,

টাকার গরমে সবাইরে কিনতে চাইয়েন না

অনন্ত জলিলকে হিরো আলম

সময় ডেস্ক : ঢাকঢোল পিটিয়ে হিরো আলমকে নিয়ে ছবি বানানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন অনন্ত জলিল। মাসখানেকের মাথায় গতকাল, ১৬জুলাই (বৃহস্পতিবার) ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জলিল জানালেন, তাঁর মর্যাদা না বোঝাসহ আরও কয়েকটি কারণে ছবি থেকে বাদ দিয়েছেন আলমকে। জলিলের এই অভিযোগ মানতে নারাজ আলম। ফেসবুক লাইভে এসে আলম জানালেন, চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনের সভায় জায়েদ খানকে নিয়ে কথা বলার কারণেই জলিল তাঁকে ছবি থেকে বাদ দিয়েছেন।

বগুড়ার ‘ডিশ’ ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম গানের ভিডিও ও নিজের প্রযোজিত নাটকে অভিনয় করে পরিচিতি পান। সেই পরিচিতি কাজে লাগিয়ে তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। এই সূত্রে পোশাক ব্যবসায়ী এবং চিত্রনায়ক ও প্রযোজক অনন্ত জলিলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। জলিল ঘোষণা দেন, তাঁর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ছবিতে অভিনয় করাবেন আলমকে। কিছুদিন আগে বাসায় ডেকে আলমের হাতে সাইনিং মানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন।

ফেসবুক লাইভে হিরো আলম বলেন, ‌‘অনন্ত জলিল ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, “তোমাকে আমি বড় মুখ করে জায়েদ খানের সঙ্গে মিলাইলাম। তুমি আমার মুখ রাখলে না।” তাঁকে বললাম, আমি তো এমন কিছু করিনি। তখন তিনি বললেন, “তোমাকে আমি মিলিয়ে দেওয়ার পরও কেন জায়েদ খানের বিরুদ্ধে কথা বলেছ?” চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনের মিটিংয়ে সবাই জায়েদ খানের বিরুদ্ধে কথা বলছে, আমিও হয়তো কিছু সত্য তুলে ধরছি। “যেহেতু তুমি আমার সম্মান রাখোনি, তোমাকে আমার সিনেমা থেকে বাদ দিয়ে দিলাম”।’

হিরো আলম প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘অনন্ত জলিল ভাইয়ের এমন কথা থেকে তাহলে আমি এখন কী বুঝব? সত্য কথা বললে নাকি অন্যায়! সত্য বললে অন্যায় হলে তাতে দুঃখ নাই। এমন সত্য বলে তাঁর ছবি থেকে বাদ পড়লেও আমার আফসোস নেই।’

প্রসঙ্গত এখানে বলা রাখা উচিত, হিরো আলমের সঙ্গে কিছুদিন আগে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে হিরো আলম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতিতে মানহানির অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টিরই মধ্যস্থতা করে দেন অনন্ত জলিল।

হিরো আলম বললেন, ‘আজকে হিরো আলম যা কিছুই হয়েছে, কারও কোনো সহযোগিতা নেয়নি। আমি অনন্ত জলিল ভাইকে কোনো দিন বলিনি, ফোনও দিইনি, আপনি আমাকে নিয়ে ছবি কবে বানাবেন? তিনিই আমাকে ডেকে নিয়ে গেছেন। জলিল ভাইয়ের উদ্দেশে বলতে চাই, ভাই আপনি এটা মনে কইরেন না, আপনি অনন্ত জলিল বইলা আপনার পেছনে কিংবা আপনার সামনে মাথা নত কইরা থাকবে হিরো আলম। আপনি এটাও ভাববেন না, সিনেমা থেকে বাদ দিয়েছেন তাতে হিরো আলমের দুঃখ আছে। হিরো আলমকে সবাই ব্যবহার করছে, আমার মনে হয় অনন্ত জলিল ভাই আপনিও আমাকে ব্যবহার করেছেন।’ কথায় কথায় হিরো আলম এ-ও বলেন, ‘হিরো আলম সত্যকে কোনো দিন ভয় পায় না। মৃত্যুকেও ভয় পায় না।’

ফেসবুকে অনন্ত জলিল লিখেন, ‘আমি হিরো আলমকে নিয়ে কোনো সিনেমা বানাব না এবং ৫০ হাজার টাকা সাইনিং মানি ফেরত নিব না। সিংহভাগ বিনোদন সাংবাদিক এবং চলচ্চিত্র পরিবারের সকল গুণীজন হিরো আলমকে নিয়ে সিনেমা বানানোর জন্য আপত্তি জানাচ্ছেন। সম্প্রতি হিরো আলমের কিছু অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সকলেই আবারও আমাকে নিষেধ করছেন তাকে নিয়ে সিনেমা না বানানোর। সব সময় আমি বিব্রত হচ্ছি, হিরো আলমের এসব বিতর্কিত বিষয়গুলোর জন্য।’

এর জবাবে হিরো আলম জানালেন, কিছুদিন আগে অনন্ত জলিল ভাই এফডিসিতে বলেছেন, ‘হিরো আলমকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। আমি এসবে কান দিই না। আজকে তিনি কী বলছেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন, হিরো আলমকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন, অশ্লীল মিউজিক ভিডিও করেন, তাই তাকে বাদ দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি আমাকে ফোন করে বলছেন, “তুমি জায়েদ খান নিয়ে কথা বলেছ, তাই বাদ”!’

সাইনিং মানির বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘ভাই, আপনি হয়তো অনেককে দান করতে পারেন। সবাই আপনার দান নিতেও পারে। কিন্তু আপনি কী করে ভাবলেন ৫০ হাজার টাকা দিলেন আর হিরো আলম তা নিয়ে নিবে! আপনার ৫০ হাজার টাকা আপনাকে দিয়ে দিব। আপনার সামনে গিয়েই দিয়ে দেব। আপনার টাকা আছে বলে, টাকার অহংকারে, গরমে সবাইরে কিনতে চাইয়েন না। ভাইরাল হওয়ার জন্য এটা করছেন কি না, জানি না।’

এদিকে সংবাদমাধ্যমে কয়েক মাস আগে হিরো আলম প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল বলেন, ‘হিরো আলম একটা পর্যায়ে চলে গেছে। তাকে তো আর ছোটখাটো চরিত্রে নেওয়া যাবে না। এখন আমি একটি যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে কাজ করছি। এতে অনেক ছোটখাটো চরিত্র রয়েছে, যেখানে হিরো আলমকে নিতে পারি না। সে যেহেতু একটা পর্যায়ে চলে গেছে তাই তাকে আগামী ছবিতে বড় চরিত্রে নেব। আমি যেহেতু কথা দিয়েছি, অবশ্যই নেব।


     এই বিভাগের আরো খবর