,

চোখের পানিতে যক্ষ্মার জীবাণু কীভাবে বুঝবেন?

সময় ডেস্ক ॥ যক্ষ্মার জীবাণু যে কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে তা নয়, এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে। এমনকি চোখেও থাকতে পারে যক্ষ্মার জীবাণু। তবে ফুসফুসে যক্ষ্মা সংক্রমের হার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারি সচেতনতামূলক প্রচারণায় সেটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় বলে তারা জানান। চোখে যক্ষ্মার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন রাজধানীর অন্যতম সেরা চক্ষু চিকিৎসালয় ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মোমিনুল ইসলাম বাঁধন। ইউভেটিস কী? চোখের ভেতরে ৩টা অংশ রয়েছে। সামনের অংশ, মাঝখানের অংশ ও পেছনের অংশ। চোখের সবচেয়ে ইমপর্টেন্ট পার্ট হচ্ছে ভাসকুলার পার্ট। চোখের রক্ত চলাচল যে পার্টটা করে সেটা ভাসকুলার পার্ট বা ইউভিয়া। এই অংশটা যখন ইনফেকশন হয় তখন তাকে বলে ইউভিআইটিস বা চোখের প্রদাহ। এটা শরীরের অন্য জায়গা থেকে রক্তের মাধ্যমে চোখে এসে চোখে ইনফেকশন সৃষ্টি করে। ইস্পাহানী ইসলামীয়া চক্ষু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক, ফ্যাকো, রেটিনা, ইউভিয়া বিশেষজ্ঞ তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় শুনেছি বুকে কফ থাকলে যক্ষ্মা হয়। কিন্তু অনেকেই জানে না যে, চোখের ভেতরে চোখের পানির মধ্যে যক্ষ্মার জীবাণু থাকতে পারে। এর ফলে বারবার চোখে ইনফেকশন হয়। চোখ বারবার লাল হয়ে যায়। যারা শ্রমিক বা বিপুল জনগোষ্ঠী সমৃদ্ধ এলাকায় কাজ করে তাদের মধ্যে এ রোগটা ছড়ায়’। তিনি আরও বলেন, ‘শরীরের ভেতরে রক্তের মাধ্যমে এটা চোখে আসে। এতে রোগীদের চোখ বারবার লাল হয়ে যায়। তখন অনেকে ভাবে যে, চোখ উঠেছে। তখন চোখের ডাক্তারের কাছে গেলে একটা এন্টিবায়েটিক ড্রপ দিয়ে দেয়। যেটা ২/৩ দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যায়। কিন্তু ভাল হলে কী হবে; তাতে দৃষ্টি কিছুটা কমে যাচ্ছে। এটা রোগীরা অনেকসময় বুঝতে পারে না। কারও কারও এক মাসে ১ বার, কারও দুই মাসে ৩-৪ বার তারা আলোর দিকে তাকাতে পারবে না। এতে চোখ ব্যাথা করবে। এটাকে আমার ফটোফেবিয়া বলি আমরা। এতে অনেকসময় চোখ ছোট হয়ে যায়, চোখ নরম হয়ে যায়, অনেক সময় চোখের দৃষ্টি একদম কমে যায়। এতে অল্প বয়সে ছানি পড়ে যায়। এধরনের সিমটম নিয়ে রোগীরা আসে’। তিনি জানান, বাতের ব্যাথার কারণেও চোখে এই ইউভেটিস হতে পারে। শিশুদের ১৬ বছর পর্যন্ত একটা জয়েন্ট পেইন হয়। তাদের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যাথা হয়। এতে ছোটবেলা থেকে বাচ্চাদের চোখ লাল হয়ে যায়। বাবা-মায়েরা ভাবছে এটা এলার্জি থেকে হচ্ছে। কিন্তু এটা বারবার যখন হচ্ছে তখন চোখে ছানি পড়ে যাচ্ছে। ৫ বছরের বাচ্চার চোখে ছানি পড়ে যাচ্ছে। এই জিনিসিগুলো মানুষদের জানাতে হবে। এগুলোর চিকিৎসা আছে। চিকিৎসা করলেই এগুলো ভাল হয়ে যাবে। অনেক সময় যৌনরোগ যেমন সিফিলিস, এইচআইভি রোগ থেকেও চোখের ইনফেকশন হতে পারে বলেও জানান বিশেষজ্ঞ এ চক্ষু চিকিৎসক।


     এই বিভাগের আরো খবর