,

অ্যাপাচি হেলিকপ্টার কিনতে আগ্রহ বাংলাদেশের

সময় ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে অ্যাপাচি যুদ্ধ হেলিকপ্টার কেনার ব্যাপারে বাংলাদেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে বোয়িংয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এএইচ-সিক্সফোরই মডেলের হেলিকপ্টার কেনার আগ্রহ ঢাকার। তুলনামূলক কম দাম ও সক্ষমতার বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য এটি উপযুক্ত। খবর ডিফেন্স নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস গ্রুপের (কুবা)। এর আগে নিক্কেই এশিয়ান রিভিউয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাপা হয়। বোয়িংয়ের ইন্টারন্যাশনাল ভার্টিকাল লিফট সেলসের পরিচালক টেরি জ্যামিসন বলেছেন, এএইচ-সিক্সফোরই অ্যাপাচি গার্ডিয়ান অ্যাটাক হেলিকপ্টারের ব্যাপারে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বোয়িংয়ের যোগাযোগ হয়েছে। এজন্য ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ করেছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। নিক্কেই এশিয়ান রিভিউয়ের প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করে টেরি জ্যামিসন বলেন, বাংলাদেশ সস্তা ও সক্ষমতার ভিত্তিতে অ্যাপাচি কিনতে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। সংক্ষিপ্ত তালিকা বা কর্মসূচি সম্পর্কে মন্তব্য না করতে চেয়ে বোয়িংয়ে আন্তর্জাতিক বিক্রয় যোগাযোগের মুখপাত্র মার্সিয়া কস্টলি বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মাধ্যমে বোয়িংয়ের কাছ থেকে এএইচ-সিক্সফোরই কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে এবং বোয়িংও বিক্রয়ে আগ্রহী। তিনি বলেন, এটি মূলত সরকারের সঙ্গে সরকারের বৈদেশিক সামরিক ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় এগিয়ে গেলে বোয়িং সহায়তা করতে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সামরিক বিক্রয় (এফএমএস) কর্মসূচির আওতায় দেশটি বিদেশি বিভিন্ন সরকারের কাছে অস্ত্র, প্রতিরক্ষাসামগ্রী ও সেবা এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এ প্রক্রিয়ার জন্য আগে কংগ্রেসের অনুমতি নিতে হয়। মার্সিয়া কস্টলি বলেন, এখনও উচ্চপর্যায়ে আলোচনা যায়নি। অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের মূল্য ও কতটি কিনতে বাংলাদেশ আগ্রহ দেখিয়েছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে চাননি। অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের জন্য বাংলাদেশের এ ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ করার খবর প্রথম প্রকাশ করেছিল জেনস ডিফেন্স উইকলি সাময়িকীর এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়- ২০১৯ সালে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ক্রয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক আলোচনা শুরু এবং দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তিগুলো হল- অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্ট (এসিএসএ) এবং জেনারেল সিকিউরিটি অব ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিএসএমআইএ)। এসিএসএ মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো বা জোট মিত্র দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। এ চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর খাবার, জ্বালানি, পরিবহন, গুলি ও সরঞ্জাম বিনিময় করে থাকে। তবে চুক্তিতে কোনো অবস্থাতেই যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেয় না। ভারত ও শ্রীলংকাসহ ১০০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে এ চুক্তি আছে যুক্তরাষ্ট্রের। আর জিএসএমআইএ এমন এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, যেটির আওতায় আরও বৃহৎ পরিসরে সহযোগিতা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের অনুমতি দেয়। চুক্তি দুটি চূড়ান্ত হতে ২ থেকে ৪ বছর সময় লেগে যায়। তবে এ সময়ের মধ্যে সামরিক সরঞ্জাম কেনার ব্যাপারে আলোচনা চালানো যায়। বর্তমানে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করে চীনের কাছ থেকে। তবে এ উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ক আরও জোরদার হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর