,

সীমান্তে দেড় মাসে ১১ বাংলাদেশি নিহত: বিজিবি

সময় ডেস্ক ॥ গত দেড় মাসে সীমান্তে ১১ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বাহিনীর পরিচালক (পরিকল্পনা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, গত বছরের ২৫শে ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১১ জন বাংলাদেশি সীমান্তে নিহত হয়েছে। এ ধরনের মৃত্যু যাতে না হয় সেজন্য বিজিবির পক্ষ থেকে যে রকম পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেটি নেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে বিজিবি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির এই পরিচালক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যাকা-ে যেটা বোঝা যায় যে, সীমান্তের সন্নিকটে, সেটি কিন্তু না। অনেক সময় দেখা যায় ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে ৫ থেকে ১৫ কিলোমিটারের ভেতরেও হয়। দেখা যায় কোনো নিরীহ মানুষ ভারতের সীমান্তে ঢুকে যাচ্ছে। হয়তো লোকটি গরু আনার জন্য যায়। তাই অনেক সময় দেখা যায় আমাদের নির্দিষ্ট এলাকার বাইরেও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা দেখেছি যারা গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের ক্ষেত্রেই এটি বেশি ঘটে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির মধ্যে এ বিষয়ে তথ্য আদান প্রদান হচ্ছে। মহাপরিচালক পর্যায়ের যে সম্মেলন হয়েছে সেখানেও সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আবারও আলাপ আলোচনা করছি। বিজিবি পরিচালক বলেন, সীমান্ত হত্যাকা-ের ঘটনায় আমরা নিয়মিত প্রতিবাদ জানাই। ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়া আমরা আমাদের সীমান্ত এলাকার মানুষদের সচেতন করছি। যাতে ভুল করে বা অন্য কোনও কারণে তারা যেন সীমান্ত এলাকা অতিক্রম না করে। এছাড়া আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় যেসব স্পর্শকাতর জায়গা রয়েছে সেসব জায়গা চিহ্নিত করে আমরা জনবল বৃদ্ধি করেছি। এছাড়া স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক পর্যায়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন, সীমান্তে চোরাকারবারির অনেকেই চিহ্নিত আবার অনেকেই চিহ্নিত না। তবে সীমান্তে যারাই এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের আমরা নজরদারিতে রেখেছি। তারা যখনই কোনো কিছু পাচারের চেষ্টা করে তখনই আমরা তাদের গ্রেফতার করছি। সেটা গণমাধ্যমেও জানানো হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন সৈয়দ আশিকুর রহমান। তিনি জানান, গত জানুয়ারিতে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ৯৭ কোটি ১৮ লাখ ৩ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে বিজিবি। এছাড়া সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭২ জন চোরাচালানিকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৮ বাংলাদেশি নাগরিক ও ২ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জব্দ করা চোরাচালান পণ্য ও মাদকের মধ্যে রয়েছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৬৮৫ পিস ইয়াবা। ৪০ হাজার ৭৪১ বোতল ফেন্সিডিলসহ মদ, গাঁজা, হেরোইন ও নেশা জাতীয় ইনজেকশন। একই সময়ে সাড়ে ১৪ কেজি সোনাম ইমিটেশন গহনা, কসমেটিত, পোশাক, থান কাপড়, কষ্টি পাথরের মূতি, কাঠ, ২১টি ট্র্যাক, ৬টি পিকআপ, ১টি প্রাইভেট কার, ১১টি অটোরিকশা ও ৫৪টি মটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এছাড়া গত মাসে ২টি পিস্তল, ৪টি বন্দুক ও ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর