,

হবিগঞ্জে গরুর মাথা টানিয়ে মহিষের মাংস বিক্রির অভিযোগ

পরীক্ষা ছাড়াই রোগা পশু জবাই করে মাংস বিক্রি

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ শহরের মাংসের দোকানগুলোতে গরুর মাথা টানিয়ে মহিষের মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্রেতারা মহিষের মাথাকে গরুর মাথা ভেবে গরুর মাংস কিনে কোন স্বাদ পাচ্ছেন না বলে জানান। এ ছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই রোগা পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন অসাধু কসাইরা। এমনকি ওজনেও কম দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া রাতের বেলা লোকচক্ষুর আড়ালে জবাই করা অসুস্থ গবাদিপশুসহ দুই তিনদিনের ফ্রিজের মাংসও বিক্রি করা হচ্ছে। রাতে জবাই করা মহিষ দিনে গরুর মাংস বলেও বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে কসাইদের বিরুদ্ধে। এর ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন শহরবাসী। সচেতন মহল বলছেন, এসব গবাদিপশুর বিভিন্ন জটিল রোগ থাকতে পারে। রোগ পরীক্ষা ছাড়া পশু জবাই করা এবং বিক্রি করা কোনো অবস্থাতেই ঠিক নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রোগ নির্ণয়ে কোনো ধরনের তদারকি না থাকার ফলে সাধারণ ক্রেতারা ভেজালমুক্ত মাংস খাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর, কোর্ট স্টেশন, চৌধুরী বাজার, সিনেমা হলসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক মাংসের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশেরই লাইসেন্স নেই। তবে শহরের বেশির ভাগ দোকান হচ্ছে শায়েস্তানগর বাজারে। পৌরসভা থেকে মাংসের দামের তালিকা দেয়া হয়েছে। গরু প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ৬শ থেকে ৬৫০ টাকায়, মহিষ ৫শ টাকা, বিক্রি করা হচ্ছে ৫৫০ টাকা থেকে ৬শ টাকায়, খাসি ৭৫০ টাকা, কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ৮৫০ টাকায়, ছাগল ও ভেড়ার মাংস ৫শ টাকা, বিক্রি করা হচ্ছে ৬শ টাকায়। এর মাঝে প্রতি কেজি মাংসে ওজনে কম দেয়া হয় ১শ থেকে ১৫০ গ্রাম।
জানা যায়, নির্ধারিত জবাইখানায় সব পশু জবাই করা হয় না। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে নোংরা পরিবেশে পশু জবাই করে বিভিন্ন মাংসের দোকানে বিক্রি করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরীক্ষার পর নির্ধারিত মৌলভী জবাই করবেন। এরপর ভেটেরিনারি ডাক্তার পশুর মাংসের গায়ে সিল মারেন। গরুর মাংসের গায়ে গরুর মাংস আর মহিষের মাংসের গায়ে মহিষের মাংস হিসেবে সিল মারার নিয়ম রয়েছে। কোনো কোনো সময় ভারতীয় চোরাই গরু জবেহ করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।
ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও এসব বন্ধ হচ্ছে না। পৌর মেয়র মিজানুর রহমান মিজান বলেন, পৌরসভা থেকে তালিকা দেয়া হয়েছে। নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, যদি এরকম হয় তবে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর