,

করোনা ভাইরাস: চীন থেকে ফিরলেন ৩১৬ বাংলাদেশি

সময় ডেস্ক ॥ করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে চীনের উহান নগরীতে আটকা পড়েন বেশকিছু বাংলাদেশি। তাদের মধ্য থেকে ৩১৬ জনকে নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করেছে ‘রেসকিউ ফেরি ফ্লাইট’ বিজি-৭০০২ ফ্লাইট। আজ সকাল ১১টা ৫৪ মিনিটে বিমানের এই বিশেষ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানের এই বিশেষ ফ্লাইট শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উহানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম
তৌহিদ-উল আহসান মিডিয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবরে বলা হয়, উহানের তিয়ানহে বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের নিয়ে রাত ২টার দিকে ফ্লাইটটি ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করতে বিলম্ব হয় ফ্লাইটটির। উহানের তিয়ানহি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় শনিবার ভোর পৌনে ৬টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৮টায়) বাংলাদেশিদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দেয়। এতে যাত্রী ছিলেন ৩১৬ জন। এর মধ্যে ৩০১ জন প্রাপ্তবয়স্ক, ১২ জন শিশু এবং তিনজন নবজাতক। এছাড়া উড়োজাহাজটিতে চারজন ডাক্তার, পাইলট ছাড়াও ১১ জন কেবিন ক্রু, তিনজন ককপিট ক্রু, দুজন প্রকৌশলী ছিলেন বলে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। এসব যাত্রীকে প্রথমে কোয়ারেন্টাইনে (সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা) রাখার জন্য আশকোনা হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে তাদেরকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। মৃতের সংখ্যা ২৫৯, চীন থেকে আগতদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা:
আক্রান্তের দিক দিয়ে সার্স ভাইরাস মহামারীকেও ছাড়িয়ে গেছে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল কমপক্ষে ২৪টি দেশে। প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার আট মাসের মধ্যে এতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮১০০ মানুষ। পক্ষান্তরে করোনা ভাইরাস দেখা দেয় ডিসেম্বরে। এরপর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এর বেশির ভাগই চীনা নাগরিক। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে চীনের বাইরে ২২টি দেশে। এসব দেশে আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৯। এরা সবাই চীনা নাগরিক। অন্যদিকে সার্স ভাইরাসে মারা গিয়েছিলেন সব মিলিয়ে ৭৭৪ জন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরো বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার করোনা ভাইরাস মহামারী বিষয়ে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রও একই রকম জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। বিদেশি যেসব নাগরিক চীন ভ্রমণ করেছেন গত দু’সপ্তাহে, তাদের চীনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব হংকং থেকে বলা হয়েছে, সরকারিভাবে আক্রান্তের যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে। গাণিতিক মডেলের ওপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শুধু চীনের উহানেই আক্রান্তের সংখ্যা হতে পারে কমপক্ষে ৭৫ হাজার। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে উহান থেকে বিদেশি নাগরিকদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। দু’সপ্তাহের জন্য উদ্ধারকৃত নিজ নিজ নাগরিকদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার কথা বলেছে বৃটেন, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও নিউজিল্যান্ড। এক্ষেত্রে মূল ভূখন্ড থেকে ২০০০ কিলোমিটার দূরে ক্রিসমাস আইল্যান্ডে নিজেদের নাগরিকদের রাখার কথা বলেছে অস্ট্রেলিয়া। এই দ্বীপটিতে বন্দি রাখা হয় অবৈধ অভিবাসীদের।
চীন থেকে যাতে কোনো ভ্রমণকারী প্রবেশ করতে না পারেন সে জন্য নিজেদের সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে সিঙ্গাপুর। রোমে চীনা দুই পর্যটকের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার পর ইতালিতে ৬ মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ২রা মার্চ ‘পর্যন্ত চীন থেকে সব রকম মানুষের প্রবেশ স্থগিত করেছে মঙ্গোলিয়া। এ দেশটি চীনে তাদের নাগরিকদের ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। চীনের সঙ্গে ৪৩০০ কিলোমিটার সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। চীনের সঙ্গে সব রকম ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। চীনে এবং চীন থেকে সব রকম ফ্লাইট স্থগিত করেছে উত্তর কোরিয়া। ভ্রমণে নতুন সতর্কতা ঘোষণা করেছে গুয়াতেমালা।


     এই বিভাগের আরো খবর