,

মৌলভীবাজারে ভূতুড়ে বিদ্যুত বিলের হিড়িক 

বদরুল আলম চৌধুরী, মৌলভীবাজার সংবাদদাতা : মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সারা বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলাকে রেড জোন ঘোষণা করেছেন। তবে মৌলভীবাজার জেলার অধিকাংশ উপজেলা রয়েছে রেড জোন মুক্ত। এইসব উপজেলাসহ মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় সকাল থেকে বিকেল ৪ ঘঠিকা পর্যন্ত সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। এতে করে দিনের নির্দিষ্ট সময়ের পর গৃহবন্দী হয়ে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। বন্ধ হয়ে যায় দোকান-পাট, ছোট থেকে বড় সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (ঔষধি ও নির্দিষ্ট সময়ের মুদির দোকান ব্যাতিত) আর তাতে করে বিকেল ৪ ঘঠিকার পর থেকে বেকার  হয়ে পড়েন সকল প্রকার কর্মক্ষম মানুষ। সারাদেশের ন্যায় প্রভাব পড়েছে মৌলভীবাজার জেলায়। মহামারি করোনা ক্রান্তিকালে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা যেখানে দায় তার উপরে পল্লীবিদ্যুতের ভূতুড়ে বিল নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজারের অধিকাংশ গ্রাহকেরা।
সরেজমিন দেখা যায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পল্লী বিদ্যুতের বিলের বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিস শ্রীমঙ্গল সড়ক জগন্নাথপুরে গিয়ে দেখা যায় উপস্থিত সকল গ্রাহকের অভিযোগ অতিরিক্ত ভূতুড়ে বিল নিয়ে একজন মহিলা গ্রাহক বলেন আগে যেখানে ৩০০ (তিন শত) টাকা ইলেকট্রিক বিল আসতো এই কয় মাস ধরে বিল আসছে প্রায় ৭০০ (সাত শত) টাকা, আরেকজন গ্রাহক বলেন গত ডিসেম্বরে বিল আসে ৯৬/ টাকা এর পর মে মাসে বিল আসে ২০৯৭ (দুই হাজার সাতানব্বই) টাকা, জুন মাসে বিল আসে ৩১৪৮ (তিন হাজার একশত আটচল্লিশ) টাকা দরিদ্র এই গ্রাহক বলেন “আমি এতো টাকা দিব কোথা থেকে, আমি মাত্র দুটু ফেন চালাই” আরেকজন গ্রাহক বলেন এই অতিরিক্ত টাকার দায়িত্ব কে নিবে। এই টাকা গুলো কোথায় যায়? অন্য আরেক জন মহিলা গ্রাহক বলেন “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আগামী ছয়মাস যেনো বিলের জন্য চাপ প্রয়োগ না করা হয়। কিন্তু পল্লীবিদ্যুৎ এর কর্মীরা সবসময় চাপ প্রয়োগ করে বিল না দিলে লাইন কেটে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। তাই বাদ্য হয়ে অনেক কষ্টে অতিরিক্ত বিল সহ বিল প্রদান করতে হচ্ছে।
তাদের মধ্যে শেপুল মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, জয়নাল মিয়া, সফিক উল্ল্যা, রুবেল মিয়া সহ অনেকেই বলেন “আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আধা (অর্ধ) বেলা কাজ বা ছোট-খাটো ব্যাবসা করি এতে করে নিজের সংসার নিয়ে আছি দুঃশ্চিতার মধ্যে কোনোমতে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোগাড় করাও অনেক কষ্টের কোনো টাকা পয়সা হাতে নেই, এমতাবস্থায় এই মহামারীর মাঝেও পল্লী বিদ্যুতের বিলের চাপ তাও আবার কয়েকগুণ বেশি এই অবস্থায় আমরা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থা সূচনীয় তাই সরকারের কাছে দাবি এই সমস্যার একটা সুষ্ট সমাধান যেন করা হয়।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সুজিত কুমার বিশ্বাস এর সাথে মোটোফোনে কথা হয়, তিনি বলেন করোনাকালীন সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুৎ রিডিং নেয়া সম্ভব হয়নি তাই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী এভারেজ (গড় হিসেবে) বিল তৈরী করা হয়েছে এতে করে অনেকের বিল একটু কম বেশি হয়েছে, কেউ যদি মনে করেন তার বিল অতিরিক্ত হয়েছে তাহলে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করলে আমরা রিডিং দেখে তার বিল সংশোধন করে দিব।


     এই বিভাগের আরো খবর