,

ইজতেমা মাঠে ঠাঁই নেই ফুটপাতে মুসল্লিদের অবস্থান

সময় ডেস্ক ॥ কনকনে শীত আর শৈত্যপ্রবাহ উপেক্ষা করে টঙ্গীতে ইজতেমামুখী মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম বৃহৎ এ ধর্মীয় জমায়েত (৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা) শুরু হয়। যদিও শুক্রবার বাদ ফজর প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ার কাথা ছিল। ইজতেমার মুরুব্বি মাওলানা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা বয়ান শুরু করেন। এর বাংলায় তরজমা করেন হাফেজ মাওলানা জুবায়ের। আর এ বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের বিশ্ব ইজতেমা। তিনি আরও জানান, চাঁদের হিসেবে বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব থেকে অর্থাৎ এদিন সূর্য ডোবার পর থেকেই শুক্রবার গণণা শুরু হয়ে গেছে। তাই তারা এ সময় থেকেই আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমা শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠ ত্যাগ করেননি। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে পুরো ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ইজতেমা ময়দানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লিরা ময়দানের পাশের রাস্তা ও ফুটপাতে পলিথিনে সামিয়ানা টানিয়ে তার নিচেই অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া কামারপাড়া সড়কসহ ইজতেমার সব সড়কে ফুটপাতে মুসল্লিরা বিছানা পেতে বসে পড়েন। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ইজতেমামুখী মানুষেরে স্রোত অব্যাহত ছিল।
ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা: গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীতে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাঁচ সেক্টরে ভাগ করে পাঁচ স্তুরের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ইজতেমার ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি স্তর বা সেক্টরের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকেই দুই পর্বের ইজতেমায় পুলিশ, র‌্যাব, সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ আট হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। ইজতেমা মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চার শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের করা হয়েছে। ২০টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে ক্যামেরাগুলো। এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, বাইনোকুলার, নাইটভিশন গগলস, পুলিশ ও র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, নৌটহল, হেলিকপ্টার টহল, মুসল্লিদের খিত্তাওয়ারী মোটরসাইকেল টহল ও বিশেষ নিরাপত্তা যন্ত্র আর্চওয়ে।
প্রতিটি খিত্তায় বিশেষ টুপি পরিহিত ও সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান করবেন। তারা কোনো প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতার ইঙ্গিত পেলে বিশেষ সিগন্যালের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক অবহিত করবেন। এছাড়াও পুলিশের পক্ষ থেকে ১৫টি ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে ১০টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, ১১টি চেকপোস্ট, হেলিকপ্টার ওঠানামার জন্য দুটি পয়েন্টে হ্যালিপ্যাড ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য একটি প্রধান কন্ট্রোল রুম ও আটটি সাব কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও তারা ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের কোথায় কী হচ্ছে না হচ্ছে প্রত্যক্ষ করার জন্য ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের স্ক্রিনে সার্বক্ষণিক নজর রাখবেন।
রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১৭ জানুয়ারি।


     এই বিভাগের আরো খবর