,

নবীগঞ্জে নদী দখলকারীদের তালিকা শীগ্রই শুরু হবে উচ্ছেদ অভিযান

অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে  —ইউএনও তৌহিদ বিন-হাসান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাছে ভাতে বাঙালি আমরা। সময় পেলেই জাল বা বর্শি হাতে নেমে পড়ি নদী বা হাওরে। সব মিলিয়ে আমরা নদী মাতৃক দেশ হিসেবে খ্যাত। কিন্তু বর্তমানে আমাদের নদী ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলতে বসেছি। কিছু কিছু নদীর নকশা ম্যাপে থাকলেও সরেজমিনে দেখা যায় এর উল্টো। বর্তমান সরকারের মহতি উদ্যোগ নদী উদ্ধার। দখলদার ও ভূমিখেকোদের হাত থেকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নদীগুলোকে উদ্ধার করতে সরকারের নির্দেশে অভিযানে নেমেছেন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় হবিগঞ্জ পৌর শহরে পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইডে নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা, শাখা বরাক, কুশিয়ারা, ডেবনা নদীর চর দখলকারীদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী দখলকারীরা নদীতে গৃহ, টিনের ঘর, আধা পাকা ঘর, কাঁচা বাড়ী, বাড়ী, পাকা গৃহ, ২ তলা পাকা গৃহ, দালান গৃহ, পাকা ভিটা তৈরী করেছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তালিকাভুক্তরা হলেন- কুশিয়ারা নদী: উপজেলার শেরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের পুত্র তফজ্জল হক, আছমত মিয়ার পুত্র তকদির মিয়া, আব্দুল গণির পুত্র ধলাই মিয়া, হুছন আলী পিতা অজ্ঞাত, শাহিদ মিয়ার পুত্র ওলিউর রহমান, মৃত ফয়েজ উদ্দিনের পুত্র লুৎফুর রহমান, মৃত আব্দুর মতিনের পুত্র আজিজুর হক, মৃত শুকুর মিয়ার পুত্র মনির মিয়া। ডেবনা নদী: উপজেলার তাহিরপুর গ্রামের মোঃ আলফাজ মিয়ার পুত্র মোঃ আব্দুর হাই, হাজী ওয়াছিরুর রহমানের পুত্র মোঃ রফিক মিয়া, এলাইছ মিয়ার পুত্র মোঃ মফিজ মিয়া, আব্দুল জলিলের পুত্র দবির মিয়া, এলাইচ মিয়ার পুত্র মোঃ জালাল মিয়া, মোঃ বাদশা মিয়ার পুত্র ফারুক মিয়া, মোঃ লুদু মিয়ার পুত্র মোঃ কামরুল মিয়া, মোঃ আহাদ মিয়ার পুত্র তারেক মিয়া, মৃত মোঃ সুন্দর আলীর পুত্র মোঃ মকদ্দুছ মিয়া, ফারুক মিয়ার পুত্র খালেদ আহমেদ চৌধুরী, হাজী বাদশা মিয়ার পুত্র সহিত মিয়া লন্ডনী, মৃত সমছু মিয়ার পুত্র আজির উদ্দিন, ঘোলডুবা গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র আব্দুল মছব্বির, সাদুল্লাপুর গ্রামের আতিক উল্লার পুত্র জিল্লুর রহমান জিলু, ওয়াহাব উল্লার পুত্র জিল্লুর রহমান জিলু, কাদমা গ্রামের কনা মিয়ার পুত্র মোঃ জিলু মিয়া, কল্যাণপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র নূর মিয়া, রাইয়াপুর গ্রামের কনা দর্জির পুত্র মোঃ ইলিয়াছ মিয়া ও হরিনগর গ্রামের মৃত মুছলিম উল্লাহর পুত্র মোঃ আঃ ছাবিদ। বিবিয়ানা নদী: উপজেলার হরিনগর গ্রামের মৃত তাগিদ উল্লার পুত্র বাতির মিয়া, মৃত হাছান উল্লার পুত্র মিজান মিয়া, মোঃ রুশন আলীর পুত্র এবর ইসলাম, মৃত শুকুর উল্লার পুত্র আজমান মিয়া, মৃত রয়মান উল্লার রেজাক মিয়া, মৃত রফিক উল্লার পুত্র লেপাছ উল্লা, মৃত ওয়ারিশ উল্লার পুত্র এলাইছ মিয়া, মৃত ছমরু মিয়ার পুত্র আবু তাহের, মৃত সামছু মিয়ার পুুত্র কাশেম মিয়া, মৃত ইসমত উল্লার পুত্র মুজিবুর রহমান, ইছাক মিয়ার পুত্র মোঃ বদরুল, আব্দুল মছব্বিরের পুত্র সোলেমান মিয়া, মৃত আব্দুল আজিদের পুত্র আব্দুল করিম, মৃত শুকুর মোহাম্মদের পুত্র লাল মোহাম্মদ, মৃত আমির উল্লার পুত্র তোরাব উল্লা, মৃত ছুরাব উল্লার পুত্র রানু মিয়া, মোঃ ছনর মিয়ার পুত্র আবুল কালাম, মৃত ইরফান উল্লার পুত্র মোঃ ফারুক মিয়া ও মোঃ ইদ্রিছ, মৃত মদরিছ মিয়ার স্ত্রী সামছুন নেহার, মৃত মহিব উল্লার পুত্র তৈয়ব মিয়া, মৃত তবারক উল্লার পুত্র খালিক মিয়া, মৃত শুকুর মোহাম্মদের স্ত্রী আরজান বিবি, মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র