,

ফরজ রোজা

সময় ডেস্ক : আজ রমজানুল মোবারক ১৪৩৬ হিজরি। বছর ঘুরে ফিরে এসেছে আমাদের মাঝে রহমত, মাগফিরাত ও দোজখ থেকে নাজাতের মাস রমজান। যে বরকতময় মাসে প্রিয়নবী (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল সমগ্র বিশ্বের মানবজাতির একমাত্র পরিচালনার গাইড মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। আরবি শব্দ সাওমের বহুবচন হচ্ছে সিয়াম। আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। আর ইসলামের পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে যে, সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো রকমের পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত থাকা। এ সম্পর্কে হাদীসে কুদসিতে ইরশাদ হয়েছে যে, আদম সন্তানের নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সত্তর গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ পাক বলেন, সিয়াম আমার জন্য এবং এর প্রতিদান আমি নিজেই। কেননা, সিয়াম পালনকারীরা একমাত্র আমারই সন্তুষ্টির উদ্দেশে পানাহার ও প্রবৃত্তির চাহিদা পরিত্যাগ করে। কোরআনুল কারীমে এরশাদ হয়েছেÑ ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু কুতিবা আলাইকুমুস সিয়ামু কামা কুতিবা আলাল্লাজিনা মিন কাবলিকুম তাত্তাকুন। অর্থাৎÑ হে ঈমানদারগণ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাক্বওয়া বা সাবধানতা অবলম্বন করতে পার। রমজান মাস : এ মাসে অপ্রাপ্তবয়স্ক, রোগী, মুসাফির, পাগল, হায়েজ-নেফাস সম্পন্ন মহিলা ও শারয়ী পরিভাষায় অক্ষম ব্যতীত প্রত্যেক নর-নারীর ওপর রোজা পালন করা ফরজ। রোজার নিয়ত : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরী, রমজানাল মুবারাকি, ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বাব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলীম। অর্থাৎÑ হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল রমজানের রোজা রাখার নিয়ত করছি। যা তোমার পক্ষ থেকে ফরজ করা হয়েছে। সুতরাং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল কর। নিশ্চই তুমি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ। সেহেরি : সেহেরি খাওয়া সুন্নত। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন যে, আমাদের এবং আহলে কিতাবের (ইহুদী-নাছারা) রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো আমরা সেহেরি খাই ওরা খায় না। তিনি আরো বলেনÑ তোমরা সেহেরি খাও, কারণ এর মধ্যে বরকত নিহিত আছে।
সেহেরির সময় : হাদীসের আলোকে জানা যায় যে, সেহেরি খাওয়া রাতের শেষভাগেই উত্তম। হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত (রা.) হুজুরের জমানার কথা বলতে গিয়ে বলেন যে, আমরা মহানবীর (সা.)-এর সাথে সেহেরি খেয়েছি। তারপর নামাজে (ফজরের জন্য) দাঁড়িয়েছি। জিজ্ঞাসা করা হলো উভয়ের (সেহেরি ও নামাজের) মধ্যে কতটুকু ব্যবধান ছিল? হযরত যায়েদ (রা.) বললেন, পঞ্চাশটি আয়াত তেলাওয়াত করতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু। ইফতার : সূর্যাস্তের পরপরই ইফতার করা উত্তম। মহানবী (সা.) বলেনÑ মানুষ ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতদিন তারা ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে নেবে। ইফতারের দোয়া : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়াআলা রিযকিকা আফতারতু। অর্থাৎÑ হে আল্লাহ আমি তোমার নামে রোজা রাখছি এবং তোমার রিজিক দ্বারাই ইফতার করছি। ইফতার করানোর ফজিলত : মহানবী (সা.) এরশাদ করেনÑ যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় সে ওই রোজাদারের সমান ছওয়াব পায়। অথচ ওই রোজাদারের ভাগ হতে কিছু মাত্র কম করা হবে না। সম্পাদনা : আলাউদ্দিন


     এই বিভাগের আরো খবর