,

বিপিএল-এ খাবার খেয়ে অসুস্থ বহু সাংবাদিক

সময় ডেস্ক ॥ মাঠে গড়িয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’। তার আগে কোটি টাকা ব্যয়ে আয়োজন হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। আগামী বছর জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) বিশেষ এই আসরের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে শুরু থেকেই যেন হ-য-ব-র-ল অবস্থা! মাঠে ও মাঠের বাইরে চলছে নানা বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা। তবে গতকাল আসে আরো ভয়াবহ সংবাদ। এবারের বিপিএল কভার করতে আসা সংবাদকর্মীদের
দুপুরে ও সন্ধ্যায় যে খাবার দেয়া হয় তা নিয়ে উঠেছে অভিযোগ। জানা গেছে সেই খাবার খেয়ে সংবাদিক ও মিডিয়া বয়সহ প্রায় ২৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল বিসিবির হোয়াটস অ্যাপ মিডিয়া গ্রুপে প্রথম অভিযোগ করেন ডেইলি স্টার অনলাইনের ক্রীড়া সংবাদিক একুশ তাপদ্দার।
তিনি লিখেছেন, ‘বিপিএলে দুপুরে সাংবাদিকদের জন্য যে লাঞ্চ রাখা হয় তা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। বেশ আগে রান্না করে প্যাকেটে থাকা সে খাবার ঠান্ডা। এই খাবার খেয়ে গতকাল আমাদের একজন সহকর্মী অসুস্থ-বোধ করেন। আমরা আরও অনেকেই এ ক’দিন এই খাবার খেয়ে অস্বস্তি বোধ করেছি। আজ তাই আমরা অনেকেই বাইরে গিয়ে খেয়ে এসেছি। ম্যাচ কাভার করতে এসে বাইরে গিয়ে খাওয়া আমাদের পেশাজনিত কারণে একটা সমস্যা। খেলার অনেক কিছু মিস হয়ে যায়। অনুরোধ থাকবে, বিসিবি খাবার দেন ভালো কিন্তু সে খাবার জন্য হয় ফ্রেশ । বেশি কিছু না ভাত, ডিম ডালই দেন তবে তা যেন হয় ফ্রেশ, ধন্যবাদ।’
তার এই পোষ্টের পর ভুক্তভোগী আরো অনেক সংবাদকর্মী বিসিবির দেয়া খাবার নিয়ে অভিযোগ করেন। মাছরাঙা টিভির সাংবাদিক জাহিদ চৌধুরী হোয়াটসঅ্যাপে লিখেছেন, ‘আমার গত রাতে ফুড পয়জনিং শুরু হয়েছে। সারারাত কঠিন সময় কেটেছে। যেমন পাতলা পায়খানা, তেমন বমি। এক পর্যায়ে বাথরুমে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। আজ মাঠে আসার মতো অবস্থায় নাই। যেহেতু অনেকেরই এই সমস্যা হচ্ছে। তাই মেন্যু পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ করছি।’ তার পর ডেইলি স্টারের রামিম তালুকদার, এনটিভির বর্ষণ কবির, হিমু, যমুনা টিভির সালাউদ্দিন সুমন, আলমগীর হোসেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির জহুরুল ইসলাম, ক্রিকফ্রেঞ্জির আবিদ মোহাম্মদসহ বেশ কয়েকজন সংবাদিক সেই খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়ার কথা জানান। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেই খাবার খেয়ে শুধু সংবাদিকই নয় প্রেসবক্সে কাজ করা মিডিয়াকর্মীদেরও অনেকে ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। যার সংখ্যা গতকাল বিকাল পর্যন্ত ২৫ জনে পৌঁছে।
১১ই ডিসেম্বর বিপিএলের প্রথম দিনে অনেক সংবাদকর্মী এই খাবার খেয়ে বিরক্ত হন। তাদের অনেকেই বাড়ি থেকে বা বাইরে থেকে খেয়ে আসেন। এর মধ্যে প্রথম আলোর সাংবাদিক রানা আব্বাস লিখেছেন, ‘প্রথম দিনের পর থেকেই আমি এই খাবার পরিহার করছি। বাসা কিছুটা কাছে হওয়ায় এ দফা বেঁচে গেছি! তবে বিষয়টার স্থায়ী সমাধান হওয়ার দাবি রাখি।’
বিপিএল-এ বেশ কয়েকবছর ধরেই খাবার সরবরাহ করে আসছে নগরীর বাংলামোটরে অবস্থিত সেভেন হিল নামের একটি চাইনিজ রেস্তোরা। এই খাবার নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ থাকলেও নিয়মিতভাবেই তারা খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে একটি বক্সে করে তারা যে খাবার দুপুরের জন্য দেন তা রান্না করা হয় বেশ সকালে। যা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পৌঁছতে অনেটাই নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, খাবারের মানও ভীষণ খারাপ। প্রায় প্রতিদিনই পোলাও, মুরগী ও সালাদ দেয়া হয় তাতে বাজে একটা গন্ধ আসে বলে অভিযোগ করেন সংবাদকর্মীরা। অনেকেই প্রতিদিন পোলাও খেতে চান না।
ব্যবস্থা নিবে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল
বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কর্তা ব্যক্তিরা খাবার খেয়ে সংবাদকর্মীদের অসুস্থার সংবাদ শুনে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এই বিষয়ে গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান শেখ সোহেল দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান হিসেবে খুব গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টা দেখবো। খাবার দেয়ার দায়িত্বটা লজিস্টিক বিভাগের। তাদের সঙ্গে কথা বলবো, কেন এমন হলো তা নিয়ে তদন্তও করবো।’ অন্যদিকে সদস্য সচিব ও বিসিবি পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক বলেন, ‘আমি শুনেছি, বিষয়টি অবশ্যই প্রচন্ড ভাবনার। আমি দ্রুতই খাবার পরিবর্তন করে দেয়ার কথা জানিয়েছি। অবশ্যই আমরা দেখবো কেন এমন হলো আর সামনে যেন এমন না হয়।’


     এই বিভাগের আরো খবর