,

নবীগঞ্জে যৌতুক দিতে না পারায় গৃহবধুর উপর অমানবিক নির্যাতন

সংবাদদাতা ॥ স্বামীকে যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় সিলেটের ওসমানী নগর থানার তাহিরপুরে শশুরবাড়ীর লোকজনের নির্যাতনের শিকার হয়ে ৩ সন্তান নিয়ে পিত্রালয়ে বসবাস করছেন গৃহবধু। ওই গৃহবধু নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের মৃত আপ্তাব আলীর মেয়ে মোছাঃ নাসিমা বেগম। নাসিমা জানান, ‘ নির্যাতনের শিকার হয়ে ৩টি অবুঝ সন্তান নিয়ে বিগত দেড় বছরধরে পিত্রালয়ে বসবাস করছেন তিনি। বর্তমানে তিনি তার সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যার কারণে তার সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও আশংকা করছেন তিনি।’
গৃহবধু নাসিমা জানান, ‘স্বামীর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কগ-৫) আদালতে যৌতুক নিরোধ আইন (সংশোধিত ২০১৮ ইং) এর ৩ ধারায় তার স্বামী ওসমানীনগর থানার তাহিরপুর গ্রামের মৃত আঃ ছালামের পুত্র লেছু মিয়া (৪০) ও তার চাচাতো ভাই মৃত আব্দুল গনির পুত্র আবু বক্কর মিয়া (৪২)কে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।’
তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে তার বিবাহ হয় লেছু মিয়ার সাথে। বর্তমানে তাদের সংসারে ২ ছেলে ও ১টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তার স্বামী একজন সহজ সরল প্রকৃতির লোক ও বাকপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি। ২নং আসামী বক্কর মিয়া একজন প্রতারক, চরিত্রহীনও লম্পট প্রকৃতির লোক। বক্কর মিয়া তার স্বামীকে বিভিন্নভাবে কুপরামর্শ দিয়ে একপর্যায়ে টমটম গাড়ী কিনে দেওয়ার প্রলোভন
দিয়ে নাসিমার মা-ভাইদের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক বাবদ দেওয়ার জন্য তার স্বামীর মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে। যৌতুক বাবদ এতো টাকা নাসিমা দিতে অসম্মতি জানালে তার উপর চলে একাধিক নির্যাতন।
নির্যাতনের একপর্যায়ে নাসিমার স্বামী ও বক্কর মিয়ার মাধ্যমে ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ইং সন্তানদের নিয়ে তিনি তার পিত্রালয়ে চলে যান। টাকা দিতে না পারায় নাসিমাকে তার সন্তানসহ পিত্রালয়ে ফেলে রেখে চলে যায় তার স্বামী। এর পর থেকে নাসিমা ও তার অবুঝ সন্তানদের নিয়ে তার মা-ভাইদের সাথেই আছেন। তার স্বামী বা তার শশুর বাড়ীর কেউ তাদের খোঁজ খবর না নেওয়ায় অনিশ্চিত ভব্যিষৎ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
এদিকে ওই ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে উল্লেখিত আসামীরা সম্প্রতি প্রায় মাসখানেক হাজতবাস করে। এই মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ক্ষিপ্ত হয়ে বক্করের ভাই আকবর মিয়া ও আহমদ আলী নাসিমার ভাই হামদু মিয়াকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে পরবর্তীতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে একই আদালতে পরবর্তীতে নাসিমার ভাই বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় নির্যাতনের শিকার নাসিমার পরিবারের লোকজন এখনো আসামীদের নানা হুমকি ধামকিতে আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন বলেও নাসিমা বেগম জানিয়েছেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর