,

সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের কোন্দল

সময় ডেস্ক ॥ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি ঘোষণা পর সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কমিটি, পাল্টা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর রেশ পড়েছে আসন্ন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে। সেখানেও পাল্টা প্যানেল ঘোষণা করেছে বিদ্রোহী কমিটি। বিদ্রোহীদের দাবি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে হয়নি। ওই কমিটি অবৈধ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মাহবুব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, একটা বৃহৎ দলে কিছু বিদ্রোহী থাকবেই। এর পেছনে সরকারের উসকানি থাকে। এদের (বিদ্রোহী) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তিনি বলেন, এদের (বিদ্রোহী) কোনো রাজনৈতিক আদর্শ নেই। এরা নিজস্ব স্বার্থের জন্য এবং নিজেদের সুবিধার জন্য একেক দলের পেছনে ঘুরে বেড়ায়। ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার কমিটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই উনার মতামত নিয়েই করা হয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি অ্যাডভোকেট আবদুল জব্বার ভুইয়াকে সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার ২৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান এই কমিটির অনুমোদন দেন। পরে গত ১ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে সভাপতি এবং রফিকুল হক তালুকদার রাজাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫০১ সদস্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার কমিটি ঘোষণা করে একটি অংশ। অবশ্য তৈমুর আলম খন্দকার পরবর্তীতে সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলে আইনজীবী ফোরামের সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। এদিকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য একটি প্যানেল ঘোষণা করে মনোনয়ন বোর্ড। এতে ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমানকে সভাপতি এবং সম্পাদক পদে বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। একই দিন অ্যাডভোকেট এবিএম ওয়ালিউর রহমান খানকে সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদকে সম্পাদক করে আরেকটি প্যানেল ঘোষণা করে বিদ্রোহী কমিটি। এতে সুপ্রিম কোর্টে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে কোন্দল আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জানতে চাইলে বিদ্রোহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হক তালুকদার রাজা যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশে ৬৫টি বারে সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ফোরামের কমিটি সেভাবে করা হয়নি। একটা পকেট কমিটি করা হয়েছে, যা অবৈধ এবং অগ্রহণযোগ্য। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় কোনো অনৈক্য নেই বলে মনে করেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি যুগান্তরকে বলেন, যারা পাল্টা কমিটি এবং বার নির্বাচনে প্যানেল করেছে তারা ফোরামের কেউ না। দলের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ওয়ালিউর রহমান খানকে তিন বছর আগে এবং মির্জা আল মাহমুদকে সম্প্রতি বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে একটি মনোনয়ন বোর্ড আছে। সেই বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ফোরামের গণমাধ্যমবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিএনপির দুর্গে ফাটল ধরাতে ষড়যন্ত্রকারীরা তৎপর হয়ে উঠেছে। এ মুহূর্তে ঐক্যের বিকল্প নেই। অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী জুনু বলেন, সম্মেলন ছাড়া আইনজীবী ফোরামের কমিটি কোনোভাবেই আইনজীবীরা মেনে নেবে না। সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের দুর্গ ধরে রাখতে হলে অবিলম্বে ওই কমিটি বাতিল করা হোক।


     এই বিভাগের আরো খবর