,

স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে আর দেখা হলো না ইউসুফের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে দেখা হলো না আলী মোঃ ইউসুফের। তাদের কাছে পৌঁছানোর আগেই ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনম এ যুবককে হারিয়ে দিশেহারা পুরো পরিবার। শোকে মুহ্যমান এলাকার মানুষ। নিহত ইউসুফ হবিগঞ্জের আনোয়ারপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ হাসান আলীর ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে তিনি মারা যান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭-তে। নিহত ইউসুফের প্রতিবেশী মোঃ জয়নাল মিয়া জানান, কয়েক বছর আগে ইউসুফ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের চিশতিয়া বেগমকে বিয়ে করেন। তার স্ত্রী চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে চাকরি করেন। তাদের দেড় বছর বয়সী একটি সন্তানও রয়েছে। নাম ইশা বেগম। ইউসুফ হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজ থেকে ২০১৫ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এমএ পাস করে লিটল ফাওয়ার কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুল পরিচালনা করছেন। স্কুলটির অধ্যরে দায়িত্বও তিনি পালন করছিলেন। প্রায়ই তিনি স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রামে যাতায়াত করতেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে স্ত্রী ও সন্তানকে আনতে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। পথে ট্রেন দূর্ঘটনায় মারা যান ইউসুফ। তিন ভাই-বোনের মধ্যে ইউসুফ তৃতীয়। ২০১১ সালের জুনে মারা যান তার বাবা। ২০১৭ সালের মার্চে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বড় ভাই মোঃ উসমান গনি। এমএ পাস করে তিনি ধরেছিলেন পরিবারের হাল। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রুবেল চৌধুরী জানান, ইউসুফ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। স্ত্রী চট্টগ্রামে চাকরি করার সুবাদে তিনি প্রায়ই সেখানে যাতায়াত করতেন। স্ত্রী-সন্তানকে খুবই ভালোবাসতেন। তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত ভালো ছেলে ছিলেন ইউসুফ। বাবা ও ভাই না থাকায় তিনিই পরিবারের হাল ধরেছিলেন। লিটল ফাওয়ার কিন্ডারগার্টেন নামে একটি স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার একমাত্র ছোট ভাই আমজাদ আলী পড়ছেন বিএ। তিনিও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনম ব্যক্তিকে হারিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর