,

বানিয়াচংয়ে প্রতিবদ্ধীর ভাতা ছিনিয়ে নিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচংয়ে প্রতিবন্ধীর টাকা ছিনিয়ে নিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং উপজেলার বড়বাজার সোনালী ব্যাংক এলাকায় গত মঙ্গলবার বিকালে। এ বিষয়ে ভোক্তভোগী প্রতিবন্ধীর মকসিনা আক্তার গতকাল বুধবার সকালে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকার’র কাছে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক বানিয়াচং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে ডেকে এনে বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করে প্রতিবন্ধীর ভাতা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ প্রদান করেন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালে বানিয়াচং সোনালী ব্যাংক বড়বাজার শাখা থেকে ২৪ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা  তুলেন সাগরদীঘি পাড় এলাকার আঃ সাত্তার এর প্রতিবন্ধী মেয়ে মকসিনা আক্তার। ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকের নীচে আসামাত্র সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজ কর্মী রেজাউল হক রতন ও ৩নং ইউনিয়নের মেম্বার সুমন আখনজী ওই প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে পুরো ২৪ হাজার টাকা ও ভাতার বই ছিনিয়ে নেয়। কিছুক্ষন পরে পুনরায় আবার ১১ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী মকসিনার মা এর কাছে ফেরত দিয়ে অবশিষ্ট ১৩ হাজার টাকা ও ভাতার বই তাদের হাতে রেখে দেয়। গতকাল প্রতিবন্ধী মকসিনা তার মা ও বাবাকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বার্হী অফিসারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান। এ ব্যাপারে প্রতিবন্ধী মকসিনার মা জানান, আমি গত মঙ্গলবার সারাদিন আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে কষ্ট করে ভাতার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে আসার পর সমাজ সেবা অফিসের রতন ও মেম্বার সুমন আখনজী জোর পূর্বক আমার মেয়ের কাছ থেকে টাকা ও প্রতিবন্ধী ভাতার বইটি  নিয়ে যায়। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে ইউএনও’র কাছে তার প্রতিবন্ধী মেয়ের ভাতার টাকা ও বই ফেরত দেয়ার আকুতি জানান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বার্হী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকার’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিবন্ধী মেয়েটি তার বাবাকে সাথে নিয়ে আমার কাছে এসে অভিযোগ দিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সমাজসেবা অফিসের রতন ও ইউপি মেম্বার সুমন আখনজীকে আমার অফিসে তলব করা হয়েছে। ঘটনাটি সত্য প্রমানিত হলে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইউএনও মহোদয় বিষয়টি দেখার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, ইউনিয়ন সমাজকর্মী রেজাউল হক রতন ইতিমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলায় বদলী হয়েছেন, তিনি আমার অফিসের কর্মী নন তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আমার অফিসে এসেছিলেন। ভোক্তভোগী প্রতিবন্ধী মকসিনা আক্তার এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগও আমার কাছে দিয়েছেন। উভয়পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি জানান। উল্লেখ্য, সম্প্রতি জিটুপি পদ্ধতিতে ভাতা ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বানিয়াচং উপজেলায় ভাতাভোগী ১০ ভাগ লোকের কোন অস্তিত্বই খোঁজে পাইনি বানিয়াচং সমাজসেবা অফিস। কে বা কারা এই ভাতাগুলো নিয়েছে শীঘ্রই ব্যাংকের মাধ্যমে তা খোঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সুমন আখনজীর মতামত জানতে চাইলে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


     এই বিভাগের আরো খবর