,

পরীক্ষা ছাড়াই ফল ঘোষণার সুযোগ রেখে সংসদে বিল পাস

সময় ডেস্ক ॥ পরীক্ষা ছাড়াই ফল ঘোষণার সুযোগ রেখে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১’ গতকাল রোববার সংসদে পাস হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে পাস হয়। আগামী দুই দিনের মধ্যে গেজেট এবং ফল প্রকাশের কথাও জানান শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি করা হয়। এছাড়াও ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ আরও দু’টি বিল গতকাল পাস হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিল ৩টি উত্থাপনের সময় বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের ফল ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে, বিল পাস হলেই তা দ্রুত প্রকাশ করা যাবে। ফল প্রকাশ হওয়ার পর এই শিক্ষার্থীদের স্নাতক পর্যায়ের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। গত ১৯ জানুয়ারি সংসদে বিল ৩টি তোলার পর পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ৩টি বিলই পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংসদে পাসের সুপারিশ করে গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতে অতিমারী, মহামারী, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশাবলি জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। এর আগে বিল বাছাই কমিটি পাঠানোর প্রস্তাবের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা বন্ধ করতে হয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই একই অবস্থা হয়েছে। বেশিরভাগ দেশে বাংলাদেশের মত কাছাকাছি পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। একেবারে চিন্তা ভাবনা ছাড়া এভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে তা ভাববার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, কোভিড-১৯ জাতীয় পরামর্শক কমিটি সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেকে হঠাৎ করে একটা পর্যায়ে গিয়ে ভালো ফল করেন। তবে এটাও ঠিক এসএসসির চেয়ে এইচএসএসিতে একটু কঠিন এবং নম্বর কম পেয়ে থাকে। জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেওয়া হবে। যারা মেধাবী তারা এ দুটো পরীক্ষায় মেধার সার রেখেই এসেছেন। কাজেই মেধাবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন- এটা সত্য নয়। যার যে মেধার স্তর সেই অনুযায়ী ফলাফল পাবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে দূরে রাখতে পেরেছি। কওমি মাদ্রাসা খোলা রাখা প্রসঙ্গ দীপু মনি বলেন, কওমি মাদ্রাসার অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এতিম ও দুস্থ। তাদের বেশিরভাগই আবাসিক। সেখানে তারা থাকার সুযোগ না পেলে তাদের জীবন দুঃসহ অবস্থায় পড়বে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে অনেকগুলো শর্ত সাপেক্ষে এটা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখানেও মানবিকতা, স্বাস্থ্য সবকিছু বিবেচেনায় নেওয়া হয়েছে। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আপাতত সপ্তাহে একদিন কাস শুরুর কথা জানান। তিনি বলেন, শুধুমাত্র দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়মিত ক্লাস হবে। বাকিরা সপ্তাহে একদিন করে কাস করবে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়মিত ক্লাস হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন করে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়া নিয়ে যাবে। পরের সপ্তাহে আবার একদিন আসবে।


     এই বিভাগের আরো খবর