,

বাংলাদেশে প্রতি বর্গ কি.মি’তে জন বসতি ১ হাজার ৭৪ জন বিশ্বের সব মানুষ কানাডায় গিয়ে বাস করলে বসতি হবে প্রতি বর্গ কি.মিতে ৭১৭ জন। বাংলাদেশের একজন শ্রমিক কর্মচারী ১ বছরে যা আয় করে উন্নত বিশ্বে একই পেশার লোক ২/৩ দিনের আয়ের সমান।

মোহাম্মদ আলী মমিন ॥ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে মানবেতর জীবনযাপন করে, বেশির ভাগ শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। বাংলাদেশের আয়তন ১লক্ষ ৪৭ হাজার ৫ শত ৭০ বর্গ কিলোমিটার, জনসংখ্যা ১৫ কোটি ৮৫ লক্ষ, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭ শত ১৩ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২,১১,৬১৪/- টাকা। সুইজারল্যান্ড এর আয়তন ৪১ হাজার ২ শত ৯০ বর্গ কি.মি, লোক সংখ্যা ৮২ লক্ষ, মাথাপিছু আয় ৫৩ হাজার ৭ শত ৬২ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৪১,৯৩,৪৩৬/- টাকা। জাপান এর আয়তন ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৮ শত ৭৩ বর্গ কি.মি., লোক সংখ্যা ১২ কোটি ৭০ লক্ষ, মাথাপিছু আয় ৩৬ হাজার ৭ শত ৪৭ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২৮,৬৬,২৬৬/- টাকা। বাংলাদেশের একজন শ্রমিক-কর্মচারী ৩৬৫ দিনে অর্থাৎ ১ বছরে যা আয় করে তা উন্নত বিশ্বে একই পেশায় কর্মরত একজন শ্রমিক-কর্মচারীর ২/৩ দিনের আয়ের সমান। বাংলাদেশ পৃথিবীর দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর একটি। বাংলাদেশ এর তুলনায় আয়তনে যুক্তরাষ্ট্র ৬৫ গুণ বড় অর্থাৎ ৯৬,২৯,০৯১ বর্গ কি.মি, মাথাপিছু আয় ৩২,৩০৮ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২৫,২০,০২৪/- টাকা, লোকসংখ্যা ৩২ কোটি ৫০ লক্ষ, প্রতি বর্গ কি.মি বসতি ৩৪ জন, কানাডা ৭০ গুণ বড় অর্থাৎ ৯৯,৭৬,১৪০ বর্গ কি.মি, লোকসংখ্যা ৩ কোটি ৫৫ লক্ষ, মাথাপিছু আয় ৪১,৮৮৭ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৩২,৬৭,১৭৬/- টাকা, প্রতি বর্গ কি.মি বসতি সাড়ে ৩ জন, অস্ট্রেলিয়া ৫৪ গুণ বড় অর্থাৎ ৭৬,৮৬,৮৫০ বর্গ কি.মি., মাথাপিছু আয় ৪১,৫২৪ মার্কিন ডলার, লোকসংখ্যা ২ কোটি ৩৬ লক্ষ, প্রতি কি.মি বসতি ৩ জন। বাংলাদেশ-এ প্রতি বর্গ কি.মি. বসতি ১০৭৪ জন। পৃথিবীর জনসংখ্যা ৭শত ১৬ কোটি ২ লক্ষ। বিশ্বের সব মানুষ কানাডায় গিয়ে বাস করলে সেখানে প্রতি বর্গ কি.মি. বসতি হবে ৭১৭ জন, যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বাস করলে হবে ৭১১ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ৯১৬ জন। বিশ্বে প্রতিদিন প্রতি ৬ জনে ১ জন মানুষ না খেয়ে ঘুমোতে যায়, ৩ জনে ১জন দারিদ্রসীমার নিচে মানবেতর জীবনযাপন করে। বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা আরও ভয়াবহ। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রাশিয়াসহ অন্যত্র কোটি কোটি হেক্টর ভূমি অব্যবহৃত পড়ে আছে। এসব ভূমি ব্যবহার করে কোটি কোটি অভুক্ত মানুষের দারিদ্র মুক্তি সম্ভব। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানব সম্পদ রয়েছে। প্রযুক্তিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানব সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে সমৃধনীবিশ্ব ক্ষতিকর গ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে পৃথিবীর পরিবেশের ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। ধনী ভোগবাদী বিশ্ব সৃষ্ট গ্রীণ হাউজ এফেক্টের কারণে ওজোন স্তর ফুটো হয়ে সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করছে। ধরিত্রী উত্তপ্ত হচ্ছে। মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্র স্থর স্ফীত হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশসহ নিম্নাঞ্চল সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যাবে। জনবসতি বিরল দেশসমুহে দরিদ্র বিশ্বের শ্রমশক্তি ব্যবহার করে বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করে পরিবেশ উন্নত করা দরকার। বর্তমান প্রচলিত মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে পুঁজি, প্রযুক্তি, কাঁচামালসহ পৃথিবীর এক দেশের পণ্য অন্য দেশে অবাধে প্রবেশ করছে। শ্রম একটি সর্বজন স্বীকৃত পন্য। শ্রমিক শুধু উৎপাদনই করেনা, সে পন্যের ভোক্তাও বটে। সকল পন্যের চলাচলের ক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিকতা, শুধুশ্রম নিয়োগের ক্ষেত্রে উগ্রজাতীয়তাবাদী রক্ষণশীলনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। জন্মহার র্হ্রাসের প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন উপভোগ করতে পশ্চিমা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ দরকার। তাদের গাড়ি আছে, ড্রাইভার নেই, বাসায় কাজের লোক নেই। এরা যখন তৃতীয় বিশ্বের দেশে যায় তখন দারোয়ান, বাবুর্চি, ড্রাইভারসহ ১০/১৫ জন কাজের লোক রাখে। নিজের দেশে কৃত্রিম মজুরি স্থরের কারনে নিজের কাজ বাধ্য হয়ে নিজেকে করতে হয়। সৌদিআরব, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া সরকার তাদের দেশের শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগকারীদের বিদেশ থেকে শ্রমিক নিতে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া সরকার তা দেয় না, দিলে কোটি কোটি মানুষের কাজের নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হতো। অধিকার আদায়ে তৃতীয় বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে তথ্য প্রযুক্তির এ ডিজিটাল যুগে সোচ্চার হোন।


     এই বিভাগের আরো খবর