কালাম, মৃত মোবারক উল্লার কন্যা মলিকা বেগম, মৃত সোলেমান মিয়ার কন্যা সেলিনা বেগম, মোঃ ইসলাম উদ্দিনের পুত্র সিরাজুল ইসলাম, আম্বর মিয়ার পুত্র আকবর মিয়া, মৃত আমির উল্লার পুত্র আম্বর মিয়া, মোঃ নূর ইসলামের পুত্র বরহান মিয়া, মৃত আব্দুল হকের পুত্র আলী হোসেন ও সঞ্জব আলী, মৃত মছদ্দর আলীর স্ত্রী সাহেনা বেগম, কাজীরগাঁও গ্রামের শুকুর উল্লার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, বাগাউড়া গ্রামের মৃত কাজী ইছাক আলীর পুত্র ইয়াকুব আলী ও ইউনুছ আলী, ছমেদ উল্লার পুত্র সবজুল হক, নুরুল হক ও সিরাজুল হক, মৃত মতিউর রহমানের পুত্র রবিউল মিয়া, সামারগাঁও গ্রামের আজহার আলীর পুত্র ফজর আলী, কাজিরগাঁও গ্রামের মৃত এরশাদ উল্লার পুত্র নিজাম উদ্দিন, মৃত জবাদ উল্লার পুত্র মছির আলী, মৃত নজিম উল্লার পুত্র স্বপন মিয়া, জহুর আলীর কন্যা হাওয়ারুন বেগম, ছোট ভাকৈর গ্রামের আব্দুল কাশেমের স্ত্রী জলি বেগম, রমজানপুর গ্রামের মৃত আঃ বারিক মিয়ার পুত্র তাহির উদ্দিন, লালাপুর গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের পুত্র নুরুল হক লন্ডনী, তপতীবাগ গ্রামের মৃত হাজী মহেব উল্লার পুত্র হাজী মোঃ সফিক উদ্দিন, প্রজাতপুর গ্রামের মৃত হাজী তেরাফর উল্লার পুত্র খালেদ মিয়া, ইনাতগঞ্জ বাজারের মৃত নুরুল হকের পুত্র মোঃ বদর মিয়া, বাউরকাপন গ্রামের মৃত আক্রম উল্লার পুত্র রবিউল হোসেন, লালপুর গ্রামের সানফর উল্লার পুত্র আঃ অহিদ, লালাপুর গ্রামের মৃত হাজী তাজফর উল্লার পুত্র হাজী হেলিম উদ্দিন। শাখা বরাক নদী: রায়পুর গ্রামের রমিজ উল্লার পুত্র মোঃ মোশাহিদ মিয়া। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ বিন-হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইডে প্রকাশিত তালিকাটি দেখেছি। জেলায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ক্রমে সকল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। এক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, এ নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় ‘নবীগঞ্জের ডেবনা নদী দখল করে বাড়ি নির্মাণসহ শাখা বরাক নদী ভূমি খেকোদের দখলে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসির নিকট ব্যাখা চেয়েছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট’। হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ কাওছার আলম এ আদেশ দেন। আদেশের অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজিনা সারোয়ার ও নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান বরাবর প্রেরণ করা হয়। স্থানীয় পত্রিকার সংবাদ প্রকাশের পর সংবাদটি আদালতের স্ট্রেনো ট্রাইপিষ্ট মোঃ আল আমিন আদালতের নজরে আনলে আদালত এ আদেশ প্রদান করেন। অন্যায় অবৈধভাবে এলাকার এ সকল প্রভাবশালীদের দ্বারা নদীর পাড় ও নদী এবং সরকারি ভুমি দখল ও তাতে পাকা বিল্ডিং নির্মাণে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এদের খুঁটির জোর কোথায়? প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে আদালত বলেন, নদী, জলাশয়, বা উন্মুক্ত স্থান দখল মাঠ, উন্মুক্ত স্থান অধ্যাদেশ, ১৯৭০ এর ৭ (১) অনুযায়ী অপরাধ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর যে অভিযোগটি দেয়া হয়েছে এর দ্বারা ফৌজদারী অপরাধ সংঘটিত হলে উক্ত অপরাধ আমলে নেয়ার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট আমলী আদালতের। এমতাবস্থায় উক্ত অভিযোগের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেই বিষয়ে ২৭/০৩/২০১৭ইং তারিখের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ব্যাখা চাওয়া হয়। একই সাথে উল্লেখিত ঘটনায় কোন নিয়মিত মামলা কিংবা সাধারণ ডায়েরী হয়েছে কি না সেই মর্মে একই তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন আদালত।


     এই বিভাগের আরো খবর