,

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যা বলেন তাই করেন -এমপি আবু জাহির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ বাস্তবায়ন করায় হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরকে ব্যতিক্রমধর্মী সংবর্ধনা দিয়েছে সদর উপজেলার গোপায়া ইউনিয়নবাসী। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দলমত নির্বিশেষে পাঁচ সহস্রাধিক জনতার ঢল নামে। গতকাল রবিবার দুপুরে সংসদ সদস্যের বাসভবনের সামনে থেকে সহস্রাধিক মোটরসাইকেলে শোডাউন করে তাকে নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে ছাত্র-জনতা। পরে শিরিষতলা থেকে সংবর্ধিত ব্যক্তিকে ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সংবর্ধনাস্থলে নিয়ে অভ্যর্থনা জানান আয়োজকরা। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিল বর্ণাঢ্য সাজের একটি হাতি। তখন ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন দেখতে জেলা শহরের চৌধুরী বাজার থেকে গোপায়া ইউনিয়নের ভাদৈয়ে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ দলে দলে ভীড় করেন। শোভাযাত্রাটি ২ নম্বর পুল এলাকায় যাওয়ার পরই অনুষ্ঠানের সুসজ্জিত ২৫টি তোরণ অতিক্রম করেন এমপি আবু জাহির। বর্ণাঢ্য এই শোভাযাত্রার মুহুর্তগুলো ধারণা করা হয় আকাশে উড়ানো ড্রোন ক্যামেরা থেকে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ শেষে যখন এমপি আবু জাহির বিকেল ৩টার দিকে ভাদৈ আইডিয়াল হাইস্কুলের সামনে ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন তখন তিনি লাল গালিচায় হেটে মঞ্চের দিকে অগ্রসর হন। এ সময় উভয় দিক থেকে ব্যান্ডপার্টির সুরের মুর্চনায় ফুল ছিটিয়ে তাকে বরণ করেন সবাই। মঞ্চে উঠার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ থাকে প্যান্ডেল। এরই মাঝে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বর্ণাঢ্য সাজে এবং ভুভুজেলা বাশির শব্দের সাথে নানা ধরণের শ্লোগানে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন নেতাকর্মীলা। অগ্রভাগে ব্যানার থাকলেও ফুল দিয়ে তৈরী আকর্ষণীয় নৌকা দৃষ্টি কাড়ে সবার। এরপর দুই শতাধিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফুলের তোড়া এবং মালা দিয়ে তাকে বরণ করা হয়। ফুলেল শুভেচ্ছা ও অনেকগুলো সম্মাননা স্মারক দিতে ঘড়ির কাটা তখন পৌনে পাঁচটার দিকে। সেজন্য ছোট করা হয় বক্তৃতার তালিকা। সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোসহ এমপি আবু জাহিরের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অভাবনীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিশেষ অতিথি মোঃ আলমগীর চৌধুরী। এরপর প্রধান অতিথির বক্তৃতার সময় জনস্রোত দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এমপি আবু জাহির। তিনি বলেন, গোপায়া ইউনিয়নকে আমি আমার দ্বিতীয় বাড়ি মনে করি। আপনারা আমাকে বার বার যে ভালবাসা দেখিয়েছেন তার প্রতিদান আমি দিতে পারব না। তবে দিনরাত আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আপনাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। আমিও আমৃত্যু আপনাদের মাঝে থেকে আপনাদেরই একজন হয়ে কাজের মাধ্যমে আমার দায়িত্ব পালন করে যাব ইনশাল্লাহ। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন আমার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হবিগঞ্জে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তখন অনেকেই মন্তব্য করতে থাকেন; এমপি আবু জাহির নাঠক সৃষ্টি করেছে। এগুলো কখনও সম্ভব না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ আমি প্রমাণ করে দিয়েছি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যা বলেন, তাই করেন। আজকে অভাবনীয় এ দু’টি প্রতিষ্ঠান আপনাদের সামনে দৃশ্যমান। আবু জাহির বলেন, দুস্কৃতিকারীরা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে দেশের চরম ক্ষতি করেছে। এরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে ১৯ বার। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বে দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। আপনাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ, পেয়েছি ভাষার অধিকার। আজ দেশে মহান এই নেতার প্রতিকৃতি স্থাপন নিয়েও ষড়যন্ত্র চলছে। এরা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। তখন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান এমপি আবু জাহির। তিনি গোপায়া ইউনিয়নবাসীকে সামনে থেকে সব বিষয়ে বক্তৃতা দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন গোপায়া ইউনিয়নবাসী। আবারও আমরা গোপায়া ইউনিয়নকে আওয়ামী লীগের দুর্গ বানাতে চাই। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সদর ইউনিয়ন হল গোপায়া। তাই সকল বিষয়েই এখান থেকে নেতৃত্ব বেড়িয়ে আসুক, সেটাই আমরা কামনা করি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদ ভিংরাজের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির বকুল, অ্যাডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, হাবিবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান খান সজল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ মোত্তালিব, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায় চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি, পৌর যুবলীগের সভাপতি ডাঃ ইসতিয়াক রাজ চৌধুরী, রোটারিয়ান এমএ রাজ্জাক, অধ্যক্ষ রফিক আলী। সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও পৃথকভাবে এমপি আবু জাহিরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর