,

প্রাণ কোম্পানী না প্রাণ হরণ কোম্পানী? ১ মাসে ৪৬ জন হতাহত অলিপুর প্রাণ কোম্পানীতে অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যু ॥ লাশ গোপনের চেষ্টা

সজিব ইসলাম ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার অলিপুর প্রাণ কোম্পানীর ভেতরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এলাকায় কাজ করতে গিয়ে ট্রাক্টর চাপায় এক শ্রমিক নিহত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেল ৫টায় এ ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, গত ১ মাসে বিভিন্ন কারণে ওই কোম্পানীতে পরপর কয়েকটি ছাদ ধ্বস, বিদ্যুতপৃষ্ট, খাবার খেয়ে, অগ্নিকান্ডসহ কোম্পানীর কাজে নিয়োজিত গাড়ি চাপাসহ বিভিন্ন ঘটনায় প্রায় অর্ধ শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। প্রাণ-কোম্পানীর ভেতরে এমন দূর্ঘটনা নিয়ে সংবাদপত্রে একাধিক খবর প্রকাশিত হলেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। নেয়া হয়নি শ্রমিকদের নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা। বরং একের পর এক ওই কোম্পানীতে দ্বিগুন হারে দূর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। শ্রমিক আহত কিংবা নিহতের কোন খবর সাংবাদিকদের নিকট যাতে না পৌছে সেজন্য শ্রমিকদেরকে এক প্রকার জিম্মি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রমিকদেরকে চাকুরীচ্যুত করার হুমকিও দেয়া হয়। এই ভয়ে অনেক শ্রমিক কোম্পানীর ভেতরে ঘটে যাওয়া সমস্যাসহ বিভিন্ন দূর্ঘটনার কথা চেপে যাচ্ছে। পরপর কয়েকটি দূর্ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্থানীয় বাসিন্দাসহ জনমনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এটি প্রাণ কোম্পানী নাকি প্রাণ হরণ কোম্পানী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রবিবার ওই সময় প্রাণ কোম্পানীর ভেতরে কাজ করার সময় কোম্পানীর কাজে নিয়োজিত রিয়াজ এন্টার প্রাইজ পরিবহন নামে বালু বোঝাই একটি ট্রাক্টর ওই শ্রমিককে চাপা দেয়। শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে প্রাণ কোম্পানীর ভেতরে হসপিটালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কর্তৃপক্ষ লাশ গোপন করার চেষ্টা করলে, শ্রমিকদের তোপের মুখে লাশ হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে লাশ হাসপাতালে রেখে শ্রমিকরা পালিয়ে যেতে চাইলে কয়েকজন সাংবাদিকের হস্তক্ষেপে লাশ বহনকারী শ্রমিক ইন্তাজ আলী (৩৫) সহ কয়েকজনকে হাসপাতালে লাশের পাশে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। নিহত শ্রমিকের বাড়ি চট্টগ্রাম উপজেলার ফটিকছড়ি গ্রামের। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত শ্রমিকের নাম পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ওই ট্রাক্টর চালককে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায়, শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি ইয়াসিনুল হক প্রথমে আহত হওয়ার খবর জানালেও পরে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এব্যাপারে অলিপুর প্রাণকোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার মঞ্জুরুল হুদার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিহত শ্রমিক চট্টগ্রাম থেকে কোম্পানীর মালামাল নিয়ে অলিপুর এসেছিল। সে ওই ট্রাকের হেলপার বলে তিনি জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর