,

অপরাধ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে- প্রধানমন্ত্রী

সময় ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দূর্নীতির বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলে দেশের প্রকৃত আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য সুশাসনভিত্তিক প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি করতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তর থেকে অপরাধ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত দূর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। এই অভিযানে রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়াও সরকারি কর্মচারীসহ জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, তিনি তার জীবনটাকে উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। এ দেশের উন্নয়নের জন্য যা যা করার দরকার তিনি তাই করবেন। দেশের মানুষের কল্যাণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর মতো নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করবেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতেই ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব। এ সময় সরকারি ও বিরোধী দলের একাধিক সদস্যের লিখিত ও সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দেন সংসদ নেতা। জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন দূর্নীতিবিরোধী অভিযান অর্থাৎ দূর্নীতির অনুসন্ধান, তদন্ত এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দূর্নীতি দমন কমিশন ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে। সংসদ নেতা বলেন, দূর্নীতির বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত রাখতে দূর্নীতি দমন কমিশনও বদ্ধপরিকর। কারা অভিজাত গাড়ি কিনেছেন, সে সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের কোন কোন ব্যক্তি সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনো খেলেছেন, সে সম্পর্কিত তথ্য পাঠাতে দূর্নীতি দমন কমিশন সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেছে। সব দূর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে। সরকারদলীয় সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, দলমত নির্বিশেষে সব ধরনের অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে দূর্নীতিসহ সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সারাদেশে এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সরকার প্রধান কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ক্যাসিনো ও দূর্নীতির সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সমাজ থেকে সব ধরনের অপরাধ নির্মূলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং ও নানা ধরনের সভা-সেমিনারের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অপরাধ যাতে কেউ করতে না পারে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, এটা ঠিক যে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পেছনে জিয়াউর রহমানের হাত রয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে সমস্যা এবং ‘৭৮ ও ‘৭৯ সালে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেন, আন্দোলন-নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটসহ একটি বিশেষ মহল রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে বিশ্বাস করে। তারা বাংলাদেশে সবসময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে চায়। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় এই নীতিতে তার সরকার বিশ্বাস করে। শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে সরকারের পরিষ্কার অবস্থান হচ্ছে, বাংলাদেশের মাটিতে থেকে এবং এ দেশের মাটি ব্যবহার করে কেউ কোনো দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে পারবে না। সন্ত্রাসী তৎপরতার জন্য বাংলাদেশের মাটি কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।


     এই বিভাগের আরো খবর