,

নবীগঞ্জে স্ত্রীর মামলায় বিয়ে পাগল স্বামী পলাতক

সংবাদদাতা ॥ সহজ সরল নারীদের কৌশলের প্রেমের সর্ম্পক তৈরী করে বিয়ে করাই নবীগঞ্জের বিয়ে পাগল শামীমের নেশা। শামীম পূর্বের ৩টি বিয়ে গোপন রেখে ৪র্থ প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলে আছমা নামের এক মহিলার সাথে। মামলার বিবরণে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের দেওতৈল গ্রামের সাজন মিয়ার পুত্র সিএনজি চালক শামীম মিয়া (৩০)। সে ইতিমধ্যে ৩টি বিয়ে গোপন রেখে প্রায় ৩ বছর পূর্বে আত্মীয়তার সুবাদে একই উপজেলার সালামতপুর এলাকার আওলাদ মিয়ার কন্যা আছমা বেগমকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী করে পালিয়ে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারা স্বামী স্ত্রী নবীগঞ্জ এলাকার সালামতপুর মারিয়া ম্যানশনে ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করতো। এর মধ্যে হঠাৎ করে প্রায় ৬ মাস পূর্বে তাদের সংসারে নেমে আসলো কাল বৈশাখী ঝড়। এতে ভবিষ্যৎ জীবন চিন্তা করে তার স্ত্রী পিত্রালয় থেকে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যৌতুক এনে দিলেও শামীম ক্লান্ত হয়নি। অবশেষে একটি সিএনজি অটোরিক্সা ক্রয় করার জন্য ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে তার স্ত্রী আছমার কাছে। এতে স্ত্রী অপরাগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় নানান ধরনের অমানুষিক নির্যাতন। তার স্ত্রী বলে আমার বাবা গরীব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাব। এতো টাকা আমার পক্ষে এনে দেয়া সম্ভব নয়। এ সময় তার স্বামী উত্তেজিত হয়ে চুলের মুটি ধরে লাটি দ্বারা মারপিট সারা শরীরে এলোপাতারি বাইরাইয়া লিলাফুলা জখম করে। এ সময় তার সুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে অল্পের জন্য প্রাণ রক্ষা পায় স্ত্রী আছমা। তখন শামীম লোকজনের সামনে বলে ৩ লক্ষ টাকা না দিলে আমি আরেকটি বিয়ে করবো বলে হুমকি দিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। অজ্ঞান অবস্থায় আছমাকে উপস্থিত লোকজন নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে আছমা কিছুটা সুস্থ্য হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। এতে আপোষের প্রস্তাব হয়। পরে আপোষ মীমাংসা শামীম না মানায় হবিগঞ্জ বিজ্ঞ বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ দায়রা জজ আদালতে গত ৬ মে ২০১৯ইং একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার খবর শুনে যৌতুক লোভী স্বামী শামীম আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গত ১৭ মে ২০১৯ইং শুক্রবার আছমা তার এক আত্মীয় দীঘলবাক ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি বিকেলে সিএনজি যোগে যাওয়ার পথিমধ্যে ঢাকা-সিলেট মহা সড়কের আউশকান্দি শহীদ কিবরিয়া চত্ত্বরে আসা মাত্রই দেখতে পায় আছমাকে শামীম। দেখা মাত্রই সন্ত্রাসী কায়দায় দিবালোকে সিএনজি গাড়ি থেকে টেনে হেছড়ে বের করে প্রকাশ্যে তার হাতে থাকা একটি রুইল দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করতে চাইলে আছমা তার হাত দিয়ে প্রতিরোধ করলে আছমার মূখে পড়ে ১টি দাত ভেঙ্গে যায় এবং অজ্ঞান হয়ে পড়লে আছমার সাথে থাকা দামী একটি মোবাইল ও নগদ টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তার হাত থেকে উদ্ধার করে আছমাকে নবীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। মূখের মধ্যে প্রায় ৯টি সেলাই রয়েছে এছাড়া সারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে। এছাড়াও আছমা বেগম বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন বলে জানা গেছে। নির্যাতিত মহিলা কান্না জড়িত কন্ঠে আছমা বেগম এ প্রতিনিধিকে জানান বিয়ের প্রায় ২ বছর পর শামীম একটি মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার কথা বললে কয়েক দিন পর একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করে দেই। এর কিছুদিন পর মোটরসাইকেলটি ভাল নয় বলে বিক্রয় করে দেয়। পরে আবার আরেকটি সাইকেল ক্রয়ের কথা বললে তাকে পূণরায় আরেকটি কিনে দেই। সেই সাইকেলটিও কিছুদিন পর বিক্রয় করে দেয়। পরে আবার মাস খানেক পরে বলে এখন তাকে নতুন সাইকেল ক্রয় করে দিতে হবে। পরে নবীগঞ্জ হাসিখুশি থেকে একটি নতুন রানার ওয়ালটন মোটরসাইল ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে দেই। কিন্তু শামীম একে একে পুরাতন ২টি মোটরসাইকেল বিক্রয় করে দিনারপুর এলাকায় ও নতুন মোটরসাইকেলটি বিক্রয় করে মাত্র ৬০ হাজার টাকায়। সে আরো জানায়, তাকে মারধর করে বাসায় থাকা নগদ টাকা, স্বর্নালংকার, মোবাইল সহ প্রায় ৫/৬ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করি এরই প্রেক্ষিতে আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছে এবং সে পলাতক রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর