ‘ঢেলে দেই?’ ‘ভাই পরিবেশটা সুন্দর না? ‘কোনো হইচই আছে?’ এই শব্দগুলো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। নেটিজেনরা ছবি পোস্ট করলেই এসব ক্যাপশন দিচ্ছেন। বাংলাদেশের ফেসবুক প্ল্যাটফরম ঘাঁটলেই এমনটা দেখা যাচ্ছে। এ বাক্য চারটির বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরী। তাহেরীর ওয়াজে দেখা যায় তিনি বক্তব্যের শুরুতেই কতটুক করেন। মজা করেন উপস্থিতিদের সঙ্গে।
সম্প্রতি তার একটি ওয়াজের অংশ বিশেষ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘কেউ কথা কইয়েন না, একটু চা খাব? খাই একটু? আপনারা খাবেন? ঢেলে দেই? ঢেলে দেই? … ‘ভাই পরিবেশটা সুন্দর না? কোনো হইচই আছে? আমি কি কাউকে গালি দিয়েছি? কারোর বিরুদ্ধে বলতেছি? এরপরও সকালে একদল লোক বলবে, তাহেরী বালা না।’ দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতী মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জিকিরের সময় নেচে-গেয়ে ‘বসেন বসেন, বইসা যান’ বলায় সমালোচিত হন তাহেরী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে তৈরি হয়ে নানা ট্রল ও ভিডিও। এরপর কিছুদিন ওয়াজ বন্ধ রেখেছিলেন তিনি। সম্প্রতি ফের আলোচনায় এলেন এই বক্তা।
আলোচিত বক্তা ও ‘দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য মো. ইব্রাহিম খলিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৮ ও ৩১ ধারায় মামলাটি হয়েছে। কে এই তাহেরী?
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাহেরী নামেই তিনি পরিচিত। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেন মুফতী মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী। তাঁর পারিবারিক ইতিহাস ও বংশগত পরিচয় নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তবে তিনি তর্ক বিতর্কের মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন। যদিও তিনি তাঁর সম্পর্কে বিতর্কের বিভিন্ন ব্যাখ্যা তিনি দিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে নাচ করার যে অভিযোগ রয়েছে তাকে তিনি ক্যামেরার কারসাজি বলে উল্লেখ করেছেন। ২০১৩ সালে নরসিংদীতে গিয়াস উদ্দিন আত-তাহেরীর ওয়াজে ‘তাবলীগের লোকদের কাফের বলে গালাগাল, আলেম-ওলামা সম্পর্কে এবং শরীয়তের পীর-মাশায়েকদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য’নিয়ে রায়পুরার অলিপুরা শাহেরচর ও বড়চর গ্রামে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অর্ধশত শটগানের ফাঁকা গুলি ও ৩০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। ওই ঘটনায় একটি মামলাও হয়। উত্তরবঙ্গের একটি জেলায় সম্প্রতি এক ওয়াজ মাহফিলে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের ‘পোলা তো নয় সে যে আগুনের গোলা রে’ গানটি নেচে-গেয়ে উপস্থাপন করায় ইসলামী আলোচকদের সমালোচনার মুখে পড়েন তাহেরী।
এদিকে মামলার বাদী তার অভিযোগে বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ অনুযায়ী ইসলাম ধর্ম পরিচালিত হয়। ওয়াজ মাহফিলের মধ্যে নাচ-গান সমর্থন করে না ধর্মীয় কোনো গ্রন্থ। ইসলাম ধর্মের যে রীতিনীতি, তা অনুযায়ী আসামির (তাহেরী) কর্মকান্ড মুনাফিকের শামিল। ওয়াজের মধ্যে গান গাওয়া ইসলাম সমর্থন করে না, অথচ আসামি তা করেন। তার বক্তব্যে ইসলাম ধর্মকে ব্যঙ্গ ও অবমাননা করা হয়। ‘বসেন বসেন, বইসা যান’, ‘ঢেলে দেই’ ধরনের বাক্য উচ্চারণ করেন আসামি, যা সম্পূর্ণ অশ্লীল। আসামির এসব কর্মকান্ড ইসলামে বিদআত বলে গণ্য। তিনি ইসলাম ধর্মের অপপ্রচারকারী। তার প্রচারিত ভিডিসমূহে দেখা যায়, তিনি ওয়াজের মধ্যে নাচ-গান করেন, ভক্তদের নিয়ে জিকিরের নামে নাচ-গান করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এ বিষয়ে বাদী গত ৩১ আগস্ট কোতয়ালী থানায় মামলা করতে যান। থানা কর্তৃপক্ষ মামলাটি না নিয়ে আদালতে দায়েরের পরামর্শ দেন। আদালতে মামলাটি দায়ের হলে দুপুর ৩টায় বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে মৌখিক নির্দেশ দেন বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন।


     এই বিভাগের আরো খবর