,

হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে গাভীর দুধে অধিক হারে ভেজাল মিশ্রণ

জুয়েল চৌধুরী : হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে গাভীর দুধে অধিক হারে ভেজাল মিশ্রণ করে বাজারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় অর্ধশতাধিক ডেইরি ফার্মসহ কৃষকদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে এতে ভেজাল মিশ্রণ করছে একশ্রেণীর প্রতারকচক্র। ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা প্রতিদিনই এসব দুধ বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং ও স্যানিটারি বিভাগের নজরদারি না থাকায় পদে পদে ক্রেতা সাধারণ ঠকছেন। হবিগঞ্জে দুধের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে একশ্রেণীর প্রতারক চক্র বেপরোয়াভাবে গাভীর দুধে ভেজাল মিশ্রণ করছে। অসাধু এসব দুধ বিক্রেতা প্রতি লিটার দুধে ৭০০ গ্রাম পানি, কেমিক্যাল, ময়দা ও অ্যারারুট পাউডার মিশিয়ে ভেজাল দুধ বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব ভেজাল দুধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এদিকে ল্যাকটোমিটারের সাহায্যে দুধের ঘনত্ব নির্ণয় বা দুধ খাঁটি কিনা তার অস্তিত্ব পরীক্ষা করার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থাকলেও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় ভেজাল দিন দিন আরও বাড়ছে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের স্যানিটেশন বিভাগও উদাসীন। পাশাপাশি ভেজাল দুধের বিরুদ্ধে প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযানও হচ্ছে না। খাঁটি গরুর দুধের নামে ক্রেতাদের কাছে ভেজাল দুধ বিক্রি করে আসছেন পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা। এছাড়া এসব দুধ জেলার বিভিন্ন বাজারেও বিক্রি করা হচ্ছে। হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার, কামারপট্টি দুধের বাজার, অনন্তপুর, শায়েস্তানগর, রাজনগর, সুলতান মাহমুদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিলিটার দুধ ৭০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। দুধ বিক্রেতারা অবাধে খাঁটি গরুর দুধের সাথে পানিসহ ভেজাল করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। আর এসব দুধ খেয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হ”েছন ক্রেতারা। জানা গেছে ১০ কেজি দুধে ১০ লিটার পানি ও এক ধরণের ক্যামিকেল মিশ্রিত করে বিক্রি করা হয়। খালি চোখ দিয়ে তা ধরার কোনো উপায় নেই।
এদিকে গবেষণায় দেখা গেছে সরাসরি খামার থেকে সংগ্রহ করা গাভীর দুধে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের এন্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও। অন্যদিকে প্যাকেটজাত গাভীর দুধেও মাত্রাতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক ও সীসার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দুজাত পণ্য দইয়েও মিলেছে মানবদেহের জন্য বিষাক্ত সীসা। এসব ভেজাল দুধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সীসা ও ক্রোমিয়ামের কারণে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ হতে পারে। গবেষকরা বলছে দুধ, দই ও দু”জাত খাদ্যে এমন সব রাসায়নিকের উপস্থিতি এড়াতে নিবিড় নজরদারি বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এ বিষয়ে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি জানা নেই। যেহেতু অভিযোগ পেয়েছি অবশ্যই পদক্ষেপ নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর