,

স্বাধীনতার ৫০ বছর ॥ হবিগঞ্জে শতাধিক স্কুলে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার

সংবাদদাতা ॥ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ ৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের শিল্পকর্ম তথ্যচিত্রে ভরপুর। রয়েছে ৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই কালো অধ্যায়ের কাহিনীও। বিদ্যালয়ের কক্ষে প্রবেশ করলেই এই শিল্পকর্ম দেখে যে কারো চোখ জুরিয়ে যাবে। এই কক্ষে প্রবেশ করলে একজন শিক্ষার্থী হারিয়ে যাবেন মুক্তির সংগ্রামে। এটি ছিল হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের চিত্র। এই বিদ্যালয়ের মত হবিগঞ্জ জেলার প্রায় ১৭০টি স্কুল ও কলেজে‘মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’স্থাপন নিয়ে কাজ করেছে হবিগঞ্জ চারুকলা একাডেমি। শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সহজভাবে জানাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলা, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, আজমিরিগঞ্জ, লাখাই, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব মুক্তিযুদ্ধ কর্নার করা হয়েছে। হবিগঞ্জ চারুকলা একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় চিত্রশিল্পী আশীষ আচার্য অলাভজনক ভাবে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের কাজ সম্পন্ন করেন বলে জানান। হবিগঞ্জ চারুকলা একাডেমির কর্ণধার আশীষ আচার্য বলেন, শিশুদের মধ্যে যদি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয় তবে আগামী প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা যাবে। তাই এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নারগুলো শিশুদের মনোজগতে দেশপ্রেম তৈরি করবে বলে মনে করি। তিনি বলেন, চারুকলা সব সময়ই বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। যার চিত্র দেখা গেছে ৫২ ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত। এখনো বিভিন্ন আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করে চারুকলা। বাঙালীর জাতির এই বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস ও বীর সৈনিকদের শিশুদের জানাতে হবে। তাই স্কুলের এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নারগুলোর মাধ্যমে শিশুরা সহজেই মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কুমার কর্মকার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কর্নার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য অতি মূল্যবান একটি শিক্ষা উপকরণ। ৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে আছে। ২০১৮ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদের নির্দেশে আমি অত্র বিদ্যালয়ে এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নেই। এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের কাজ বাস্তবায়ন ও শিল্প নির্দেশনা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন হবিগঞ্জ চারুকলা একাডেমির কর্ণধার আশীষ আচার্য। এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ আলফাজ উদ্দিন বলেন, এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নার শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করবে। এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে মুক্তিযুদ্ধ সংশ্লিষ্ট প্রায় সকল তথ্য শিল্পকর্মের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।তাই শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হচ্ছে। সর্বোপরি বলা যায় একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে একটি মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের ভূমিকা অনেক। এই এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নার বাস্তবায়ন করেছে হবিগঞ্জ চারুকলা একাডেমি।


     এই বিভাগের আরো খবর