,

নবীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগ ॥ এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

সংবাদদাতা ॥ নবীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগ দায়ের করায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের বাউসা গ্রামে। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাউসা গ্রামের মৃত মেরাব উল্লাহর পুত্র মকবুল মিয়া’র স্ত্রী আম্বীয়া বেগমের লাকড়ি চুড়ির ঘটনায় গত সোমবার দুপুরে একই গ্রামের অমূল্য আচার্য্যরে পুত্র নিখিল আচার্য্যরে সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরেই উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে আশপাশের লোকজন এসে উভয়পক্ষের লোকজনকে সালিশের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিলে উভয়পক্ষের লোকজন তা মেনে নেয়। গ্রামের মুরুব্বিয়ান সালিশ বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করার জন্য নিখিল আচার্য্য ও মকবুল মিয়ার স্ত্রী আম্বীয়া বেগম গংদের সাথে যোগাযোগ করলে আম্বীয়া বেগম গংদের লোকজন সম্মতি প্রদান করেন। কিন্তু নিখিল আচার্য্য গ্রামের পঞ্চায়েতের মুরুব্বিদের কাছে একদিনের সময় নেন। বাউসা গ্রামের মুরুব্বিয়ানকে উপেক্ষা করে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য সে নবীগঞ্জ থানায় আম্বিয়া বেগম গংদের উপর মামলা দায়ের করে। এ ব্যাপারে উক্ত গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বি মোঃ কাওছার আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঘটনাটি শুনার সাথে সাথে আমিসহ পঞ্চায়েতের লোকজন উভয়পক্ষের সাথে যোগাযোগ করি। আম্বিয়া বেগম গংরা বিষয়টি সমাধান করার জন্য পঞ্চায়েতের উপর ছেড়ে দেন। নিখিল আচার্য্য একদিনের সময় চাওয়ায় সালিশ বৈঠকের তারিখ নির্ধারন করা হয়নি। গ্রামের পঞ্চায়েতকে পাশ কাটিয়ে নিখিল আচার্য্যরে মামলা দায়ের করা নিন্দনীয়। বাউসা গ্রামের হিন্দু সম্পদায়ের বিশিষ্ট্য মুরুব্বি উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হরেকৃষ্ণ চক্রবর্তী (হরি ঠাকুর) বলেন, মুক্তিযোদ্ধের সময়কাল থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের বাউসা গ্রামে মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছি। আমাদের যে কোনো সমস্যায় মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন পাশে থাকেন। কখনও আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি নষ্ট হয়নি। নিখিলের বাড়িঘরে লোটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা শুনিনি। লাকড়ি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিভু আচার্য্য বলেন, নিখিল আচার্য্য আমার প্রতিবেশি, তার বাড়ি ঘরে লোঠপাট ও ভাংচুরের ঘটনা শুনিনি। বিষয়টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে সাম্প্রদায়িকতা টেনে এনে মামলা দায়ের করা অত্যান্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। আমরা যুগ যুগ ধরে একে অপরের সাথে সম্প্রতি বজায় রেখে আমাদের গ্রামে বসবাস করে আসছি। বাউসা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসি আলহাজ্ব ছালিক মিয়া শাহ্ বলেন, নিখিল আচার্য্য আমার প্রতিবেশি। তার মায়ের অসুস্থ থাকাকালে আমি তাদেরকে সার্বিক সহায়তা করেছি। তাদের ঝগড়ার খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষনিকভাবে আমাদের গ্রামের মুরুব্বি মোঃ কাওছার আহমেদ, হাজী মোঃ তৈয়ব উল্লাহ, বিভু আচার্য্য, বাছিতুর রহমান চৌধুরী, মনসুর চৌধুরীসহ উভয়পক্ষের সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু, এক পক্ষ পঞ্চায়েত মানলেও অপর পক্ষ গ্রামের পঞ্চায়েতকে ডিঙ্গিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা আমাদের গ্রামের জন্য অশুভনীয়। তবে আমরা বিষয়টি সমাধান করার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখবো।


     এই বিভাগের আরো খবর