,

আলহাজ্ব জি কে গউছের ৪৭ তম জন্ম বার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছের আজ ৪৭ তম জন্ম বার্ষিকী। ১৯৬৮ সালের এই দিনে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব গোলাম মর্তুজা লাল মিয়া ও মাতা আলহাজ্ব মঞ্জিলা বেগম।
১৯৮৪ সালে তিনি এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারী কলেজে। একই কলেজ থেকে তিনি বিএ পাশ করেন। কলেজে ভর্তি হওয়ার পরপরই তার উপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কলেজ শাখার সারারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পিত হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি তখন জি কে গউছের মধ্যে ফুটে উঠে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতিভা। ১৯৮৭ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। একটানা ৫ বছর তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে জি কে গউছ হবিগঞ্জ পৌর যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এবং ৯৬ সালে যুবদলের কেন্দ্রীয় সদস্য নির্বাচিত হন। ভলিষ্ট নেতৃত্বের মাধ্যমে তিনি হবিগঞ্জ জেলায় যুবদলকে সু-সংগঠিত করেন। এরই ফলশ্র“তিতে তিনি ২০০৩ সালে যুবদলের কেন্ত্রীয় সহ-সমবায় সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০০৪ সালে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানের উপস্থিতিতে ঢাকাস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হবিগঞ্জ জেলা, সকল থানা ও পৌর কমিটির সভাপতি/সধারণ সম্পাদকের গোপন ভোটে জি কে গউছ হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে তিনি ২য় বারের মত হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। পরে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর থেকে তিনি বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সফলতার সাথে এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বিএনপি’র বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ৫ বারের অর্থমন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের সাথে ছিল জি কে গউছের অত্যান্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক। ফলে রাজনীতির পাশাপাশি হবিগঞ্জ জেলার উন্নয়নে আলহাজ্ব জি কে গউছ মনোনিবেশ করেন। তিনি হবিগঞ্জ পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পূর্বেই হবিগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেন।
২০০৪ সালে হবিগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জীবনের প্রথম এই নির্বাচনে অংশ নিয়েই তিনি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে হবিগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দীর্ঘ দিনের অবহেলিত এবং পায়জামা শহর হিসেবে খ্যাত হবিগঞ্জ পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভায় রুপান্তর করতে তিনি কাজ শুরু করেন। ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি হবিগঞ্জ শহরের চেহারা পাল্টিয়ে দেন। আলহাজ্ব জি কে গউছের প্রচেষ্টায় শহরের রোড ডিভাইডার স্থাপন, খোয়াই নদীর মাছুলিয়ায় এম সাইফুর রহমান ব্রীজ, শহরের কামড়া পুর থেকে নছরতপুর পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ, নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণ, খোয়াই নদীর উপর জেনারেল এম এ রব ব্রীজ, শাহ এএমএস কিবরিয়া ব্রীজ, শহরের প্রধান সড়কে রোড ডিভাইডার স্থাপন, এম সাইফুর রহমান টাইন হল, বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় পানির ২য় ট্রিটম্যান্ট প্লান স্থাপন, শহরে অসংখ্য ড্রেইন ও রাস্তা নির্মাণ উল্লেখযোগ্য। ফলে হবিগঞ্জ পৌরবাসী এখন উন্নত নাগরিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। পৌরসভায় দায়িত্ব পালনে জি কে গউছ কোন ধর্মীয় গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি। তিনি সকল ধর্মের সেবায় নিজেকে উৎসর্গিত করেছেন।
যার প্রতিদান পৌরবাসী ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারী ব্যালটের মাধ্যমে দিয়েছেন। শত প্রতিকুলতার মধ্যেও বিপুল ভোটে আলহাজ্ব জি কে গউছ ২বার হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে সরকারীভাবে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ফ্রান্স, ইটালী, সুইজারল্যান্ড, বাহরাইন, ওমান, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইন সফর করেন। এসব দেশ সফরকারে তিনি স্থানীয় সরকারের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পর্ক, তাদের উন্নয়মূলক কর্মকান্ড, শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতি, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ নানাবিদ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নিজের সম্মানী ভাতার টাকা কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারের সাহায্যার্থে দান করছেন। এ পর্যন্ত তিনি পৌরসভার তহবিল থেকে ব্যক্তিগত খরচের জন্য কোন অর্থ নেননি। তিনিই একমাত্র পৌরসভার চেয়ারম্যান, দায়িত্ব নেয়ার পর প্রতি বছর পৌরসভার পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা প্রদান, পবিত্র হজ্ব ও ওমরা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, কৃতি ছাত্র ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের সংবর্ধণা প্রদান, বৈশাখী মেলা, বই মেলা, কর মেলা, পিঠা উৎসব, সুন্নতে খৎনা ও গণবিয়ের অনুষ্ঠানের প্রবর্তন করেন। মেয়র জি কে গউছ অত্যান্ত সাহসিকতার সাথে প্রতি বছর সরাসরি প্রশ্নোত্তর বিষয়ক পৌরবাসীর মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এসব ব্যতিক্রম ধর্মী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ফলশ্র“তিতে তিনি ২ বার বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গোল্ড মেডেল অর্জন করেন। মেয়র জি কে গউছ তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভুইয়া ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এর কাছ থেকে এই গোল্ড মেডেল গ্রহন করেন। তিনি মিউনিসিপ্যাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ম্যাব এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এর দায়িত্ব পালন করছেন। আলহাজ্ব জি কে গউছ দৈনিক আজকের হবিগঞ্জ’র সম্পাদক ও প্রকাশক। ২০০৫ সাল থেকে পত্রিকাটি নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে।
ব্যক্তিগত জীবনে আলহাজ্ব জি কে গউছ ১৯৯৩ সালে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এডভোকেট মোঃ আতিক উল্লাহর দ্বিতীয় কন্যা ফারহানা হ্যাপীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক। তার পুত্র মোঃ মাজাহারুল কিবরিয়া পুলক আমেরিকায় একটি ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্সে এবং বড় ছেলে মোঃ মঞ্জুরুল কিবরিয়া প্রিতম লন্ডনের একটি ইউনিভার্সিটির অধীনে বার এট-ল’তে অধ্যায়ন করছেন। তিনি অসংখ্যবার পবিত্র হজ্ব ও ওমরা পালন করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর