হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ শহরের নিউফিল্ড সংলগ্ন বাংলাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব শাহ এএমএস কিবরিয়ার নামে নির্মিত ঐতিহ্যবাহী কিবরিয়া পৌর মিলনায়তন অবহেলায় অযত্নে অস্বিত্ব হারা হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। কোটি কোটি টাকার অডিটোরিয়ামের মঞ্চে কে বা কারা তৈরি করেছে ব্যাডমিন্টনের খেলার কোড। একজন দায়িত্বরত গার্ডের কাছে খেলার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, যে পৌর মেয়রের ছোট ভাই এই খেলার কোড বানিয়ে খেলছেন। উক্ত কোডে সারারাত খেলায় সরকারের হাজার হাজার টাকার বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। এই অডিটোরিয়ামটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করায় অকেজো হয়ে পড়েছে ভেতরের নানান মুল্যবান সরঞ্জামাদী ও আসবাবপত্র। ২০০১ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এএমএস কিবরিয়া ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে হবিগঞ্জের একমাত্র মনমোগ্ধকর একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করেন। বেশ কয়েক বছর হলটি সুন্দরভাবে ব্যবহার হলেও গত ৫ বছর ধরে এর কোন দেখবাল করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ধীরে ধীরে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোটি টাকা মুল্যের এসি, সাউন্ড ইন্সট্রোমেন্ট, আলোকবাতি, চেয়ার টেবিলসহ ইত্যাদি সরঞ্জামাদী। প্রবেশ পথের দরজাগুলো উইপোকায় খেয়ে ফেলায় অনায়াসেই যেকেউ ভেতরে প্রবেশ করে মাদক দ্রব্য সেবনসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাউন্ডারীর ভেতরে বিদ্যুৎ-বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পরেই নেমে আসে ভুতুরে পরিবেশ। অন্ধকারে জায়গা হয় এক শ্রেণীর ভাসমান অপরাধীদের। দিনের বেলা পরিবেশটা নিঝুম ও গহীন থাকায় স্কুল-কলেজ গামী যুবক-যুবতিদের আড্ডায় পরিণত হয়। এমনকি সুযোগ বুঝে আসামাজিক কাজেও লিপ্ত হচ্ছে যুবক-যুবতিরা। গতকাল সরেজমিনে অডিটোরিয়ামের ভেতরে মোবাইলের ফ্লাশলাইট জ¦ালিয়ে গিয়ে লক্ষ্য করা গেছে যে, অডিটোরিয়ামের ভেতরের মহামুল্যবান এসিগুলো ঝুলে রয়েছে। চারদিকে মাত্র ৮টি এসি রয়েছে। মঞ্চের দু-পাশে সাউন্ডের জন্য সংরক্ষিত কেভিনে ইনস্টলমেন্ট থাকার কথা হলেও সেখানে তার চিহ্নও নেই। গ্যালারিতে বসার আসনগুলোও অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। চারদিকে অসংখ্য আলোক বাতির জায়গায় মাত্র ১/২টি বাতি আছে তাও অকেজো। মঞ্চে ব্যাডমিন্ট খেলার দু’দিকে বসানো হয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বাতি। তবে জানা গেছে এগুলো দেখবাল করার জন্য নেই কোন কেয়ারটেকার, কিন্তু মাস শেষে ঠিকই বেতন হচ্ছে তার দায়িত্বরত ব্যক্তির। বিলাস বহুল বাথরুমের ফিটিংগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। অনবরত পানি ঝড়ছে বাথরুমগুলোতে। এতে বাথরুম দেখলে মনে হয় এটা ময়লা ফেলার ডাস্টবিন। সরকারের মূল্যবান সম্পদের এভাবে অপচয় হতে থাকলে এক সময় অ¯ি’ত্ব হারা হয়ে যাবে হবিগঞ্জের সভ্যতা। বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত অর্থমন্ত্রী’র নামে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠান অকালে বিনষ্ট হওয়ায় নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের এত মহামূল্যবান স্থানটি অকালে বিনষ্ট হওয়া আসলেই দুঃখজনক। তবে এটি দেখাশুনা করার দায়িত্ব পৌরসভার। পৌর মেয়র মিজানুর রহমান জানান, আমি দায়িত্ব নেবার আগেই অডিটোরিয়ামের বেহলা দশা হয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে সরকারের কাছে বরাদ্দ চেয়েছি। আসলেই সংস্কার করে আবার চালু করা হবে।