,

বুড়িগঙ্গায় চলছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান, মোট উদ্ধার ৩২

 স্বজনদের ভিড়

সময় ডেস্ক : বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো আজ, উদ্ধার অভিযান চলছে। স্বজনহারা মানুষরা আজও ভিড় করেছেন বুড়িগঙ্গার তীরে। অনেকে নৌকা ভাড়া করে নদীর মাঝখানে তল্লাশিস্থলের কাছে জড়ো হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, গতকাল সোমবার সকালের এ ঘটনায় রাতভর তল্লাশির চলে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সদরঘাটে আসা লঞ্চের বার্থিংয়ের জন্য আজ, মঙ্গলবার সকালে এক ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় আবার তল্লাশি শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মীরাও অভিযানে আছেন।

সদরঘাট নৌ-পুলিশের ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনরা ভিড় করায় আমরা নদীতে পেট্রোলের ব্যবস্থা করেছি। উৎসুক দর্শকদের দূরে রাখতেও কাজ করছে পুলিশ।’

গতকাল, সোমবার সকালে থাকা ‘ময়ূর-২’ নামের একটি লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কায় ‘মর্নিং বার্ড’ নামের লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ নারী ও ৩ শিশুসহ ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে ছেড়ে আসা ‘মর্নিং বার্ড’ লঞ্চটি সদরঘাটে নোঙ্গর করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ওই সময় ঘাটে নোঙর করে থাকা ‘ময়ূর-২’ নামের একটি লঞ্চ ধাক্কা দিয়ে ‘মর্নিং বার্ডের’ উপরে উঠে যায়। এতে সঙ্গে সঙ্গে ‘মর্নিং বার্ড’ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রীদের কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও অনেকেই ভেতরে আটকা পড়েন।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস সুত্রে জানা যায়, লঞ্চডুবির প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর গতকাল সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিআইডব্লিটিএ’র নেতৃত্বে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে তীরের কাছাকাছি আনা হয়েছে। এ কাজে সহায়তার জন্য ‘দূরন্ত’ নামের একটি ছোট উদ্ধারকারী জাহাজ আনা হয়েছে। নদীর ৬০-৭০ ফুট গভীরে উল্টে থাকা লঞ্চটিকে টেনে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০টি এয়ার লিফটিং ব্যাগ, যার প্রতিটি ৮ টন ওজন তুলতে পারে।

এ ঘটনায় গতকাল, সোমবার রাতে নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে ‘ময়ূর-২’ লঞ্চের মালিকসহ ৬ জনকে। ময়ূর-২ লঞ্চের সাবেক চালক জানিয়েছেন, লঞ্চটিতে আপাতত চালক নেই। মাস্টারের মাধ্যমে সেটি চলাচল করছিল।

নৌ পুলিশ জানায়, বেপরোয়া লঞ্চ চালিয়ে মানুষ হত্যা ও ধাক্কা দিয়ে লঞ্চ দুর্ঘটনা মামলায় অভিযোক্ত ‘ময়ূর-২’ লঞ্চের মালিক মোফাজ্জল হামিদ ছোয়াদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। তবে তিনি ঢাকায় থাকেন। তিনি ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মাস্টার আবুল বাশার, জাকির হোসেন, ড্রাইভার শিপন হাওলাদার, মাস্টার শাকিল ও সুকানি নাসির। এজাহারভুক্ত ছয়জন ছাড়াও অজ্ঞাত কয়েকজন আসামির তালিকায় রয়েছেন।

এ ঘটনায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ-এর পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি।


     এই বিভাগের আরো খবর