,

হবিগঞ্জে পরকিয়া প্রেমের বলি ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনার মামলায় এফআইআরের আদেশ

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ শহরে পরকিয়া প্রেমের বলি ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনার মামলায় এফআইআরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত রবিবার হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন সদর থানার ওসিকে। ওই দিনই সন্ধ্যায় মামলাটি সদর থানায় প্রেরণ করা হয়েছে। মামলারা আসামিরা হল, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র নিহত ইয়াসমিন আক্তারের স্বামী জুয়েল মিয়া (৩০), তার পিতা আব্দুল জলিল (৫৫), চাচা রেজ্জাক (৬০), কলিম মিয়া (৫৮), ভাই রুবেল মিয়া (২৫), মা রাবিয়া খাতুন (৫০) ও তেঘরিয়া গ্রামের মৃত মন্নর আলীর পুত্র সর্দার শাহ আলম।
এর আগে ২০ ডিসেম্বর নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের এখলাছ মিয়ার স্ত্রী নিহত ইয়াসমিনের মা শাহানা আক্তার বাদি হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ৩ দিনের ভেতরে এ বিষয়ে থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি না প্রতিবেদন দিতে সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ওসি গত বুধবার এ বিষয়ে মামলা হয়নি রিপোর্ট দিলে আদালত মামলা রুজু করার আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ইয়াসমিনের সাথে জুয়েল মিয়ার ৫ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে দুইটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। নাম জিহাদ ও জিসান। সম্প্রতি জুয়েল মিয়া ওই এলাকার এক যুবতির সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি আঁচ করতে পারে ইয়াসমিন। এক পর্যায়ে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। প্রায়ই জুয়েল ওই যুবতীর জন্য ইয়াসমিনকে মারধোর করতো। বিষয়টি ইয়াসমিন তার মা শাহানাকে ফোনে অবগত করতো। কিন্তু দুইটি অবুঝ সন্তানের দিকে তাকিয়ে ইয়াসমিন জুয়েলের শত অত্যাচার সহ্য করে ঘর সংসার করতে থাকে। ঘটনার তিনমাস আগে ইয়াসমিনকে নিয়ে জুয়েল শহরের পশ্চিম ভাদৈ এলাকার রিভারভিউ খান ম্যানসনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্যাট বাসা ভাড়া নেয়। গত ১১ ডিসেম্বর গভীররাতে পরকিয়া প্রেমের বিষয় নিয়ে জুয়েলসহ উল্লেখিতরা ইয়াসমিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ রান্নাঘরের জানালার গ্রিলে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। সদর থানার এসআই খুর্শেদ আলমসহ একদল পুলিশ রক্তমাখা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় দেয়। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
বাদির আইনজীবি কামাল উদ্দিন সেলিম আদালতকে বলেন, এটি প্রকাশ্য দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে এটি হত্যা। কারণ ইয়াসমিনের লাশ যেভাবে উদ্ধার করা হয়েছে, তার আলামত স্পষ্ট সে এভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না। তারপরও যদিও এই হত্যার বিচার না পাওয়া যায় তবে মানুষ কোথায় যাবে? তিনি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর