,

বাহুবলে বাসা থেকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচন! ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা চুরি’র জন্যই হত্যাকাণ্ড ঘাতক আমিরে’র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

সংবাদদাতা ॥ বাহুবলে বাসা থেকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এদিকে এ মামলার প্রধান আসামি মোঃ আমির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার রাত ৭টায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম, পিপিএম সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মূলত ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা চুরি করার জন্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ঘাতক আমির হোসেন তার স্বীকারোক্তিতে জানায়। তার স্বীকারোক্তি মতে এ মামলার আরেক আসামি মনির হোসেনকেও বাহুবল থানা পুলিশ গতকাল শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে। সে আরও জানায়, দিগাম্বর বাজারের ৩য় তলায় ভাড়াটিয়া অঞ্জলি মালাকার (৩০) ও তার কন্যা পূজা রাণী (৮) ঘুমিয়ে পড়ে। ঘটনার দিন রাতে গত ১৭ মার্চ সে চুরি হয়েছে মর্মে নাটক সাজায়। এ সময় অঞ্জলির স্বামী কার্তিক মালাকার কাঁচামাল কেনার জন্য সুনামগঞ্জে ছিল। তখন আমির হোসেন ফোন দিয়ে বলে তার বাসায় চুরি হয়েছে। তোমার স্ত্রী অঞ্জলীকে বল আসার জন্য। তখন অঞ্জলি না যাওয়ায় আমির হোসেন ঘুমিয়ে থাকা অঞ্জলির রোমে যায় এবং ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকটি জখম করে এক পর্যায়ে তাকে গলাকেটে হত্যা করে। তাদের ধস্তাধস্তির কারণে পাশে থাকা মেয়ে পূজা রাণী (৮) ঘুম থেকে উঠে পড়লে তাকেও একইভাবে হত্যা করে অঞ্জলির হাতের সোনার বালা, চেইন ও মোবাইল ফোন, নগদ টাকা নিয়ে যায় এবং ওই ছুরি দিয়েই নিজের হাতে আঘাত করে বাঁচার জন্য বাসার পাশে জমিতে পড়ে থাকে। সকালে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পড়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৭ মার্চ সকালে লাশ দুইটি উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পুলিশের সন্দেহ হলে হাসপাতাল থেকে আমির হোসেনকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে সে ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী লুট হওয়া কিছু টাকা ও হত্যা কাজে ব্যবহৃত ছুরিসহ আলামত উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা বেগমের আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আমির হোসেন হত্যার দায় স্বীকার করে এবং মনির হোসেন ও হান্নান নামের দুইজন ছিল বলে জানায়। মনির হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং হান্নানকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ঘাতক আমির হোসেন সিলেটের চৌকিদিঘী গ্রামের আলমগীরের পুত্র ও মনির বাহুবল উপজেলার নোয়াঐ গ্রামের মৃত মহিদ উল্লার পুত্র। পুলিশ সুপার আরও জানান, আমির হোসেনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। উক্ত প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার শিমু, সহকারি পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী, বাহুবল থানার ওসি কামরুজ্জামানসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ।


     এই বিভাগের আরো খবর