,

থাইল্যান্ডের জঙ্গল থেকে আরো ১১৭

জন উদ্ধার ॥ অধিকাংশই বাংলাদেশীসময় ডেস্ক ॥ মানব পাচারের শিকার হয়ে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের শংখলা প্রদেশের রাত্তাফুম জেলা থেকে আরো ১১৭ জনকে উদ্ধার করার পর দেখা গেছে তাদের অধিকাংশ বাংলাদেশি। দেশটির প্রাদেশিক ডেপুটি গভর্নর একারাত সিসেন বিষয়টি ব্যাংকক পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন। মালয়েশিয়া সীমান্তবর্তী ওই জঙ্গলে গত সপ্তাহে ৩৩ জনের কবর পাওয়ার পর মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের নির্দেশ দেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চ্যান-ওচা। সর্বশেষ যে ১১৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, এর মধ্যে ২৬ জন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা আর বাকি ৯১ জন বাংলাদেশি। বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে সাগর পথে মালয়েশিয়ার মানব পাচারের বেশ কয়েকটি ঘটনা ধরা পড়েছে এর আগে। বলা হচ্ছে, এদেরও সেভাবে পাচার করা হচ্ছিল। পাচারের শিকারদের মালয়েশিয়া সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের ওই জঙ্গলে রাখা হত। যাদের মধ্যে নির্যাতনে অনেকের মৃত্যু ঘটে। এখন থাই কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখছে উদ্ধারকৃত ১১৭ জন আসলে পাচারের শিকার, না কি নিজেরাই এসেছে। থাই ডেপুটি গভর্নর বলেছেন, যাচাই করে যদি তারা মানব পাচারের শিকার বলে প্রমাণ মেলে, তবে তাদের দেশের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেফাজতে দেওয়া হবে। এরপর থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে একটা উদ্যোগের কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ডেপুটি গভর্নর একারাত সিসেন বলেন, তবে এই ব্যক্তিদের কেউ যদি নিজ উদ্যোগে এসেছেন বলে প্রমাণ মেলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তার মানে এধরনের ব্যক্তিদের কারাদ- ভোগ করতে হবে, হতে হবে বিচারের মুখোমুখী। উদ্ধারকৃত ১১৭ জনকে রাত্তাফুম জেলায় যেখানে রাখা হয়েছে, সেখানে ঘুরে এসে স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, ওদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। সেখানে তাদের খাবার দেওয়া হচ্ছে। নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে দাবি করে বুসরি সালাম নামে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর বলেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি নৌকায় উঠেছিলেন তারাসহ অনেকে। দুই সপ্তাহ ধরে তারা থাইল্যান্ডের জঙ্গলে ছিলেন। সালামের দাবি হচ্ছে, আমার ভাই মালয়েশিয়ায় থাকে, আমি সেখানে যেতে চাই। থাইল্যান্ডের ওই জঙ্গল থেকে এর আগে আনুজার নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধারের পর তিনি নিজেকে বাংলাদেশি দাবি করেছিলেন। সে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকত্ব যাচাইয়ের চেষ্টা করছে। মানব পাচারের বিষয়টি থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস নজরে রাখছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া মুনা তাসনিম বলেছেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানা না থাকলেও আগামী সোমবার তা থাই সরকারের কাছ থেকে জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে থাই কর্তৃপক্ষ এধরনের অভিযান শেষ করার পর সরকারের তরফ থেকে এ ব্যাপারে থাই সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করা সম্ভব হবে। এদিকে এপর্যন্ত মানব পাচারকারীরা অন্তত ৫’শ অভিবাসিকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্র থাই সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেয়ার পর থাই কর্তৃপক্ষ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরু করে।


     এই বিভাগের আরো খবর