,

বখাটের হামলার ঘটনায় নবীগঞ্জ তোলপাড় পরিদর্শন করেছে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যসমেত গ্রামে সোমবার সন্ধ্যায় বখাটের হামলায় কলেজ পড়ুয়া কন্যাসহ পিতা-মাতা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় নবীগঞ্জে তোলপাড় চলছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আত্বগোপনে চলে যায় বখাটে জাইদুল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মতব্বির হোসেন জানান, তাদের একই গ্রামের গফুর মিয়ার পুত্র বখাটে জাইদুল মিয়া তার কলেজ পড়ুয়া কন্যা রহিমাকে প্রতিনিয়ত উত্তক্ত করতো। যে কারণে বাধ্য হয়ে রহিমা কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। ক্ষিপ্ত জাইদুল সোমবার সন্ধ্যায় মতব্বির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে প্রথমে তার কলেজ পড়ুয়া কন্যা রহিমাকে দেশীয় স্টীলের রুইল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। চিৎকার শুনে বাড়িতে থাকা তার পিতা মতব্বির হোসেন ও মাতা জাহানারা বেগম মেয়েকে বাচাঁতে এগিয়ে আসলে তাদেরকেও বেদরক মারপিট শুরু করে হামলাকারী। এতে রহিমাসহ তার পিতা-মাতা গুরুতর আহত হন। হামলাকারী জাইদুল এ সময় রহিমার গলা থেকে জোরপূর্বক একটি স্বর্ণের চেইন ও একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বর্বরোচিত এ হামলার ঘটনার খবর স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশের পর মঙ্গলবার দুপুরে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের এস.আই. এমরান আহমদের নেতৃত্ব একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন মামলা দায়েরের খবর পাওয়া যায়নি।উল্লেখ্য, মতব্বির হোসেন এর কন্যা ইনাতগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী কলেজে যাওয়া আসার সময় রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন ও উত্ত্যক্ত করতো ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্য সমত গ্রামের মৃত গফুর মিয়ার পুত্র সিএনজি অটোরিকশা চালক জাইদুল মিয়া। ঘটনাটি জাইদুলের অভিভাবকদের জানানোর পরেও কোন বিচার পাননি মতব্বির হোসেন। এমনকি বিচার দেয়ায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে জাইদুল। তার ইভটিজিং এর শিকার হয়ে ওই ছাত্রী কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এমনকি ওই ছাত্রীর পিতা মাতা বাড়িতে না থাকার সুযোগে একা পেয়ে ধর্ষনের চেষ্টা চালায় জাইদুল। এ সময় জাইদুল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর বিভিন্ন ছবি মোবাইল ফোনে তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। তার চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে বড় বোন এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রীর পিতা মদব্বির হোসেন বাদী হয়ে জাইদুল হককে আসামী করে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পুলিশ তদন্ত শেষে জাইদুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। মামলাটি আদালতে বিচারিধীন রয়েছে। গতকাল সরেজমিন ঘটনাস্থল মধ্যসমেত গ্রামে গেলে পাওয়া যায় ঘটনার সময় উপস্থিত একটি ঔষধ কোম্পানীর চাকুরীজীবি খোকন আহমেদকে। তিনি জানান, ঘটনার সময় তিনি কাজ শেষে বাড়ি যাবার সময় চিৎকার শুনে এগিয়ে যান এবং দেখতে পান জাইদুল রহিমা ও তার পিতা মাতাকে মারপিট করছে। পরে তিনি জাইদুলকে ফিরিয়ে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের অনেকেই বলেন, জাইদুল একজন বখাটে এবং খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক।


     এই বিভাগের আরো খবর